জমা জলে দেখা দিয়েছে পানীয় জল সংগ্রহে সঙ্কট। তমলুকের কুলবেড়িয়ায়। নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টি কমেছে। কিন্তু জেলা সদর তমলুক এবং শিল্প শহর হলদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় নামেনি জমা জল। বাসিন্দারা যেমন হায়রানির শিকার হচ্ছেন, তেমনই শিল্প শহরে বেহাল নিকাশি নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর।
হলদিয়া পুরসভার ১, ১৩, ২৪, ২৫, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিংহভাগ এলাকা এখনও জলমগ্ন। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আজাদ হিন্দ নগর এলাকায় খাল আটকে রেখে একটি কালভার্ট তৈরির কাজ চলছে। তাতে ওই অঞ্চলের নিকাশি বিপর্যস্ত। বর্ষাকালে নিকাশি খাল আটকে কালভার্ট তৈরির যৌক্তিকত নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিরোধীরা প্রশ্ন করছে। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্যের সহ-সভাপতি প্রদীপ বিজলী বলেন, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষের তো মাথায় একটাই চিন্তা যে, কোন নেতা কোন কারখানার দায়িত্ব পাবেন। তাই পুর পরিষেবা দিতে ওরা ব্যর্থ।’’
হলদিয়ার আজাদ হিন্দ নগরের খাল দিয়ে জমা জল বের হতে পারেনি। তাতে শুক্রবারও আজাদ হিন্দ নগর মাতঙ্গিনী বস্তি, ক্ষুদিরাম কলোনি ও নেড়ারচক এলাকাতে জল মগ্ন। এ দিন সকালে পুরসভা প্রাক্তন পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ মণ্ডলের নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ নগরের খাল যেখানে বন্ধ করা ছিল তা কেটে দেওয়ার ফলে বিকেলে পরিস্থিতির আংশিক উন্নতি হয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার অশ্বাস দিয়ে হলদিয়ার পুরপ্রধান সুধাংশু মণ্ডলের দাবি, ‘‘সকালে আজাদ হিন্দ নগরের বন্ধ খাল কেটে দেওয়া হয়েছে। আসলে ওই কালভার্ট তৈরি কাজ গ্রীষ্মকাল থেকে শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে বর্ষার কোনও যোগ নেই।’’
কোলাঘাট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২ নম্বর গেটের প্রবেশ পথ, মেচেদা বাজার সংলগ্ন আন্দুলিয়া, শান্তিপুর এ দিনও জলমগ্ন। রাস্তাঘাট ছাড়িয়ে জল ঢুকেছে বাড়িতে। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে শহিদ মাতঙ্গিনী বিডিও অফিস জলে থইথই করছে। পাম্প বসিয়ে জল বের করার করেছে ব্লক প্রশাসন। একই কাজ চলছে তমলুক শহরের জলমগ্ন এলাকায়। এছাড়া, নন্দকুমার, ময়না, ও চণ্ডীপুর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামেরও পানের বরজ, মাছ চাষের পুকুর জলমগ্ন হয়েছে।
তমলুক শহর, কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মত এলাকা জলমগ্ন হওয়ার কারণ হিসাবে বেহাল নিকাশিকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র-সহ মেচেদা বাজার এলাকায় বর্ষাকালে জল নিকাশির অন্যতম ভরসা বাঁপুর খাল। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জল বাঁপুর খালে ফেলার জেরে ওই খাল প্রায়ই মজে যায়। সেটি স্থায়ী ভাবে সংস্কারও করা হয় না। শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ পঞ্চানন দাস বলেন, ‘‘তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জল বাঁপুর খাল দিয়ে বের হওয়ার ফলে খালের অনেকটা অংশই মজে যায়। ফলে এবার ভারী বৃষ্টিতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও আমাদের গ্রামের বহু বসতবাড়ি জলে ডুবে গিয়েছে।’’ যদিও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার অপু মজুমদারের দাবি, ‘‘বাপুর খালের একাংশ আমরা প্রতিবছরই আমরা সংস্কার করে থাকি। এবারও খাল সংস্কার করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy