অপরিচ্ছন্ন: হাল ফেরেনি কাঁচা নালার। ঝাপেটাপুরে। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গির মশা মারতে যৌথ কর্মসূচি নিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর ও খড়্গপুর পুরসভা। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত প্রতি মাসের ১ থেকে ৫ এবং ১৬ থেকে ২০ তারিখ সমীক্ষা চলার কথা। প্রতি মাসে দশ দিনের এই সমীক্ষায় প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শন ও মশা নিরোধক স্প্রে করার কথা ছিল। কিন্তু প্রথম মাসেই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল এই কর্মসূচি।
খড়্গপুর পুরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ডেই সমীক্ষা চালানো হয়নি বলে অভিযোগ। বিষয়টি টেরই পাননি পুরসবাসী। স্প্রে-ও করা হয়নি মশা নিরোধক। স্বাস্থ্য কর্তারাও মানছেন কাজে অনেক জায়গায় ফাঁক থেকে গিয়েছে। তবে পুরসভা তা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়িতেই সমীক্ষা চলেছে।
গরমের মরসুমেই ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া ছড়ায়। জমা জল আর আবর্জনাই মশার আঁতুড়ঘর। সঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা। গত বছর শীতেও খড়্গপুরে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দেওয়ায় নড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা। মশা নিধনে ছ’মাসের জন্য যৌথ কর্মসূচি নেওয়া হয়। পরিচালনার দায়িত্বে অবশ্য রয়েছে পুরসভা। এই কাজের জন্য ৪৩৬জন সেচ্ছাসেবককে বাছাই করেছে পুরসভা। ২১৮টি দলে ২জন করে স্বেচ্ছাসেবককে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। রয়েছেন ৪৪জন সুপারভাইজার আর তাঁদের মাথায় পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের একজন করে নোডাল অফিসার।
চলতি মাসে প্রথম পর্যায়ে (১ থেকে ৫তারিখ) এই কর্মসূচি ঘিরে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথম দু’দিনেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে মিলেছিল ডেঙ্গির মশার লার্ভা। স্বাস্থ্য কর্তাদের ওয়ার্ডে ঘুরতেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায়ে (১৬ থেকে ২০ তারিখ) ক্রমে ঝিমিয়ে পড়ে অভিযান। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী প্রশান্ত দাস বলেন, “এলাকায় কোনও সমীক্ষার কাজ দেখিনি। পুরসভার পক্ষ থেকে মশা মারার তেল স্প্রে হয়েছে বলেও নজরে পড়েনি।” ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রধান শিক্ষক মদনকুমার নাগেরও বক্তব্য, “আমার বাড়িতে কেউ আসেনি। এলাকায় কাউকে স্প্রে, ব্লিচিং পাউডার ছড়াতে দেখিনি।”
যদিও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুর পারিষদ বেলারানি অধিকারীর দাবি, “সব জায়গায় সমীক্ষকেরা যাচ্ছেন। তবে অনেকে বাড়িতে থাকছেন না বলে তাঁরা ফিরে আসছেন।” তবে পশ্চিম মেদিনীপুরে মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার তথা জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান মানছেন, “সত্যিই কিছু এলাকায় কাজে ফাঁক থেকে গিয়েছে। সমীক্ষার টেকনিক্যাল বিষয়টি আমরা দেখেছিলাম, বাকিটা পুরসভা। কেন ফাঁক থাকল জানতে হবে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, এ নিয়ে পুরসভার সঙ্গে ২৫ মে তাঁরা বৈঠকে বসবেন।
পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার অবশ্য দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “পুরো বিষয়টি বেলারানি অধিকারী দেখছেন। আমার কাছে রিপোর্ট এলে আমি দেখব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy