Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Subrata Mukherjee

Subrata Mukherjee death: জেলে রাত কাটিয়েছিলেন সুব্রত ও শিশির

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেও একসময় একই মন্ত্রিসভার সদস্য সুব্রতর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে মাঝেমধ্যে কথা হত বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু।

এক অনুষ্ঠানে সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শিশির অধিকারী।

এক অনুষ্ঠানে সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শিশির অধিকারী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৪৯
Share: Save:

সময়টা সত্তরের দশক। একই সঙ্গে খড়গপুর জেলে রাত কাটিয়েছিলেন সদ্যপ্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। এক রাত পরেই অবশ্য দুজনে জামিন পেয়ে যান।

বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার হাসপাতালে সুব্রত যখন প্রয়াত হন, সেই সময় অধিকারী নিবাস ‘শান্তি কুঞ্জ’ থেকে অদূরে কাঁথির ভবতারিণী মায়ের মন্দিরে কালীপুজোয় গিয়েছিলেন অশীতিপর শিশিরবাবু। বয়সের ভারে দীর্ঘক্ষণ থাকতে পারেননি। অঞ্জলি দিয়েই বাড়ি রওনা দেন। তারপর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক লড়াইয়ের সঙ্গী সুব্রতর মৃত্যু সংবাদে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন অধিকারী পরিবারের অভিভাবক। অধুনা বিজেপি ঘনিষ্ঠ শিশিরবাবু। আর সুব্রত ছিলেন তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী। শিশিরবাবু অবশ্য শুক্রবারও দিনভরই ডুবেছিলেন স্মৃতিচারণায়।

প্রবীণ সাংসদ বলছিলেন, ‘‘কেন্দ্রে তখন জনতা পার্টির সরকার চলছে। প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ডাকা বন্‌ধে ব্যাপক অশান্তি হয়। কাঁথিতে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগে আমার সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল সুব্রতকে। এক রাত একসঙ্গে জেলে থেকেছি।’’ শিশিরবাবুর কথায়, ‘‘অত্যন্ত সাদামাটা জীবন যাপন করত। বড়দের সম্মান আর ছোটদেরও গুরুত্ব দিতেন।’’ একই সঙ্গে শিশিরবাবু আক্ষেপ, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরেই সুব্রত খুব অসুস্থ। বহুবার ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সম্ভব হয়নি।’’

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর কলকাতার মেয়র হয়েছিলেন সুব্রত। সেই সময় দীর্ঘ দিন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ সামলাচ্ছেন শিশিরবাবু। কলকাতা পুরসভার স্টল থেকে প্রাপ্য খাজনা কী ভাবে আদায় করতে হবে টেলিফোনে সে ব্যাপারে শিশিরবাবুর পরামর্শ চেয়েছিলেন সুব্রত। শিশিরবাবুর কথায়, ‘‘পুরসভার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের স্টল নিয়ে যে চুক্তি হয়েছিল, তার যাবতীয় কাগজপত্রের প্রতিলিপি সুব্রত আমার কাছে চেয়েছিলেন। আমিও পৌঁছে দিয়েছিলাম। পরে কলকাতাতেও ব্যবসায়ীদের স্টল বন্টনের ক্ষেত্রে খাজনা চুক্তি করা হয়।’’ অধিকারী বাড়ির মেজো ছেলে, নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীও এ দিন স্মৃতিচারণা করেছেন প্রয়াত সুব্রতর। গত বছর ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেও একসময় একই মন্ত্রিসভার সদস্য সুব্রতর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে মাঝেমধ্যে কথা হত বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু।

পঞ্চায়েত মন্ত্রীর প্রয়াণে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বহু তৃণমূল নেতাই। এ দিন দিঘায় দলীয় কার্যালয়ে সুব্রতর স্মরণসভা হয়। সুব্রতর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘এ রকম একজন দক্ষ প্রশাসক এবং ভাল মনের মানুষ বর্তমান রাজনীতিতে একেবারে নেই বললেই চলে। তাঁর অভাব পূরণ করা খুবই কষ্টদায়ক হয়ে পড়বে।’’

পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার সকালেই কলকাতা রওনা দেন তৃণমূল বিধায়কেরা। দুই মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এবং অখিল গিরিও যান কলকাতায়। অনেকে আবার কালী পুজোর অনুষ্ঠান এবং সামাজিক কর্মসূচি স্থগিত রেখেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Subrata Mukherjee Sisir Adhikary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE