Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নিরাপত্তা নিয়ে কড়াকড়ি রাজ কলেজে

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিমাইচাঁদ মাসান্ত বলেন, “চুক্তির ভিত্তিতে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করা হবে। কলেজ ও হস্টেল চত্বরে নিরাপত্তা কর্মীরা নজরদারি করবেন। উপযুক্ত প্রমাণপত্র ছাড়া বহিরাগতদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০০:২৭
Share: Save:

কখনও কলেজের ছাত্র সংসদের কাজে হস্তক্ষেপ, কখনও ছাত্রদের মারধর, কখনও খোদ অধ্যক্ষকে নিগ্রহ। বহিরাগত তাণ্ডবে গত কয়েকবছর ধরে অতিষ্ট ঐতিহ্যবাহী ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ। গত সপ্তাহেও বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে বেশ কয়েকজন ছাত্রকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তারপরই ন়ড়ে বসেন কর্তৃপক্ষ। ঢেলে সাজা হচ্ছে কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ইতিমধ্যেই ছ’জন নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের জন্য কলেজকে বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর। তা ছাড়া কলেজের ২,২০০ পড়ুয়ার জন্য ডিজিট্যাল সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, কলেজের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের নজরে আনা হয়। তারপরই বেসকারি সংস্থার মাধ্যমে ছ’জন অস্থায়ী নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগের বরাদ্দ হয়েছে।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিমাইচাঁদ মাসান্ত বলেন, “চুক্তির ভিত্তিতে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করা হবে। কলেজ ও হস্টেল চত্বরে নিরাপত্তা কর্মীরা নজরদারি করবেন। উপযুক্ত প্রমাণপত্র ছাড়া বহিরাগতদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না।” স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উভয় স্তরের পড়ুয়াদের জন্যই ডিজিট্যাল পরিচয়পত্র তৈরি হবে।

এর আগে কলেজে কয়েকটি নজরদার ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। কিন্তু তা যে তেমন কোনও কাজে আসেনি তা প্রমাণ হয়েছে দিন কয়েক আগেই। ইউনিয়ন রুমে ঢুকে নির্বাচিত ছাত্র সংসদের সদস্যদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরেই কলেজে ভর্তি থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়া সবই সামলাচ্ছে বহিরাগতরা। শাসকের ছত্রছায়ায় থাকা কিছু যুবকের দাপটে বারে বারে অশান্ত হয়েছে কলেজ চত্বর। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে টিএমসিপি ও বাম ছাত্র সংগঠনের ঝামেলায় বহিরাগতদের হাতে আক্রান্ত হন তৎকালীন অধ্যক্ষ কিশোরকুমার রাঢ়ী। প্রকাশ্যে অধ্যক্ষকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে শাসক আশ্রিত বহিরাগতের বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালে কলেজের শারীরশিক্ষার এক শিক্ষককেও বহিরাগতরা কলার ধরে হেনস্থা করেছিল বলে অভিযোগ।

কলেজ সূত্রের দাবি, এক সময় কলেজের ছাত্রাবাসেও অসামাজিক আসর বসানোর মূলে ছিল বহিরাগতরা। বহিরাগতদের দাপটে নির্বাচিত ছাত্র সংসদের সদস্যরা স্বাভাবিক ভাবে কোনও কাজ করতে পারেন না বলে অভিযোগ। প্রায়ই কলেজের ইউনিয়ন রুম দখল করে বসে থাকে বহিরাগতরা। কলেজর নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচিত ছাত্র সংসদ থাকা সত্ত্বেও বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ করছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। কলেজ কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত পদক্ষেপ করছেন।” ঝাড়গ্রাম জেলা টিএমসিপির কার্যকরী সভাপতি আর্য ঘোষও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE