রমাপ্রসাদ (চিহ্নিত)
এখনও মাস ঘোরেনি। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রমাপ্রসাদ গিরি। এরই মধ্যে এই যুব নেতার ‘ঘর ওয়াপসি’ নিয়ে জল্পনা শুরু হল শাসক দলের অন্দরে।
জল্পনা জল-বাতাস পেয়েছে রবিবার সন্ধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। গড়বেতায় দলের সাংগঠনিক পর্যালোচনা সভায় বক্তৃতা করছিলেন তিনি। সেখানে ভোটের ফলপ্রকাশের পর তৃণমূল ছেড়ে অন্যদলে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যাঁরা যাচ্ছেন তাঁরা আবার তৃণমূলে ফিরে আসতে চাইছেন। মকরামপুরের প্রধান আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রমা গিরি কোলাঘাটে গিয়ে আমার সঙ্গে মিট করে বলেছেন, দিদিকে বলুন আমি আবার তৃণমূলে ফিরে আসতে চাই। আসলে কেউই আমাদের ছেড়ে যাবেন না।’’ শুভেন্দুর মুখ থেকে একথা শোনার পর রুদ্ধদ্বার সভাস্থলে উপস্থিত কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। অনেকে হাততালিও দিয়ে উঠেন। মঞ্চে বসা দলীয় নেতৃত্বও একে অপরের দিকে তাকান। সেই সভায় উপস্থিত দলের এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘উনি যখন বলছেন, তখন তো আর মিথ্যা কথা বলছেন না, কথার মধ্যে নিশ্চয়ই কিছু সারবত্তা আছে।’’
তিনি কি শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন? রমাপ্রসাদকে ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি। মেসেজ পাঠিয়েও উত্তর মেলেনি।
ভোটের ফল প্রকাশের পর যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রমাপ্রসাদকে। তিনি জেলাপরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষও। কিছুদিন অন্তরালে থাকার পর মুকুল রায়ের অনুগামীদের ধরে রমাপ্রসাদ দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে পৌছে গিয়েছিলেন কয়েকদিন আগে। সেখানেই বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তবে কোনও পদ পাননি রমা। পরে রমা জানিয়েছিলেন, বিজেপির কর্মী হিসেবেই থাকবেন তিনি।
কিন্তু শুভেন্দুর মন্তব্যের পরই ফের সব হিসেব গোলমাল! বিজেপির জেলা নেতৃত্ব প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন, রমাপ্রসাদের দলবদল সম্পর্কে তাঁরা কিছুই জানেন না। একই অবস্থানে এখনও অনড় তাঁরা। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, ‘‘রমাপ্রসাদ গিরি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে জানা নেই। তবে দিন চারেক আগে উনি (রমাপ্রসাদ) আমাকে ফোন করেছিলেন এটুকু বলতে পারি।’’ তিনি বলেন, ‘‘যোগাযোগ করলেই তো আর দলে যোগ দেওয়া নয়। তা ছাড়া কাউকে দলে নিতে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়তেও চাই না।’’ দলে ফেরত আসা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘আমার সেরকম কিছু জানা নেই।’’ জেলার এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘দলে তাঁর ফেরার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’
এখনও স্পষ্ট নয় নয়া সমীকরণ। তবে শুভেন্দুর মন্তব্যের পর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একাংশ তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। এক জায়গায় লেখা হয়েছে, ‘বিজেপিতে স্থান না পাওয়া দলের গদ্দারের আবার দলে ফেরানোর জন্য দলের জেলার কয়েকজন নেতা অতি সক্রিয় -- যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে হোক প্রতিবাদ’।
তৃণমূল সূত্রের খবর, শুধু রমাপ্রসাদ নয়, কোলাঘাটে শুভেন্দুর সঙ্গে নাকি দেখা করেছিলেন আরও অনেকে। কারা তাঁরা? জল্পনা ডানা মেলেছে দ্রুত গতিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy