তবে এমনটা মানতে নারাজ সাধারণ মানুষ। কলেজ পড়ুয়া তন্বী থেকে ছেলেকে স্কুলে পাঠানো গৃহিণী, কিংবা অফিসযাত্রী সকলেই বলছেন স্বাচ্ছন্দ্যটাই আসল কথা। যা রোদ তাতে বাড়ি থেকে বেরতেই ভয় করে। কিন্তু বেরোতে তো হবেই। কী আর করা যাবে?
ঘাটালের এক চশমা ব্যবসায়ী অমলেশ বর্মন বলেন, “সাধারণত মোটর বাইক চালকরাই এত দিন রোদ-চশমা বেশি ব্যবহার করতেন। সারা বছরে সাত-আটশো রোদ-চশমা বিক্রি করেছি এত দিন। কিন্তু এ বার তা রেকর্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত কাল এক দিনেই সাড়ে তিনশোর বেশি চশমা বিক্রি করে ফেলেছি।’’
অমলেশবাবু জানান, গত আড়াই মাসে দু’হাজারের বেশি বিভিন্ন দামের চশমা বিক্রি হয়ে গিয়েছে। চাহিদা এতটাই বেশি যে প্রায় প্রতিদিনই কলকাতা থেকে কিনে নিয়ে যেতে হচ্ছে। ঘাটাল শহরের আর এক দোকানি উত্তম দে-র কথায়, “শিশু থেকে বয়স্ক— সকলেই চশমা কিনছেন। গত কালই সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এখনও দেড় হাজার অর্ডার দেওয়া হয়েছে। সে গুলোও এলেই বিক্রি হয়ে যাবে।”
এমনকী যাঁদের চোখে পাওয়ার রয়েছে তাঁরাও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তৈরি করাচ্ছেন রোদ-চশমা। দাসপুরের এক চক্ষু বিশেষজ্ঞ নির্মল পালধি বলেন, “এখন আমার কাছে সাধারণ চশমার চেয়ে রোদ চশমার জন্য চোখ দেখাতে আসছেন বেশি মানুষ।’’ ব্যবসা এমন বেড়েছে যে শুধু চশমার দোকান নয়, রোদ-চশমা বিকোচ্ছে ভুষিমাল, মনোহারি দোকান এমনকী বইয়ের দোকানেও। মূলত ৬০ থেকে ২৫০ টাকার চশমার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অনেকেই আবার কম দামের চশমা একাধিক কিনছেন। তবে পাঁচশো থেকে হাজার টাকা দামের চশমাও ভালই বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। দামী সংস্থার চশমার বিক্রিও ভালই। কিন্তু হাজার দুয়েকের উপর খরচ করতে নারাজ ক্রেতারা। তাঁদের বেশিরভাগই চান কম খরচে কেতাদূরস্থ হয়ে উঠতে।
ঘাটাল কলেজের ছাত্রী সবিতা সরকারও সে কথাতেই সায় দিলেন, ‘‘যা গরম তাতে খালি চোখে সত্যিই রাস্তায় বেরোনো যায় না। হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে রোদ চশমা কিনেছি। দামি দিয়ে কী হবে? তার চেয়ে দু’টো থাকলে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে পরা যাবে।’’