Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
ভুয়ো বার্তায় আতঙ্ক

গুজব রোধে কড়া পুলিশ

‘ছেলেধরা’ গুজব ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। কে বা কারা সোস্যাল মিডিয়ার গুজব ছড়াচ্ছে, তা জানতে তথ্য-প্রযুক্তি শাখার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

সক্রিয়: ঝাড়গ্রাম পাঁচমাথায় পুলিশের মাইকে প্রচার।—নিজস্ব চিত্র

সক্রিয়: ঝাড়গ্রাম পাঁচমাথায় পুলিশের মাইকে প্রচার।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ১৩:২১
Share: Save:

‘ছেলেধরা’ গুজব ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। কে বা কারা সোস্যাল মিডিয়ার গুজব ছড়াচ্ছে, তা জানতে তথ্য-প্রযুক্তি শাখার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের নাম করে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ-সহ তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা রুজু করা হবে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকে প্রচারও শুরু হয়েছে। মানুষকে বিভ্রান্ত না-হওয়ার আবেদন জানাচ্ছে তারা। আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার কথাও বারবার বলা হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলার প্রতিটি ব্লকে পুলিশ-প্রশাসন একযোগে সচেতনতা প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছে।

গত কয়েকদিনে ছেলেধরা সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে এই জেলায়। মূলত, ভবঘুরে ও মানসিক ভারসাম্যহীনদের সুকৌশলে ‘ছেলেধরা’ দেগে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। মারের চোটে গুরুতর জখম দু’জন ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, পরিকল্পিত ভাবে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

পরিস্থিতি চরমে ওঠে বৃহস্পতিবার। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের নামে একটি ‘মেসেজ’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’ হয়ে যায়। তাতে জনসাধারণকে সতর্ক করে বলা হয়, ঝাড়গ্রাম জেলায় অসংখ্য অপহরণকারী ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গৃহশিক্ষক প্রশান্ত রথ বলেন, “ছেলেমেয়েদের পড়তে পাঠিয়ে তাদের বাবা-মা বার বার ফোন করে খোঁজ নিতে শুরু করেছেন।”

ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “পুরোটাই গুজব এবং মিথ্যা প্রচার। কারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন গুজব ছড়াচ্ছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”

কিছুদিন আগে শিলদা এলাকা থেকে বছর বারোর এক স্কুলপড়ুয়াকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ওই বালকটিকে উত্তরপ্রদেশ থেকে উদ্ধার করেছিল জেলা পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, এক আত্মীয়ই ওই বালকটিকে অপহরণ করেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করাও হয়। পুলিশের দাবি, ওই অপহরণের ঘটনায় কোনও ‘ছেলেধরা’র হাত ছিল না। পারিবারিক রেষারেষি থেকেই এই ঘটনা। কিন্তু তারপর গোটা জেলা জুড়ে দাবানলের মতো গুজব ছড়াতে থাকে।

বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশুদের অপহরণ করা হচ্ছে, এমন গুজবের জেরে এলাকায় অচেনা লোকজনকে দেখলেই ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করতে শুরু করেন স্থানীয়রা। গত দশদিনে জামবনি, শিলদা, লালগড়, নয়াগ্রাম, ঝাড়গ্রাম ও বেলপাহাড়িতে ছেলেধরা সন্দেহে ১০ জনকে মারধর করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রামে প্রহৃত দু’জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police rumors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE