Advertisement
০৬ মে ২০২৪
TMC Leaders house on Fire

তৃণমূল নেত্রীর বাড়িতে আগুন, শুরু তরজা

স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার গভীর রাতে কাঁথি-৩ ব্লকের লাউদা অঞ্চলের অন্তর্গত কামারদা গ্রামে রেখা গিরি নামে এক মহিলার বাড়িতে আগুন লাগে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মারিশদা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:১২
Share: Save:

ঘটনাবহুল কাঁথি বিধানসভা এলাকা। একটি এলাকায় পরাজিত মহিলা তৃণমূল প্রার্থীর বাড়িতে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। অন্যদিকে, গাঁজা পাচার করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েছে পাচারকারী। দুটি ঘটনায় একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের তির তুলেছে তৃণমূল এবং বিজেপি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার গভীর রাতে কাঁথি-৩ ব্লকের লাউদা অঞ্চলের অন্তর্গত কামারদা গ্রামে রেখা গিরি নামে এক মহিলার বাড়িতে আগুন লাগে। অভিযোগ, রেখার বাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। প্রতিবেশীরা জানতে পেরে দরজা ভেঙে পরিবারের লোকেদের বাইরে বের করেন। ততক্ষণে অবশ্য টালির ছাউনি দেওয়া ঘরের অধিকাংশ পুড়ে গিয়েছে।

রেখা এবার পঞ্চায়েত ভোটে ওই বুথে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি হেরে যান। তাঁর দাবি, ‘‘বড়দিন উপলক্ষে ছেলে- বৌমা বেশ খানিকটা দেরিতে বাড়ি ফিরেছিল। রাতে খাওয়া শেষে সপরিবার ঘুমোচ্ছিলাম। মাঝে বিকট আওয়াজ শুনতে পেয়ে স্বামী বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ছিলেন। সে সময় পেছনের দিকে দরজা বন্ধ ছিল। সামনের দিকে দরজা খুলে বেরিয়ে স্বামী দেখতে পান, কয়েকজন দৌড়ে পালাচ্ছে। আর দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে ঘরে।’’

পঞ্চায়েত ভোটের পরাজিত প্রার্থী রেখার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলছেন, ‘‘যে সব জায়গায় বিজেপি পঞ্চায়েত ভোটে জিতেছে, সেখানে ওরা সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করতে চাইছে। আগেও রেখার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিজেপির লোকজন। এবার গোটা পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলার চক্রান্ত করেছিল। প্রতিবেশীরা ওঁদের উদ্ধার করে। আমরা পুলিশের কাছে অনুরোধ করেছি যাতে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করা হয়।’’ বিজেপির তরফে কাঁথি সাংগঠনিক জেলার নেতা অসীম মিশ্র অবশ্য বলছেন, ‘‘তৃণমূলের গৃহযুদ্ধের খেসারত দিতে হচ্ছে। দলের একাংশের কাটমানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য তৃণমূলের লোকজন তাঁর বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন।’’

মঙ্গলবার সকালে এ ব্যাপারে মারিশদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে রেখার পরিবার। মারিশদা থানার পুলিশ সেখানে যায় এবং তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করে। কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলছেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে রাজনীতির কোনও যোগসূত্র মেলেনি। তবে, কীভাবে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।’’

এ দিকে, মঙ্গলবার সকালে লাউদা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে দেশপ্রাণ ব্লকের আউরাইয় গাঁজা পাচারের অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। সেখানে শীতলাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে কানু কামিলা নামে এক বাড়িতে বেশ কিছুদিন ধরে গাঁজা বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ দিন সকালে মোটরবাইকে চেপে অপরিচিত দুই যুবক এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। তাতে সন্দেহ হয় এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁরা ওই যুবকদের আটকে তাঁদের ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর গাঁজা উদ্ধার করেন।

স্থানীয়দের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই যুবকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা কানু কামিলার বাড়িতে গাঁজা নিয়ে যাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে সেখানে যায় কাঁথি থানার পুলিশ। ততক্ষণে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী গা ঢাকা দেন। পরে তাঁর পরিবারের দুই মহিলা সদস্যকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় কাঁথি থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, এদিন মোট ২৮ কিলোগ্রাম গাঁজা মিলেছে। ধৃত দুজনকে জেরা করে ওই ঘটনায় কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।

অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ী কানু এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। এর পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা রাজশেখর মণ্ডল বলছেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে এলাকায় নানা রকম অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ওই ব্যবসায়ীকে গাঁজা ব্যবসা করার জন্য মদত যুগিয়ে যাচ্ছে শাসক দলের নেতা। তাই ওই নেতাকেও অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে দেশপ্রাণ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস ভূঁইয়া বলছেন, ‘‘কানু আমাদের দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাছাড়া এই ধরনের ঘটনা কোনও ভাবেই আমাদের দল সমর্থন করে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

marishda TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE