Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রসূতির মৃত্যুতে গাফিলতির নালিশ ঝাড়গ্রামে

জামবনির রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা মামনি মাহাতো (২৮) নামে ওই প্রসূতির মৃত্যুর পরে অভিযুক্ত চিকিত্সকদের শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার তোলপাড় চলে হাসপাতালে।

বিক্ষোভ: হাসপাতালের গেটে। —নিজস্ব চিত্র  ।

বিক্ষোভ: হাসপাতালের গেটে। —নিজস্ব চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২০
Share: Save:

প্রসূতি মৃত্যুতে ফের কাঠগড়ায় সরকারি হাসপাতাল। এ বার গাফিলতির নালিশ ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

জামবনির রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা মামনি মাহাতো (২৮) নামে ওই প্রসূতির মৃত্যুর পরে অভিযুক্ত চিকিত্সকদের শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার তোলপাড় চলে হাসপাতালে। অবস্থান বিক্ষোভ করেন মৃতার পরিজন ও গ্রামের বাসিন্দারা। প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন হাতে শ’খানেক লোকের বিক্ষোভ চলে। দুই চিকিত্সকের শাস্তির দাবিতে ঝাড়গ্রামের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝির কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দেন মৃতার স্বামী তপন মাহাতো। অশ্বিনীবাবু বলেন, “অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে আড়াল করার প্রশ্ন নেই।”

বুধবার ভোরে আসন্নপ্রসবা মামনিকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বছর তিনেক আগে অস্ত্রোপচার করে তাঁর প্রথম কন্যাসন্তান হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাই এ বার আবার স্বাভাবিক প্রসব করানোর ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন হাজরার তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার করেই মামনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু পরে তাঁর রক্ষক্ষরণ শুরু হয়। প্রসূতির প্রাণ বাঁচাতে দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। ওই সময় ‘অন কল ডিউটি’তে ছিলেন আর এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ জয়দেব মাহাতো। বুধবার দুপুরে তিনিই মামনির দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই প্রসূতির রক্ত জমাটের সমস্যা ছিল। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতেই তাঁর জরায়ু কেটে বাদ দেন জয়দেববাবু। এর পরে মামনিকে রাখা হয় ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে’। কিন্তু সঙ্কট কাটেনি। বুধবার রাতে তাঁকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। রাত পৌনে একটায় মারা যান ওই প্রসূতি।

এই ঘটনার জেরে এ দিন সকালে উত্তাল হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। হাসপাতালের গেটের সামনে দুই চিকিত্সকের শাস্তির দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। মৃতার খুড়শ্বশুর বিষ্ণুপদ মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘আউটডোরে আগে বৌমাকে দেখানো হয়েছিল। তখন কিন্তু রক্তজমাটের সমস্যা নিয়ে পরীক্ষা করতে বলা হয়নি।’’ মৃতার স্বামীর আইনজীবী হিমেল ছেত্রীও বলেন, “সরকারি হাসপাতালে দায়সারা ভাবে চিকিৎসা হয়। সেই কারণেই আমার মক্কেলের স্ত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।”

হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, “বুধবার ওই মহিলাকে যখন হয়েছিল, তখন রক্ত পরীক্ষা করার মতো সময় ছিল না। যেহেতু ওঁর অস্ত্রোপচার করে প্রথম সন্তান হয়েছিল, তাই জরুরি ভিত্তিতে এ বারও অস্ত্রোপচার করা হয়। আর রক্তক্ষরণ বন্ধের স্বার্থেই দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করে জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া হয়।’’ ওই প্রসূতিকে বাঁচানোর জন্য তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন বলেই দাবি হাসপাতাল সুপারের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE