রেলশহরের কর্মিসভায় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ
রেলশহরের পুরভোটে দলের প্রার্থী তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে এখন থেকেই বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দিতে বললেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। রবিবার খড়্গপুরের মালঞ্চর একটি কমিউনিটি হলে কর্মিসভায় হাজির ছিলেন রাহুল, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি কৃষ্ণা ভট্টাচার্য, জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, শহর সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝা। পুর-নির্বাচনের আগে শহরের দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতেই এ দিনের সভা। শহরের ৩৫টি ওয়ার্ড থেকেই বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকরা ভিড় জমিয়েছিলেন। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সবকটি আসনে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তাঁর কথায়, “খড়্গপুরে এতদিন তৃণমূল ও কংগ্রেসের খেলা দেখেছেন। এই শহরের কোনও উন্নয়ন হয়নি। তাই এ বার পুরভোটে ঘরে ঘরে মানুষের কাছে আমাদের পৌঁছতে হবে। ৩৫টি ওয়ার্ডের সবকটি বিজেপিকে দিন। যদি খড়্গপুরের আমূল পরিবর্তন না করতে পারি তবে আর ভোট চাইব না।”
কেন বিজেপিকে ভোট দেবেন তার ব্যাখ্যাও এ দিন দিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, “কেন্দ্রে বিজেপি সরকার এসেছে। রাজ্যকে টাকা দিলে তা খড়্গপুরে আসছে না। মাঝপথে উধাও হয়ে যাচ্ছে। দেশের বড় বড় শহরে যেখানে বিজেপি পুরসভায় আছে, সেখানে কিন্তু উন্নতি হচ্ছে। কারণ মানুষের টাকা আমরা নয়ছয় করি না।” একযোগে তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএমের সমালোচনাও করেছেন রাহুল। তাঁর কথায়, “পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএম এখন দিশাহীন। ওদের অধিকাংশ এখন বিজেপিতে। সারা বাংলায় কংগ্রেসও শেষ হতে চলেছে। যারা প্রকৃত কংগ্রেস তারাও বিজেপিতে আসছে। আর যারা দুর্নীতি করেছে তারা তৃণমূলে যাচ্ছে। তৃণমূলে এখন শুধু তাপস পাল, মুকুল রায়, মদন মিত্রের মতো সারদা কেলেঙ্কারির নায়করা রয়েছে।”
কেলেঙ্কারি নিয়ে সিপিএমের সমালোচনা করতেও এ দিন ছাড়েননি বিজেপি নেতৃত্ব। সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের স্ত্রীর বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা আথির্ক দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে রাহুলের কটাক্ষ, “সিপিএমের এখন অস্তিত্ব সঙ্কটের লড়াই। তাদের সূর্য ডুবে গিয়েছে। তাই এখন কৃত্রিম সূর্য তুলতে চাইছে, যাঁর স্ত্রী বিভিন্ন কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর স্ত্রীর নাম কী ভাবে বিপিএল তালিকায় ছিল? সিপিএম বলেছে ওটা ভুল হয়েছে। আসলে সবাই ভুল করে খায়। দিদিও ভুল করে খায়।”
খড়্গপুরে বিজেপি-র বাইক মিছিল।
এ দিন রাজ্যের মধ্যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নিয়েও নানা অভিযোগ শোনা গিয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতির গলায়। মাওবাদীদের তিনি সিপিএমের অস্ত্রধারী বলে দাবি করেছেন। পরে সেই অস্ত্রধারীরাই তৃণমূলে গিয়েছে বলেও তাঁর ব্যাখ্যা। রাহুল বলেন, “এই রাজ্য উগ্রপন্থীদের লিজ দিয়েছে তৃণমূল। তাই আগামী দিনে খড়্গপুরের নির্বাচন বাংলাকে বাঁচানোর নির্বাচন। একটাই প্রতিশ্রুতি, আমরা বাংলাকে বাঁচাব। নাগরিক পরিষেবা দিয়ে খড়্গপুরকে এক নম্বরে আনব।” পুরভোটের প্রচারের মুখও যে নরেন্দ্র মোদী তা স্পষ্ট করতে এ দিন সভা শেষে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “৩৫টি ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম যাই হোক না কেন আসল প্রার্থী হলেন নরেন্দ্র মোদী আর প্রতীক পদ্মফুল।”
এ দিন জেলার ৬টি পুরসভার নির্বাচনী প্রচারের রূপরেখা তৈরি ও প্রার্থী চূড়ান্ত করতে দলীয় পর্যবেক্ষকদের নিয়ে চৌরঙ্গীর কাছে এক হোটেলে গোপন বৈঠকও করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় পরে বলেন, “সাংগঠনিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী বুধবার ফের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠক হবে।” এ দিন বালাজি ভবনেও যান রাহুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy