E-Paper

টানা বৃষ্টিতে জলবন্দি গ্রাম

গোপীবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হেমন্ত ঘোষ সাতমা, তেঁতুলিয়া, শাসড়া, সারিয়া বিভিন্ন গ্রামে ঘুরেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ০৬:৪০
বেলপাহাড়ির চিড়াকুটিতে হড়পা বানে পর্যটকদের আটকে গাড়ি উদ্ধার করছে পুলিশ।

বেলপাহাড়ির চিড়াকুটিতে হড়পা বানে পর্যটকদের আটকে গাড়ি উদ্ধার করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

একটানা বৃষ্টি ও জলাধারের ছাড়া জলে বিপর্যস্ত ঝাড়গ্রাম জেলার একাধিক এলাকা। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের বেশকিছু গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ভেঙেছে মাটির বাড়ি। জল বেড়ে একাধিক রাজ্য সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাতে আরও জল বাড়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।

শনিবার দুপুর থেকে জেলায় টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিভিন্ন নদীর জল বেড়ে কজওয়েগুলিতে বিপুল জলরাশি বইতে শুরু করেছে। লাগাতার বৃষ্টির কারণে গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। সাতমা, আমরদা, শাশড়া, সারিয়া এবং গোপীবল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রামগুলিতে জল ঢুকে গিয়েছে। প্রতিটি অঞ্চলে গড়ে ১০-১৫টি মাটির বাড়ি ভেঙেছে। বাসিন্দারা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাই স্কুল, অঞ্চল অফিসে আশ্রয় নিয়েছেন।

গোপীবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হেমন্ত ঘোষ সাতমা, তেঁতুলিয়া, শাসড়া, সারিয়া বিভিন্ন গ্রামে ঘুরেছেন। জলমগ্ন গ্রামগুলিতে শুকনো খাবার তুলে দিয়েছেন। দুপুরে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়েছে। হেমন্ত বলছেন, ‘‘সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ বাসিন্দাকে ত্রাণ শিবিরে তুলে আনা হয়েছে। তবে বিকেলে গালুডি থেকে দেড় লক্ষ আরও জল ছাড়ার পর পরিস্থিতি খুব খারাপ হতে পারে।’’

কাঁথুয়া খালে জল বেড়ে গোপীবল্লভপুর-ঝাড়গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সকাল থেকেই। অন্যদিকে চিল্কিগড়ে ডুলুং নদীর জল বেড়ে বিচ্ছিন্ন ঝাড়গ্রাম ও জামবনি। বেলপাহাড়ির এঠেলাতে তারাফেনি নদীর জল বাড়ায় ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া রাজ্য সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। জল জমেছে শিলদা বাজারেও। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের বিডিও শ্যামসুন্দর মিশ্র বলেন, ‘‘দু’দফায় গালুডি থেকে দু’লক্ষ ৭০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। একাধিক মাটির বাড়ি ভেঙেছে। বিভিন্ন গ্রামে জল ঢুকেছে। একাধিক মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। আমরা সতর্ক রয়েছি।’’

বেলপাহাড়ি ব্লকের শিমূলপাল গ্রাম পঞ্চায়েতের চিড়াকুটি এলাকায় হড়পা বানে আটকে পড়ে একটি পর্যটকদের গাড়ি। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থেকে বেলপাহাড়ির কেকাবনিতে বেড়াতে এসেছিলেন এক পুলিশকর্মী এবং তাঁর চিকিৎসক ভাই ও চিকিৎসক স্ত্রী। চিড়াকুটি পেরিয়ে কালভার্টের পাশেই মাটির সার্ভিস রাস্তায় আটকে গিয়েছিল তাঁদের গাড়ি। আচমকা হড়পা বানে জল বাড়তে শুরু করে। খবর পেয়ে শনিবার রাতেই ঘটনাস্থলে যায় বেলপাহাড়ি থানার পুলিশ। এএসআই অজয় দেওঘরিয়া গামছা পরেই জলে নেমে যান। বাসিন্দাদের সহযোগিতায় চালক-সহ মোট চারজনকে গাড়ি থেকে উদ্ধার করেন। রাতের মধ্যেই পে-লেডার ডেকে পর্যটকের গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ।

পর্যটক অর্ণবসৈকত ভদ্র সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘পুলিশ যে ভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছেন তা দৃষ্টান্ত। প্রত্যন্ত এলাকায় রাতের এ ভাবে পুলিশকে পাশে পাব তা ভাবতে পারিনি।’’ বেলপাহাড়ি থানার আইসি দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘রাত ১১টা নাগাদ খবর পাই চিড়াকুটির কালভার্টের পাশের অস্থায়ী রাস্তায় প্রবল বৃষ্টির মধ্যে একটি গাড়ি আটকে পড়েছে। স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করি। ভিলেজ পুলিশরাও ছিলেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Gopiballavpur flood

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy