E-Paper

পাশে নিশিকান্তর ছেলে, তদন্তে প্রশ্ন তুলে আন্দোলনে শুভেন্দু

এ দিন শুভেন্দু জানান, সোমবার হলদিয়া আদালতে রায়ের সার্টিফায়েড কপির জন্য আবেদন জানানো হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৬
Suvendu Adhikari

শুভেন্দু আধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি আইনজীবী গত শনিবারই জানিয়েছিলেন, উপযুক্ত সাক্ষ্যের অভাবে প্রায় ১৪ বছর ধরে মামলা চলার পর জমি আন্দোলন পর্বে তৃণমূল নেতা নিশিকান্ত মণ্ডল হত্যা মামলার ৮ অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পেয়েছে। এমনকি, মৃত নিশিকান্তের পরিবারের লোকেরাও জোড়াল সাক্ষ্য দেননি। ফলে নিশিকান্তের পরিজন বিশেষ করে তাঁর ছেলে পেশায় শিক্ষক সত্যজিৎ মণ্ডলকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছিল।

সত্যজিৎ আবার বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতের সদস্য। রবিবার নন্দীগ্রামের হরিপুরে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সেই সত্যজিৎ মণ্ডলকে পাশে বসিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমালোচনার ঝড় সামলানোর চেষ্টা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আদালতের রায়ের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে দায়ী করেছেন এবং আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।

এ দিন শুভেন্দু জানান, সোমবার হলদিয়া আদালতে রায়ের সার্টিফায়েড কপির জন্য আবেদন জানানো হবে। তার পর নিশিকান্তর পরিবারের তরফে কলকাতা আদালতে রায় পুনর্বিবেবচনার দাবি জানানো হবে।সেই সঙ্গে কালো পতাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার ভাঙাবেড়া থেকে সোনাচূড়া বাজার পর্যন্ত ধিক্কার মিছিলের ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু। নিশিকান্ত মণ্ডলের ছেলে সত্যজিৎ মণ্ডলও এ দিন দাবি করেন, ‘‘সঠিক ভাবে তদন্ত করা হলে এ রকম রায় হত না। উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করব।’’

নিশিকান্তের অতীত অবদানের কথা তুলে ধরে এ দিন শুভেন্দু বলেন, ‘‘কামদুনি কাণ্ডের ওই রকম রায়ের পর এ বার নিশিকান্ত মণ্ডল হত্যা মামলার অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করে দেওয়া হল। যারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত ছিল। আদালতের এই রায়ের জন্য দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সাড়ে ৩ বছরের জেল খাটা এক তৃণমূল নেতার অঙ্গুলিহেলনে সবটা হয়েছে। আগামী দিনে আমার এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।’’

পুলিশের দায়ের করা এই মামলায় যাঁরা অভিযুক্ত ছিলেন তাঁরা মাওবাদী বলে অভিযোগ ছিল। নন্দীগ্রামের ভূমি রক্ষা আন্দোলনে এই মাওবাদীদের সঙ্গেই সরাসরি হাত মিলিয়েছিল তৃণমূল, এমনই দাবি করেছিল পুলিশ। পুলিশের আরও দাবি ছিল, মাওবাদীদের সঙ্গে মতান্তরের কারণেই খুন হয়েছিলেন নিশিকান্ত মণ্ডল। ২০১০ সালে পুলিশের জালে পড়ে তেলেগু দীপক, মধূসুদন মন্ডল, দেবলীনা চক্রবর্তী সহ অভিযুক্ত ৮ জন। সরকার পরিবর্তনের পর এরা জামিনও পেয়ে যায়। অবশেষে শনিবার আদালত এঁদের সবাই বেকসুর খালাস করে দেয়।

ভূমি আন্দোলনের অন্যতম এক নেতার কথায়, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতার আসার পরই নিশিকান্ত মণ্ডল খুন সহ নানা মামলায় অভিযুক্ত মাওবাদীদের মামলাগুলো দুর্বল করতে শুরু করে পুলিশ। তার ফলেই রেহাই পেয়েছে খুনিরা।" যদিও এই মামলার খালাস পাওয়া মধূসুদন মণ্ডল বলেছেন, "নিশিকান্তকে বা কারা খুন করেছে বলতে পারব না।তবে ওই সময় সোনাচূড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রবল হয়ে উঠেছিল। বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছিল এবং নিশিকান্ত ছিলেন বিধায়ক পদের অন্যতম দাবিদার।’’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘গোটা রাজ্য জানে মাওবাদীদের সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাতের কথা। বর্তমানে মাওবাদীরা তৃণমূল হয়ে গিয়েছে। তাই ওই মাওবাদী খুনি যাদের ফাঁসি কিংবা নিদেনপক্ষে যাবজ্জীবন হওয়ার কথা, তাঁরা বেকসুর হচ্ছেন।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Suvendu Adhikari

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy