Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Strike

ধর্মঘটে এড়ানো গেল না হয়রানি

তমলুক শহরের বড়বাজার, হাসপাতালমোড় ও নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, কাঁকটিয়া, মেচেদা বাজারে অধিকাংশ দোকান খোলা থাকলেও অন্য দিনের মতো ক্রেতাদের ভিড় ছিল না।

n জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ। পাঁশকুড়ায়। নিজস্ব চিত্র

n জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ। পাঁশকুড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১৪
Share: Save:

বাম-কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটের দিনে সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ খোলা রেখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য কর্মী- আধিকারিক ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাজিরা বাধ্যতামূলক করে নির্দেশ জারি করেছিল রাজ্য সরকার। এছাড়া বাস-গাড়ি চালচল ও দোকানপাট খোলা রাখার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পুলিশ বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। সরকারি নির্দেশিকা মেনেই বুধবার জেলা প্রশাসনিক অফিস-সহ সমস্ত সরকারি দফতরে প্রায় সব আধিকারিক ও কর্মীরা হাজির ছিলেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং কলেজগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরাও ছিল স্বাভাবিক। তবে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি অন্যদিনের তুলনায় কম ছিল। ধর্মঘটের জেরে জেলা সদরে এদিন ব্যাঙ্ক ও ডাকঘর বন্ধ থাকায় হয়রান হতে হয় গ্রাহকদের।

তমলুক শহরের বড়বাজার, হাসপাতালমোড় ও নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, কাঁকটিয়া, মেচেদা বাজারে অধিকাংশ দোকান খোলা থাকলেও অন্য দিনের মতো ক্রেতাদের ভিড় ছিল না। ব্যবসায়ীদের মতে, ধর্মঘটের আগাম ঘোষণায় অনেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হননি। তা ছাড়া রাস্তায় বাস প্রায় বন্ধ থাকায় অনেকে বাজারে আসতে পারেননি।

পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের বাজার এলাকাগুলিতে ধর্মঘটের কোনও প্রভাব পড়েনি। বাজারগুলিতে বেচা-কেনা ছিল স্বাভাবিক বলে দোকানদারদের দাবি। স্কুল ও কলেজ ও সরকারি অফিসগুলিতে হাজিরাও ছিল স্বাভাবিক।

বুধবার ভোর থেকেই হলদিয়া জুড়ে বন‌্ধ সমর্থকরা বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেন। ব্রজলালচকে বন‌্ধ সমর্থকরা পথ অবরোধ করেন। পুলিশ লাঠিচার্জ করে অবরোধ উঠিয়ে দেয়। দুর্গাচকের গিরিশ মোড়ে, সুতাহাটা, মহিষাদলেও বন‌্ধের সমর্থনে মিছিল হয়। তবে এ দিন শিল্পশহরের জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। অধিকাংশ দোকানে ছিল খোলা। ফেরি পরিষেবা ছিল স্বাভাবিক।

সকালে পটাশপুর, এগরা এবং ভগবানপুরে বাম ও এসইউসি কর্মীরা পথ অবরোধকরে। এগরা ত্রিকোণ পার্কে বাম কর্মীরা কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করে। পরে এগরা থানার পুলিশ গিয়ে রাস্তা থেকে অবরোধ কারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে এসইউসি কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। কুদি, ভবানীচক এবং দোবাঁধিতেও পথ অবরোধ করেন বামকর্মীরা। পটাশপুরের বাঙ্গুচক মোড় এবং প্রতাপদিঘি মংলামাড়োতে অবরোধ ও মিছিল করেন ধর্মঘটিরা।

এ দিন কাঁথির সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড সহ বেশ কিছু জায়গায় প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে সুপার মার্কেট, কাপড় বাজার খোলা ছিল। তবে অন্যদিনের তুলনায় সাধারণ মানুষের ভিড় যথেষ্ট কম ছিল। সকাল থেকে ধর্মঘটের সমর্থনে পৃথকভাবে মিছিল করেন বামফ্রন্ট এবং এসইউসি কর্মীরা। স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি কম ছিল। একই ছবি ছিল রামনগর, বালিসাই, সাতমাইল, হেঁড়িয়া, কালিনগর, বাজকুল এলাকায়। দিঘায় দোকানপাট খোলা ছিল। যান চলাচলও প্রায় স্বাভাবিক ছিল। তবে ধর্মঘট হওয়ায় এদিন পর্যটকদের সেরকম ভিড় ছিল না।

জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ’’জেলায় সব অফিসগুলিতে সার্বিকভাবে ৯৮ শতাংশ কর্মী হাজির ছিলেন। সমস্ত অফিসে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। অশান্তির কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’

সিটুর জেলা সম্পাদক সুব্রত পন্ডার দাবি, ‘‘সরকারিভাবে কড়া নির্দেশ থাকায় কর্মী-আধিকারিক ও স্কুল-কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেশিরভাগ হাজির থাকলেও সাধারণ মানুষ যাননি। ছাত্রছাত্রীদের অধিকাংশ অনুপস্থিত ছিল। বাজারগুলিতে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। ধর্মঘটে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছে।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর অবশ্য দাবি, ‘‘জেলার মানুষ কর্মনাশা এই ধর্মঘট ব্যর্থ করেছেন। জনজীবন স্বাভাবিক ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bandh Strike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE