E-Paper

পুজোর বই বিপণিতে রাজনীতির ‘টক্কর’

রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, বামেরা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে বিপণির সংখ্যা কমেছিল ঠিকই, কিন্তু বন্ধ হয়নি। শহর মেদিনীপুরে সিপিএমের একাধিক বই বিপণি হয়েছে এ বার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৯
বই বিক্রি করছেন জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। মেদিনীপুরে।

বই বিক্রি করছেন জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। মেদিনীপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

দেবীপক্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে। শারদোৎসবে ছুটির মেজাজ এখন। তবে রাজনীতির ‘লড়াই’ থেমে নেই। দুর্গাপুজো ঘিরেও চলছে রাজনৈতিক ‘জমি’ দখলের টানটান ‘লড়াই’।

জনসংযোগে শামিল শাসক-বিরোধী, যুযুধান পক্ষই। শহর থেকে শহরতলি, গ্রামাঞ্চলেও পুজো কমিটিগুলিকে ‘নিয়ন্ত্রণে’ রাখার ‘লড়াই’য়ে বিরোধীদের চেয়ে কয়েক যোজন এগিয়ে তৃণমূল। বছর কয়েক হল সেই পরিসরে কিছুটা দাঁত ফোটানোর চেষ্টা করছে বিজেপিও। আর বামেদের জনসংযোগের মাধ্যম বই বিপণি। গত কয়েক দশক ধরেই দুর্গাপুজোর সময় বইয়ের স্টল দেয় বামেরা। এ বারও দিচ্ছে। বইয়ের স্টল দিচ্ছে তৃণমূল, বিজেপি, আরএসএস- ও (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ)। আরএসএস- এর জেলা কার্যবাহ সমীরণ মজুমদার বলেন, ‘‘জেলায় আমাদের কিছু বইয়ের স্টল থাকছে।’’ কোথায় কোথায় স্টল থাকবে, ষষ্ঠীর মধ্যেই চূড়ান্ত হবে।

রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, বামেরা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে বিপণির সংখ্যা কমেছিল ঠিকই, কিন্তু বন্ধ হয়নি। শহর মেদিনীপুরে সিপিএমের একাধিক বই বিপণি হয়েছে এ বার। স্টলগুলির উদ্বোধনে ছিলেন দলের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। তাঁর আহ্বান, ‘‘আরও বেশি করে বই কিনুন।’’ নেতৃত্বের দাবি, পুজোয় তাদের বইয়ের স্টলে বিক্রি বাড়ছে। আগামী লোকসভা ভোটের আগে যা ‘ইতিবাচক’ বলেই মনে করছেন তাঁরা। শুধু সিপিএম নয়, জেলার কিছু জায়গায় এসএফআই, ডিওয়াইএফ, মহিলা সমিতি মিলেও স্টল দিচ্ছে। মেদিনীপুরে যেমন বইয়ের স্টল দিয়েছে এসএফআই। নাম ‘বিকল্পের বৈঠকখানা’। মাকর্সীয় দর্শন, স্বাধীনতার ইতিহাস, অর্থনীতির পাশাপাশি প্রবন্ধ, ছোট গল্পের বইও বিক্রি হচ্ছে সিপিএমের স্টলে। উৎসবের মরসুমে বই বিপণিকে সিপিএম সাংগঠনিক কর্মসূচি হিসেবেই ধরে। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তাপস সিংহ বলেন, ‘‘এ বারও জেলা জুড়ে অনেকগুলি স্টল হয়েছে। আগে যেখানে আমরা স্টল করতে পারিনি, এ বার সেখানেও স্টল হয়েছে।’’

তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানালেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় দলের বুক স্টল থাকছে।’’ ইতিমধ্যে বই বিক্রিতে না কি ভালই সাড়া পাচ্ছে সিপিএম? সুজয়ের জবাব, ‘‘ওদের বই বিক্রি হচ্ছে, ভাল। দুর্বল বিরোধীর চেয়ে শক্তিশালী বিরোধী দল ভাল। কিন্তু কুৎসা, অপপ্রচার না— করে ইতিবাচক বিরোধিতা করতে হবে। না হলে, শূন্য কখনও এক হবে না।’’ তৃণমূলের এক জেলা নেতা শোনাচ্ছেন, ‘‘চাইলে আরও অনেক বেশি স্টল খোলা সম্ভব। কিন্তু বুক স্টল খুলে জনসংযোগের প্রয়োজন আমাদের পড়ে না। বেশিরভাগ পুজো উদ্যোক্তাই তো দলের নেতা-কর্মী।’’

পুজোর উদ্বোধনও হচ্ছে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের হাতে। মেদিনীপুরে পুজো উদ্বোধনে এসেছেন তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া, বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষও। পুজো মিটলে লড়াই-আন্দোলনের কথাও শোনা গিয়েছে। জুন বলেছেন, ‘‘একশো দিনের টাকা বকেয়া রয়েছে। আবাস যোজনার টাকা আসছে না। পুজোর জন্য আমরা একটু থেমে আছি। পুজোর পরে আবার আন্দোলন হবে।’’ জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস পাল্টা শোনাচ্ছেন, ‘‘কেন্দ্র হিসেব চেয়েছে। হিসেবটা যেন ওরা ঠিকঠাক দিয়ে দেয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Book Stall midnapore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy