Advertisement
E-Paper

পুরীর ধাঁচে রথ রেলশহরে

রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম...বছর ঘুরে ফের হাজির রথযাত্রা। আজ, বুধবার বাহারি পাতা, ফুল-আলোরমালায় সাজিয়ে বিকেল বিকেল রথ নিয়ে বেরিয়ে পড়ার দিন। রথের দড়িতে টান দেওয়ার মাঝেই জিলিপি, পাপড় ভাজা তো বাড়তি পাওনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৬ ০২:৩১
খড়্গপুরে রথযাত্রার প্রস্তুতি (বাঁ দিকে)। মেদিনীপুরের জগন্নাথ মন্দিরে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা (ডান দিকে)।  — নিজস্ব চিত্র।

খড়্গপুরে রথযাত্রার প্রস্তুতি (বাঁ দিকে)। মেদিনীপুরের জগন্নাথ মন্দিরে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম...

বছর ঘুরে ফের হাজির রথযাত্রা। আজ, বুধবার বাহারি পাতা, ফুল-আলোরমালায় সাজিয়ে বিকেল বিকেল রথ নিয়ে বেরিয়ে পড়ার দিন। রথের দড়িতে টান দেওয়ার মাঝেই জিলিপি, পাপড় ভাজা তো বাড়তি পাওনা।

খড়্গপুরের রথযাত্রা ঐতিহ্য ও আড়ম্বরের লড়াই। শহরের সুভাষপল্লি, নিউ সেটলমেন্ট ও তালবাগিচায় মহাসমারোহেই পালিত হয় রথযাত্রা। শহরের সবচেয়ে পুরনো প্রায় ৭০ বছরের সুভাষপল্লির রথে বৈষ্ণব রীতি মেনেই বিভিন্ন আচার পালিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দা প্রয়াত রমেশচন্দ্র সাহা এক সময়ে নিজের উদ্যোগেই এই রথযাত্রার সূচনা করেন। আগে পাঁচেরপল্লি থেকে রথ যাত্রা ময়দান পর্যন্ত আসত। পরে পাঁচের পল্লিতে অবস্থিত একটি গৌড়ীয় মঠ ওই রথযাত্রার দায়িত্ব নেয়। গত ৩৫ বছর ধরে বসছে মেলাও। মাঝে বছর সাতেক নানা কারণে মেলা বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর রথের মেলা ফের শুরু করতে গড়া হয় কমিটি। সুভাষপল্লি রথ ও মেলা কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “এ বার রথের মেলার সঙ্গে সঙ্গে আট দিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।” সুভাষপল্লির কাছেই জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রাও প্রসিদ্ধ।

ঐতিহ্যে পিছিয়ে নেই তালবাগিচার রথতলা ময়দানের রথযাত্রা উৎসবও। ১৯৫১ সালে স্থানীয় রমনীমোহন পালের স্ত্রী এই রথযাত্রা চালু করেন। সেই সময় এই রথ ‘পালবুড়ি’-র রথ নামেই পরিচিত ছিল। বিগত ৩৮ বছর স্থানীয় রবীন সঙ্ঘ ক্লাব ও রথমেলা কমিটির উদ্যোগে এই রথযাত্রার আয়োজন হচ্ছে। রথের মেলায় এ বার একশোটিরও বেশি স্টল থাকবে বলে জানা গিয়েছে।

নিউ সেটেলমেন্টের জগন্নাথ জিউর মন্দিরের রথযাত্রা দেখতে ভিড় জমান অনেকে। ২০০১ সালে ওড়িশা সরকারের সংস্কৃতি বিভাগের অনুদানে ওই এলাকায় একটি মন্দির গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০০২ সালে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে নির্মিত বিশালাকার ওই মন্দিরের দ্বারোদঘাটন হয়। রথ ঘিরে প্রস্তুতিও চলছে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই।

পুরীর মতো এখানেও জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার তিনটি আলাদা রথে রয়েছে। মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার তিনটি বড় আকারের রথ তৈরি হয়েছে। আজ, বুধবার বেলা ১১টায় মন্দির থেকে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে রথে আনা হবে। এরপর বেলায় ২টোয় রথ যাত্রা শুরু করবে। রথযাত্রা উপলক্ষে দশ দিন ব্যাপী চলবে মেলা ও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মন্দির কমিটির কর্মকর্তা অশোক ত্রিপাঠী বলেন, “মিশ্র সংস্কৃতির এই শহরের সব মানুষকে আনন্দ দিতে রথযাত্রার সঙ্গে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। মানুষ আনন্দ পেলেই আমাদের সার্থকতা।”

রথযাত্রা ঘিরে উৎসবের মেজাজ মেদিনীপুর শহরেও। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মেদিনীপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির সংস্কার কমিটির উদ্যোগে রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। প্রস্তুতি প্রায় সারা। রথযাত্রায় শহরে মেলাও বসে। আজ, বুধবার মেলা বসবে গোলকুয়াচকের কাছে। পরের সাত দিন মেলা বসবে নতুনবাজারে। বুধবার বিকেলে জগন্নাথ নগর পরিক্রমায় বেরোবেন। রথের রশি টানতে শহরের রাস্তায় ভিড়ও হয়। মেদিনীপুর শহরে কিছু পারিবারিক রথও রয়েছে। এদিন দিনভর শহরে বৃষ্টি হয়েছে। তারমধ্যেই চলেছে রথযাত্রার শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।

kharagpur Puri Rath-yatra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy