Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
মন্দার সঙ্গী বৃষ্টি-অসুর

উৎসবেও চাঙ্গা হল না বাজার

জেলা সদর তমলুক শহর, রাধামনি সহ বিভিন্ন বাজারে জামাকাপড়ে দোকানে ভিড় এবার তেমন দানা বাঁধেনি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। পুজোর আগে শেষ শনি-রবিতেও অধিকাংশ পোশাকের দোকানে উপচে পড়া ভিড় অদৃশ্য ছিল।

কাঁথি শহরের একটি শপিং মল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

কাঁথি শহরের একটি শপিং মল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন:
পূর্ব মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

মহালয়া চলে গিয়েছে। শুরু হয়েছে পুজোর কাউন্ট ডাউন। কিন্তু নাগাড়ে ক’দিন ধরে বৃষ্টি পুজো কমিটিগুলির প্রস্তুতিতে তো বটেই থাবা বসিয়েছে পুজোর কোনাকাটাতেও। গত এক মাস ধরে মাঝে মধ্যে বৃষ্টি এবং ছোটথাটো অনেক সংস্থায় পুজোর বোনাসে দেরির কারণে পুজোর বাজারে ক্রেতার টান ছিল বলে ব্যবসায়ী মহস সুত্রে খবর। তার উপর বাজারে দেশের অর্থনীতির একটা প্রভাব থাকে বলে তাঁদের মচ। তার ফলে এ বার এমনিতেই বাজার খুব ধীরে জমছিল। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়া তাতেও বাদ সেধেছে। আগামী শনিবার সপ্তমীর আগে এ ই ক’দিন যদি দুর্যোগ কাটে তা হলে শেষ বেলায় কিছু লাভ হতে পারে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।

জেলা সদর তমলুক শহর, রাধামনি সহ বিভিন্ন বাজারে জামাকাপড়ে দোকানে ভিড় এবার তেমন দানা বাঁধেনি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। পুজোর আগে শেষ শনি-রবিতেও অধিকাংশ পোশাকের দোকানে উপচে পড়া ভিড় অদৃশ্য ছিল। শহরের বস্ত্র ব্যসবায়ীরা জানান, গত সোমবার থেকে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি। অনেকেই কেনাকাটা করতে বেরোতে পারেননি। শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত বৃষ্টি বন্ধ থাকায় লোকজন বেরিয়েছিল। সন্ধ্যের পরেই বৃষ্টি শুরু হতেই কেনাকাটা চৌপট। পোশাক ব্যবসায়ী অজয় দে বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এ বার বাজার বেশ কিছুটা মন্দা। সব চেয়ে সমস্যায় ফেলেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। পুজোর জন্যই অনেক পোশাক আনা হয়েছে। কিন্তু বিক্রিবাটা তেমন না থাকায় চিন্তায় আছি। এখন পুজোর আগের ৩-৪ টে দিনই ভরসা।

মহিষাদলের একটি বস্ত্রবিপণির কর্ণধার সুমন দাশ বলেন, ‘‘পুজোয় বিক্রির জন্য বিভিন্ন ধরনের নতুন ডিজাইনের জামাকাপড় এনেছিলাম। জানি না এই দুর্যোগের ফলে বিক্রিবাটা কেমন হবে। প্রথম দিকে বাজার কিছুটা জমলেও মাঝখানে এখন একেবারে মন্দা।’’ একই অবস্থা চৈতন্যপুর ও নন্দীগ্রামেও। নন্দীগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে কলকাতার জামাকাপড় তৈরির আড়ত মেটিয়াবুরুজের। হালফ্যাশনের জামা কাপড় তৈরি করে নন্দীগ্রামের দর্জিরা সেখানে পাঠান। কিন্তু এ বার তেমন বরাত নেই জানালেন অনেকে। তা ছাড়া এলাকার বাজাও তেমন জমেনি। নন্দীগ্রাম বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, ‘‘পুজোর ওই সময়টায় আগে দোকানে এত ভিড় থাকত যে সামলাতে হিমশিম খেতে হত। এ বার প্রায় মাটি করেছে বৃষ্টি। এখন দুর্যোগ কাটার অপেক্ষায় রয়েছি।’’ হলদিয়া একটি বুটিক-এর প্রধান জানান, প্রতি বছর পুজোর আগে হলদিয়া শহরে মেলা বসে। সেখানে ভাল কেনাবেচা হয়। এবার তা হয়নি। পুজোর আগে শেষ শনি-রবিবারও বৃষ্টিতে মার খেয়েছে।’’ মাখনবাবুর বাজারের এক বস্ত্র ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘এতটা বাজার খারাপ হবে ভাবিনি। আগে যেখানে রাত জেগে বেচাকেনা হত, এখন সেখানে হাতে গোনা খদ্দের।’’ বাজার মন্দার জন্য সকলেই কাঠগড়ায় তুলেছেন আবহাওয়াকে।

গত কয়েক বছরে কাঁথি শহরে স্থানীয় বড় বড় বস্ত্রবিপণির পাশাপাশি চালু হয়েছে একাধিক শপিং মল। পুজোর কথা মাথায় রেখে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এরাও পুরুষ এবং মহিলাদের নতুন পোশাকের প্রচুর স্টক করেছিল। কিন্তু মহালয়া পেরিয়ে গেলেও বাজারে ক্রেতার সেই ভিড় এখনও সে ভাবে চোখে পড়েনি। কাঁথির সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের কাছে এক শপিং মলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা পঙ্কজ শর্মা বলেন, ‘‘গত বারের তুলনায় এ বার বিক্রির হাল বেশ খারাপ।’’ শহরের আরও দু’টি শপিং মলের কর্তাদেরও এক সুর। শপিং মলের কর্তা থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেছেন, এ বার আর্থিক মন্দার পাশাপাশি বৃষ্টিও বড় ধাক্কা দিয়েছে ব্যবসায়।

কাল মাসপয়লায় বেতনের দিন। তার উপর আর বৃষ্টি না হলে পুজোর আগের ৩-৪ দিন ভাল ব্যবসা হতে পারে। আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে ব্যবসায়ীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Puja Durga Puja Durga Puja Shopping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE