Advertisement
E-Paper

প্রেমে প্রত্যাখ্যান, ছাত্রীকে চলন্ত সাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে খুন যুবকের

‘‘ওই পরিবারের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা উচিত ছিল। যদি পাঁশকুড়া থানায় সেটা সম্ভব হয়নি তো, ওঁরা সিআই বা আমার দফতরেও জানাতে পারতেন। আপাতত ওই ছাত্রীর মৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে।’’  

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫৩
প্রেরণা মাইতি।

প্রেরণা মাইতি।

অফিস টাইমে প্রকাশ্যে এক স্কুলছাত্রীর চুলির মুঠি ধরে সাইকেল-সহ তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিচ্ছে এক মোটরবাইক আরোহী। পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন ওই ঘটনায় বুধবার চমকে উঠেছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রীর। ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার অন্য ছাত্রীরাও।

এ দিনের ঘটনায় মৃত প্রেরণা মাইতি পাঁশকুড়ার মধুসূদনবাড় এলাকার বাসিন্দা। অভিযোগ, প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় সমীর সাহু নামে এক কলেজ পড়ুয়া এ দিন তাকে ধাক্কা দিয়েছিল। যার জেরে মৃত্যু হয় তার। সামনে এসেছে অভিযুক্ত সমীরের একাধিক ‘কীর্তি’র কথা।

প্রেরণার পরিবারের অভিযোগ, তাদের বাড়ির উল্টোদিকের বাড়িতে ভাড়া থাকত সমীর। মাস দু’য়েক আগে রাতে সে জানালার তারের জাল কেটে প্রেরণাদের বাড়িতে ঢুকেছিল। সে বার সমীরের বাড়ির মালিককে অভিযোগ জানিয়েছিল প্রেরণার পরিবার। সেই কারণে ওই বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল সমীরকে। পরে সে ফেসবুকে প্রেরণার নামে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে থানায় মৌখিক অভিযোগ জানায় প্রেরণার পরিবার। পুলিশ তখন সমীরকে সাবধান করে দেয় বলে পরিবারের দাবি।

কিন্তু এতেও সমীর দমেনি বলে অভিযোগ। প্রেরণার পরিবারের অভিযোগ, গত ২২ অক্টোবর সে প্রেরণাকে তার ঘরে আটকে রেখেছিল। সেবারও থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে অভিযুক্তের বাবা-মায়ের অনুরোধে তা থেকে বিরত হন প্রেরণার পরিবার। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও সমীরের হুমকি বন্ধ হয়নি। সমীরের দাদা পাঁশকুড়া থানার সিভিক ভলান্টিয়ার। প্রেরণার দিদি পৌলমী মাইতির অভিযোগ, ‘‘পাঁশকুড়া থানায় সমীরের বিরুদ্ধে প্রথমবার অভিযোগ জানাতে গেলে সমীরের ওই দাদা শুকদেব আমাদের আশ্বস্ত করে বাড়ি ফিরিয়ে দেন।’’

প্রশ্ন উঠেছে, দাদা সিভিক ভলান্টিয়ার, সেই কারণেই কি সমীর বেপরোয়া ছিল? আবার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন পাঁশকুড়া থানা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি কেন?

এ ব্যাপারে পাঁশকুড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘মেয়েটি এবং ছেলেটি পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী। তাই দু’জনের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ছেলেটির পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতেই মেয়েটির পরিবার সমীরের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি।’’

জেলা পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘ওই পরিবারের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা উচিত ছিল। যদি পাঁশকুড়া থানায় সেটা সম্ভব হয়নি তো, ওঁরা সিআই বা আমার দফতরেও জানাতে পারতেন। আপাতত ওই ছাত্রীর মৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

কিন্তু এ ভাবে দিনেদুপুরে এক ছাত্রীর মৃত্যুতে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়েরা। প্রেরণার প্রতিবেশী তথা কলেজ ছাত্রী সঙ্গীতা মাইতি বলেন, ‘‘প্রেরণার সঙ্গে যা ঘটেছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত। দিনের আলোয় যদি মেয়েরা নিরাপদ না হন, তা হলে রাতে পাঁশকুড়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন, বোঝাই যাচ্ছে।’’ প্রেরণা যে স্কুলের ছাত্রী ছিল, সেই পাঁশকুড়া ব্রাডলিবার্ড হাইস্কুলের শিক্ষক মানসকুমার দাস বলেন, ‘‘প্রেরণা বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। ওর মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। প্রশাসন দোষীকে কড়া শাস্তি দিক।’’

Crime Violence Violence Against Women Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy