পশ্চিম মেদিনীপুরে দাঁতনে নাবালকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এ বার গ্রেফতার হলেন কাকা। শনিবারই ওই কিশোরের সৎমাকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। রবিবার দাঁতনকাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল দুই। তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, সৎমায়ের সঙ্গে কাকার ‘ঘনিষ্ঠতা’ জেনে ফেলার কারণে খুন করা হয়ে থাকতে পারে ১৩ বছরের ইকবাল বক্সকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ইকবালের বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু দিন। বাবা আবার বিয়ে করেছেন। তবে কর্মসূত্রে তিনি থাকেন মুম্বইয়ে। ইকবালও হস্টেলে থাকত। দাঁতন-২ ব্লকের তুরকা গ্রামের বাড়িতে থাকেন ছেলেটির সৎমা এবং কাকা। যদিও কাকাও আগে কর্মসূত্রে ভিন্রাজ্যে থাকতেন। কিছু দিন হল বাড়িতে রয়েছেন তিনি।
দিন কয়েক আগে হস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিল ইকবাল। শুক্রবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমোতে যায় সে। শনিবার সকালে বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় তার নলিকাটা দেহ। সৎমায়ের দাবি, সিলিং ফ্যানের ব্লেডে গলা কেটেছে নাবালকের। ঘুমের ঘোরে খাটে দাঁড়িয়ে পড়ার ফলেই ওই দুর্ঘটনা। যদিও তদন্তের প্রথম থেকেই ওই ‘তত্ত্ব’ বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি পুলিশের। তারা টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর মৃতের সৎমাকে গ্রেফতার করেছে। এ বার গ্রেফতার হয়েছেন নাবালকের কাকা।
তদন্তকারীদের অনুমান, সৎমা এবং কাকার পরকীয়া জেনে ফেলাই কাল হয়েছিল হস্টেল থেকে বাড়িতে ফেরা ছাত্রের। এ-ও অনুমান করা হচ্ছে, কোনও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কিশোরের গলা কাটা হয়েছে। তবে খুন কার হাতে হয়েছে, এটা এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্তে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা হল শুক্রবার রাতে খাওয়ার পরে খুড়তুতো এক দাদার সঙ্গে ইকবাল একটি ঘরে ঘুমোতে যায়। ওই ঘরে পরে ঘুমোতে যান ইকবালের সৎমা-ও। ওই যুবতীর দাবি, মাঝরাতে সিলিং ফ্যানের ব্লেডে গলা কেটে যায় কিশোরের। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা ছেলেকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।
আরও পড়ুন:
ময়নাতদন্তের জন্য দেহ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। তার রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর কারণ আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে। এই মামলা প্রসঙ্গে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সৎমার সঙ্গে কাকার অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলেছিল ছেলেটি। সেই কারণে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওকে খুন করে সিলিং ফ্যানের গল্প ফেঁদেছিলেন সৎমা। অভিযুক্ত দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত চলছে। সব দিক খতিয়ে দেখছি আমরা। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে।’’