Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Sand Mining

খাদান খুলতেই বালির দাম দ্বিগুণ

সম্প্রতি তিন জনের ‘ব্লক লেভেল ল্যান্ড সার্ভিস মনিটরিং কমিটি’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিধিনিষেধ ওঠার পর খাদান খোলার প্রথম দিন থেকেই প্রত্যেকটি বালি খাদানের উপর কড়া নজরদারি চালানো হবে।

গড়বেতায় শিলাবতী নদীর খাদান থেকে বালি গাড়ি যাতায়াতের রাস্তার অবস্থা এমনই বেহাল। নিজস্ব চিত্র

গড়বেতায় শিলাবতী নদীর খাদান থেকে বালি গাড়ি যাতায়াতের রাস্তার অবস্থা এমনই বেহাল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গড়বেতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৪০
Share: Save:

১ নভেম্বর থেকে বালি তোলার উপর সরকারি বিধিনিষেধ উঠে গিয়েছে। গড়বেতায় শুরু হয়েছে খাদান থেকে বালি তোলার কাজ। আর শুরুতেই বালির দাম প্রায় দ্বিগুণ। ট্রাক্টর পিছু বালি বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। বর্ষাকালীন বিধিনিষেধ জারি হওয়ার আগে এই দাম ছিল ট্রাক্টর পিছু দেড় থেকে প্রায় দু'হাজার টাকা। চার মাস পর নিষেধাজ্ঞা উঠতেই বালির দাম ঊর্ধ্বমুখীতে নির্মাণ কাজে সমস্যায় পড়ছেন অনেকেই।

কেনও এই দাম বৃদ্ধি? গড়বেতার বালি কারবারি কয়েকজন বলছেন, বালিই তো নেই, মজুত বালি এই চারমাসে বিক্রি হয়ে গিয়েছে, তা ছাড়া খাদানের লিজ হোল্ডার কয়েকজনের লিজের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় বালি তোলায় গতি আসছে না। ফলে চাহিদা থাকলেও বালির জোগান কম হওয়ায়, স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বালি কারবারিরা। ভূমি দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গড়বেতা ১ ব্লকে ৫ টি বৈধ বালি খাদানের মধ্যে ৩ টির লিজের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। নতুন করে লিজ দেওয়া - নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ফলে বিধিনিষেধ উঠে গেলেও ৩ টি খাদান থেকে বালি তোলা বন্ধ আছে। তা ছাড়া খাদান থেকে বালি তোলার পর গাড়ি মূল রাস্তায় ওঠার আগে পর্যন্ত নদী তীরবর্তী যে রাস্তা ব্যবহার হয়, সেই রাস্তা বর্ষার সময় সহ দীর্ঘ চার মাসে কার্যত অচল হয়ে গিয়েছে। কোথাও নদী গর্ভে চলে গিয়েছে বালি গাড়ি চলাচলের সেই রাস্তা, কোথাও রাস্তা ভেঙেচুরে খানাখন্দে ভরেছে। ভূমি দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, নিয়ম মতো নদী থেকে মূল রাস্তায় ওঠার জন্য বালি গাড়ি চলাচলের রাস্তা খাদান মালিকদেরই করে দেওয়ার কথা, গড়বেতা ১ ব্লকে শিলাবতী নদীর সেই রাস্তা অনেক গুলিই ঠিক না করায়, বালি তোলার গতি শ্লথ হচ্ছে। যার জের গিয়ে পড়ছে বালির দামে।

গড়বেতার এক বালি কারবারি বললেন, ‘‘খাদান চালু হলেও, নানাবিধ কারণে বালি কম উঠছে। চাহিদা মেটাতে আমাদের হেথাহোথা বালি জোগাড় করে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাড়ছে পরিবহণ খরচ। তাই বালির দামও বাড়াতে হচ্ছে।’’ খাদান খোলার পরও বালির দাম বৃদ্ধিতে সমস্যায় পড়ছেন নির্মাণ কাজ করা অনেকেই। বর্ষাকালীন বিধিনিষেধ থাকায় বালি না মেলায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছিলেন গড়বেতার ইলেকট্রনিক্সের সরঞ্জাম ব্যবসায়ী সলিল দে। খাদান খুললে ফের কাজ শুরু করবেন ভেবেছিলেন। বালির দাম শুনে থ সলিল বললেন, ‘‘ভাবলাম খাদান খুললে বালির দাম কমবে, তা তো কমেইনি, বরং ট্রাক্টর পিছু দাম প্রায় দ্বিগুণ। আর কতদিন কাজ বন্ধ করে রাখা যায়!’’

এই সুযোগে বালি নিয়ে ফের যাতে অবৈধ কারবার শুরু না হয়, সে জন্য আগেভাগেই সতর্ক বিএলআরও-সহ গড়বেতা ১ ব্লক প্রশাসন। বালি কারবারিদের নিয়ে বৈঠকে তাঁদের নতুন বালি বিধি জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি তিন জনের ‘ব্লক লেভেল ল্যান্ড সার্ভিস মনিটরিং কমিটি’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিধিনিষেধ ওঠার পর খাদান খোলার প্রথম দিন থেকেই প্রত্যেকটি বালি খাদানের উপর কড়া নজরদারি চালানো হবে। এই কমিটির চেয়ারম্যান বিডিও শেখ ওয়াসিম রেজা বলেন, ‘‘বালির অবৈধ কারবার বন্ধ হয়েছে আগেই। তবুও নজরে ফাঁক রাখছি না।’’ বিএলআরও কল্লোল বিশ্বাস বলেন, ‘‘খাদানের নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে। বালি তোলা শুরু হয়েছে। নজরদারি চালানো হচ্ছে। বালি নিয়ে কোনও অবৈধ কারবার বা বিশৃঙখলা বরদাস্ত নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sand Mining Garbeta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE