Advertisement
E-Paper

ফিরে দেখা রবি-কবির শহর সফর

দিনটিকে স্মরণে রেখে আজ, শনিবার শহরে এক অনুষ্ঠান হবে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের মেদিনীপুর শাখার উদ্যোগে। ওই অনুষ্ঠানে অমিত্রাক্ষর সাহিত্য পত্রিকার ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, মেদিনীপুর শাখা স্মৃতি সংখ্যা’ প্রকাশিত হবে।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৫৫
সে-দিন: ১৯৩৯ সালে বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ। (ছবি: বিদ্যাসাগর হলের সৌজন্যে)

সে-দিন: ১৯৩৯ সালে বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ। (ছবি: বিদ্যাসাগর হলের সৌজন্যে)

বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরের (বিদ্যাসাগর হল) দ্বারোদ্ঘাটন করতে মেদিনীপুরে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্মৃতি মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন তিনি।

দিনটিকে স্মরণে রেখে আজ, শনিবার শহরে এক অনুষ্ঠান হবে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের মেদিনীপুর শাখার উদ্যোগে। ওই অনুষ্ঠানে অমিত্রাক্ষর সাহিত্য পত্রিকার ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, মেদিনীপুর শাখা স্মৃতি সংখ্যা’ প্রকাশিত হবে। অমিত্রাক্ষর সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক তথা শাখা পরিষদের ইতিহাস লেখক-প্রকাশক অচিন্ত্য মারিক বলছিলেন, “দিনটি মেদিনীপুরের কাছে চিরস্মরণীয়। তাই এ বারও তা যথাযথ মর্যাদায় পালিত হবে।’’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন মুখ্য গ্রন্থাগারিক সত্যব্রত ঘোষাল, ইতিহাসবিদ্ অন্নপূর্ণা চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের। থাকবেন শাখার সভাপতি হরিপদ মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ মিশ্র প্রমুখ।

উনিশ শতকের শেষ প্রান্তে অখণ্ড বঙ্গদেশে সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার শ্রেষ্ঠ কেন্দ্ররূপে কলকাতা মহানগরীতে গড়ে উঠেছিল ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’। তারপর কয়েক বছরের মধ্যে বাংলার বিভিন্ন জেলাতেও স্থাপিত হয়েছিল সাহিত্য পরিষদের শাখা কেন্দ্র। উত্সাহী সাহিত্য ও সংস্কৃতিপ্রেমী কয়েকজন বিদগ্ধ মানুষের সমবেত প্রচেষ্টায় ১৩১৮ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় সাহিত্য পরিষদের মেদিনীপুর শাখা। এই শাখার নেতৃত্বেই গড়ে উঠেছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নামে স্মৃতি সৌধ— বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির। এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সর্ব্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। আর দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

পরিষদ সূত্রে খবর, ১৯৩৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে মেদিনীপুরে এসেছিলেন কবিগুরু। ১৮ ডিসেম্বর তিনি শহর ছাড়েন। তাঁর ব্যবহৃত চেয়ারটি এখনও রয়েছে।

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের মেদিনীপুর শাখার প্রত্নতত্ত্বশালায় ২০১টি বাংলা পুঁথি, প্রায় ৪০০ সংস্কৃতি পুঁথি এবং ২৭টি ভারত বিখ্যাত পুরাকীর্তির মধ্যে মহারাজা শশাঙ্কের রাজত্বকালীন যে দু’টি স্বতন্ত্র তাম্রশাসন সুরক্ষিত রয়েছে। ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, মেদিনীপুর শাখা স্মৃতি সংখ্যা’ প্রকাশ করার জন্য প্রায় পাঁচ বছর ধরে গবেষণা করেছেন অমিত্রাক্ষর সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক তথা শাখা পরিষদের ইতিহাস লেখক ও প্রকাশক অচিন্ত মারিক। অচিন্ত্যবাবু বলছিলেন, “পাঁচ বছর ধরে নিরন্তর গবেষণার কাজে লিপ্ত থেকে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ মেদিনীপুর শাখার ঘটনাবহুল ইতিকথা তিনখণ্ডে লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। পত্রিকার সংখ্যায় শাখার বিবিধ কর্মকাণ্ডের ধারা বিবরণী লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি তত্কালীন মেদিনীপুরের মানবসম্পদ, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও লোকশিল্পের একটা সুস্পষ্ট আভাস গ্রন্থনা করারও চেষ্টা করেছি। সংখ্যাটিতে শাখা পরিষদের বিগত একশো বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলির উল্লেখ রয়েছে।’’

মেদিনীপুরে এসে কি বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ তাও এই সংখ্যায় রয়েছে। সংবর্ধনায় আপ্লুত হয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘মেদিনীপুরবাসী, আপনারা হয়তো এ কথা মনে রাখবেন যে কবির শেষ দান, কৃতজ্ঞতার দান, সম্মানের দান আপনাদের মাঝখানে থেকে এই পুণ্যভূমিতে এসে সম্পন্ন করেছি। এটা আমার পক্ষে গৌরবের বিষয়। আনন্দের বিষয়। এটুকুই আমার বলবার কথা। গৌরবের মূলে আছেন তিনি, চিরকালের মতো যিনি আমাদের দেশে গৌরবান্বিত। দয়া নহে, বিদ্যা নহে, ঈশ্বরচন্দ্রের প্রধান গৌরব তাঁর অজেয় পৌরুষ। তাঁর
অক্ষয় মনুষ্যত্ব।’

কবিতায়, গানে আজ, শনিবার সেই স্মৃতিচারণেই ফিরবে শহর মেদিনীপুর।

Rabindranath Tagore Remembrance Vidyasagar Smriti Mandir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy