প্রতীকী ছবি।
কোথাও সরকারি ত্রাণের চাল মিলছে তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে। আবার কোথাও চাল ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে উদ্ধার হচ্ছে রেশন সামগ্রী। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে পৃথক দুই ঘটনার তদন্তে নামল প্রশাসন।
খড়্গপুর শহর ও খড়্গপুর-২ ব্লক এলাকায় এই দুই ঘটনায় শোরগোল পড়ছে। শুক্রবার রাতে খড়্গপুর-২ ব্লকের চাঙ্গুয়ালে তৃণমূল কর্মী লক্ষ্মণ ধাড়ার বাড়ি থেকে সরকারি ত্রাণের চাল উদ্ধার হয়। ১০বস্তা সরকারি চাল কী ভাবে তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে এল তা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। বিডিও-র নির্দেশে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক। পরে বিডিও-র প্রতিনিধিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। ওই রাতেই খড়্গপুর শহরের খরিদায় রেশনের গম ও চাল বোঝাই একটি পিক-আপ ভ্যান আটক করে পুলিশ। ওই সামগ্রী স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী মহেশ কেশরওয়ানি নিজের গুদাম থেকে অন্যত্র সরাচ্ছিলেন বলে জানা যায়।
শনিবার ঘটনার তদন্তে নেমে মহেশকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে গুদামে হানা দেন খাদ্য সরবরাহ দফতরের পরিদর্শক সৌম্য চট্টোপাধ্যায়। তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চাল ও আটা বাজেয়াপ্ত করা হয়। সব মিলিয়ে ৩৫টি চালের বস্তা, আটার ৫০টি বস্তা ও গমের ৮টি বস্তা বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
চাঙ্গুয়াল গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে ইয়াস সামলাতে মজুত ছিল বহু চালের বস্তা। জানা যাচ্ছে, গত বৃহস্পতিবার সেখান থেকেই ১০টি চালের বস্তা নিয়ে যান কয়েকজন তৃণমূল নেতা। সেগুলিই লক্ষ্মণ ধাড়ার বাড়িতে পাওয়া যায়। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য চন্দন চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের কর্মী লক্ষ্মণ বলছেন কয়েকজন নেতা ওঁর বাড়িতে চালের বস্তাগুলি ঢুকিয়ে দিয়ে গিয়েছে। এর তদন্ত প্রয়োজন।” পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সীতা টুডুও মানছেন, “বৃহস্পতিবার কয়েকজন কর্মী অফিসে ছিলেন। সে দিন আমাদের দলেরই কয়েকজন নেতা এসে ত্রাণ দেবেন বলে অফিসের কর্মীদের চাপ দিয়ে চালের বস্তা নিয়ে গিয়েছিলেন। আমিও মানছি এটা অন্যায়। দল ও প্রশাসন তদন্ত করে ওই নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিক।” বিডিও সন্দীপ মিশ্র বলেন, “অভিযোগ আসার পরে প্রতিনিধি পাঠিয়ে ত্রাণের চাল উদ্ধার করে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসেই রাখতে বলেছি। ঘটনার তদন্ত করছি।”
খড়্গপুর শহরের ঘটনাটি অন্যরকম। রেশনের বরাদ্দ চাল কী ভাবে খরিদার ব্যবসায়ী মহেশ কেশরওয়ানির গুদামে গেল তা নিয়েই তদন্ত শুরু হয়েছে। মহেশের দাবি, “মানুষ উদ্বৃত্ত চাল, গম, আটা আমাকে বিক্রি করে। আমিও সেগুলি কম দামেই বাজারে বিক্রি করি। ওই সামগ্রী মজুত করতে বাজার থেকে যে বস্তা কিনি তাতে যদি সরকারি ছাপ থাকে আমি কী করব? আমি তো বুঝতেই পারিনি এটা অন্যায়।” ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খাদ্য সরবরাহ দফতরের পরিদর্শক সৌম্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা খরিদার ওই ব্যবসায়ীর গুদামে হানা দিয়ে রেশনের চাল, গম, আটার বস্তা পেয়েছি। পুলিশ তদন্ত করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy