পেট-পুরে: কোলাঘাটের স্কুলে খাদ্য উৎসব। নিজস্ব চিত্র
কেউ এনেছে ধোকলা। কেউ বা আবার চিকেন পকোড়া!
এই যদি হয় ‘স্টার্টার’। তাহলে ‘মেন কোর্স’ কাশ্মীরি বিরিয়ানিও আছে। না, এটা কোনও রেস্তোরাঁ নয়। দেবী দুর্গার বোধনের আগে সোমবার কোলাঘাট ইউনিয়ন হাইস্কুল চত্বরে আয়োজিত আনন্দ মেলায় এমনই নানা স্বাদের খাবারের স্টল সাজিয়েছিল বিভিন্ন ক্লাসের পড়ুয়ারা। একদিনের এই খাদ্য উৎসবে পড়ুয়াদের হাতে তৈরি পছন্দের খাবারে রসনা তৃপ্তি করল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকরা।
মেলা উপলক্ষে নাচ-গান ও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি বিজ্ঞানভিত্তিক মডেল নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজনও হয়। তবে গত দু’বছরের মতো এবারও মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল খাদ্য উৎসব। স্কুল চত্বরে অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনেই ফাঁকা চত্বরে বসেছিল বিভিন্ন খাবারের স্টল। খাবারের তালিকায় যেমন ছিল দক্ষিণ ভারতীয় ইডলি-সাম্বর, তেমনই ছিল উত্তর ভারতীয় নানা বিরিয়ানির পদও। মাংস যাঁদের পছন্দ নয়, তাঁদের জন্য ছিল ফিস ফ্রাই থেকে চিংড়ির চপ।রুটি, আলুর দম, ফুচকার স্টলও ছিল।
খাদ্য উৎসবে সপ্তম শ্রেণির কুশল জৈন, রাহুল বেরা-সহ পাঁচ পড়ুয়া দিয়েছিল ইডলি-সাম্বরের স্টল। কুশল বলছিল, ‘‘বাড়িতে মা ইডলি তৈরি করে দিয়েছেন। মায়ের হাতে-হাতে আমিও সাহায্য করে দিয়েছি। মায়ের হাতে তৈরি ইডলিই বন্ধুদের সঙ্গে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছি।’’
রসনা তৃপ্তিতে পিছিয়ে ছিলেন না স্কুলের শিক্ষকরাও। পড়ুয়াদের স্টল থেকে কিমা কাশ্মিরী ও এগ চিজ পরোটা কিনলেন প্রবীণ শিক্ষক সুকুমার দে। তিনি বলছিলেন, ‘‘সচরাচর তো এসব খাবার পাওয়া যায় না। তাই কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’’ দোকান খুলতেই ঝড়ের গতিতে শেষ হয়ে যায় কাশ্মীরি বিরিয়ানিও। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া জেমিম সুলতানা বলছিল, ‘‘মায়ের হাতে বানানো কাশ্মীরি বিরিয়ানি নিয়ে প্রথমবার স্টল দিলাম। ৬০ প্লেট বিরিয়ানি বিক্রি করতে ৩০ মিনিটও লাগল না।’’
প্রধান শিক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য বলছিলেন, ‘‘কোলাঘাট শহরে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করায় মিশ্র সংস্কৃতির চর্চা রয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে বিভিন্ন প্রদেশের পদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ করে দিতেই এই উদ্যোগ।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ বার ২৩ টি স্টল হয়েছে। খাবার বিক্রির লাভের কিছু অংশ পড়ুয়ারা স্কুলকেও দেয় যা দুঃস্থ ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্যে ব্যয় করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy