ষোড়শ শতকের রাস উৎসবে এই প্রথম জমিদার বাড়িতে বসবে না সুরের জলসা। রাসের সন্ধ্যায় আর শোনা যাবে না সেতার ও এসরাজের মূর্ছনা। ঐতিহ্যের রাস উৎসব ঘিরে বসবে না কোন মেলা। করোনা কালে উৎসবের অন্যান্য অনুষঙ্গ ছাড়া শুধুই প্রথা মেনে পালিত হবে পঁচেটের বিখ্যাত রাসযাত্রা।
পঁচেটগড় জমিদার বাড়ির রাস উৎসব এখন সর্বসাধারণের উৎসব। প্রতি বছর এই উৎসব উপলক্ষে মেলায় অন্যান্য এলাকা থেকেও হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান। ঐতিহ্যের এই রাস উৎসবের শরিক হকে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন অনেক পর্যটক। রাস ময়দানে মন্দিরে জমিদার বাড়ির কুলদেবতা রাইকিশোরী জিউ বিরাজ করেন। তাঁকে ঘিরেই রাস উৎসবের শুভারম্ভ হয়। উৎসবকে ঘিরে প্রতি বছর সাত দিন ধরে মেলা চলে। একই সঙ্গে রাসমেলা ও প্রাচীন জমিদার বাড়ি দর্শন এবং কেনাকাটার সুযোগ থাকায় মানুষের উৎসাবে কোনও ভাটা দেখা যায় না।
কিন্তু এ বার বিধি বাম। করোনার আবহে রাস মেলা সম্পূর্ণ বন্ধ। রাস ময়দানে বসবে না কোনও দোকান। প্রথা মেনে শুধুই রাসমন্দিরে আসবেন রাইকিশোরী জিউ। রাসমন্দিরে সাধারের প্রবেশ নিষেধ থাকছে। গেটের বাইরে থেকে বাতাসা ভোগ দিতে পারবেন দর্শনার্থীরা। পূর্ণিমায় জমিদার বাড়ির মূল মন্দির থেকে রাসমন্দির পর্যন্ত রাইকিশোরী জিউ’র শোভাযাত্রাও এ বার কাটছাঁট করা হয়েছে। শোভাযাত্রায় খোল, মৃদঙ্গ, করতাল সহযোগে অল্পসংখ্যক মানুষ উপস্থিত থাকবেন। রাসমন্দিরে পাঁচ দিনের পরিবর্তে দু’দিন ২৯ নভেম্বর ও ৩ ডিসেম্বর রাইকিশোরী জিউ ও অন্যান্য বিগ্রহ থাকবে। রাস উৎসবে অন্যান্য বছরের মতো এবার জমিদার বাড়ি ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন না দর্শনার্থীরা। করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণের কারণে বন্ধ রাখা হবে জমিদার বাড়ির সিংহদুয়ার। জমিদার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা আবহে পরিবারের অধিকাংশ সদস্য এ বার আসবেন না বলে জানিয়েছেন।