Advertisement
E-Paper

ক্ষতি পোষাতে স্কুলে ছুটি কাটছাঁট

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে দিতেই ঘাটাল ও দাসপুরের বহু স্কুলের কর্তৃপক্ষ লক্ষ্মীপুজো থেকে কালীপুজো পর্যন্ত ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বন্যার কবলে পড়ে জুলাইয়ে ঘাটাল ও দাসপুরের বহু স্কুলের এক তলা জলের তলায় চলে গিয়েছিল।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০২
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

লম্বা পুজাবকাশ থেকে বছরভর হরেক পার্বণে সরকারি ছুটি— এমনটাই এ রাজ্যের দস্তুর। ক্যালেন্ডারে ছুটির দিন ক্রমে বাড়ছে। অথচ এ বার একেবারে বিপরীত ছবি ঘাটাল মহকুমায়। ঘাটাল ও দাসপুরের বহু স্কুলেই পুজোর ছুটি কাটছাঁট করা হচ্ছে। আর এই উদ্যোগ খোদ তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের।

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে দিতেই ঘাটাল ও দাসপুরের বহু স্কুলের কর্তৃপক্ষ লক্ষ্মীপুজো থেকে কালীপুজো পর্যন্ত ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বন্যার কবলে পড়ে জুলাইয়ে ঘাটাল ও দাসপুরের বহু স্কুলের এক তলা জলের তলায় চলে গিয়েছিল। অগম্য ছিল স্কুলে যাওয়ার পথ। তখন দিন ২০ পঠন-পাঠন বন্ধ ছিল। শিক্ষা দফতরের পরিসংখ্যানই বলছে, বন্যায় ঘাটাল মহকুমার ১৯৬টি স্কুলের মধ্যে ৭৬টিই জলে ডুবেছিল। ১ লক্ষ ৬০ হাজার পড়ুয়ার মধ্যে জলবন্দি ছিল ৫৫ হাজার পড়ুয়া। ফলে, পড়াশোনার বিস্তর ক্ষতি হয়েছে।

এ দিকে, দুর্গাপুজোর ছুটির পরে স্কুল খুললেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট। অন্য ক্লাসেরও ইউনিট টেস্ট রয়েছে। অথচ বহু স্কুলেই সিলেবাস শেষ হয়নি। সমস্যা মেটাতে এক মাস পুজোর ছুটি কমিয়ে আনার প্রস্তাব দেয় তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন। তাতে সায় দিয়ে বহু স্কুলের পরিচালন সমিতি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মতি নিয়েই লক্ষ্মীপুজো থেকে কালীপুজো প্রায় ১৫ দিন স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হিসেব বলছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭৬টি স্কুলের মধ্যে ঘাটাল মহকুমার ৩০টি স্কুলই ছুটি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।

পড়ুয়া, অভিভাবক থেকে স্কুল শিক্ষা দফতরের কর্তা— এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সবাই। ঘাটালের বরদা-বাণীপীঠ হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, “বন্যার সময় পড়াশোনার প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। তা পুষিয়ে দিতেই এই উদ্যোগ।” চাঁইপাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ পাল, দ্বন্দিপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শৈবাল ঘোষরা জানালেন, এ ক’দিন নিয়মমাফিক ক্লাসের সঙ্গেই বিশেষ কোচিংয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। দাসপুরের বরুণা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী দেবারতি ধাড়া বলে, “নোটিস এসেছে, পুজোর ছুটিতে ক্লাস হবে। এটা জরুরি ছিল।” ঘাটালের অভিভাবক তন্ময় জানা বলছিলেন, “পড়াশোনা সবার আগে। দরকারে আমরাও পুজোর প্ল্যানে কাটছাঁট করব।” পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা স্কুল পরিদর্শক অমর শীলও বলছেন, “ছুটিতে স্কুল খোলা রাখতে সরকারি ভাবে বাধ্য করা যায় না‌। কিন্তু পড়ুয়াদের কথা ভেবে ঘাটালের স্কুলগুলির এই পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।”

রাজ্য জুড়ে ছুটির বাড়বাড়ন্তে এমন উলটপুরাণ কেন? তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের আহ্বায়ক সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বরুণা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। হাসিমুখে তাঁর জবাব, “ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত।”

ঘাটাল Ghatal Holiday Puja Holiday Daspur দাসপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy