Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বন্দরে কাজের আশায় তাজপুর

বুধবার দিঘায় ‘বিজনেস কনক্লেভে’র মঞ্চ থেকে তাজপুরে ওই বন্দর নির্মাণের জন্য ‘সাইট অফিসে’র শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই খবরে খুশি তাজপুর এবং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।


এখন তাজপুর। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

এখন তাজপুর। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

কেশব মান্না
দিঘা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১৮
Share: Save:

এক দশকেরও বেশি আগে প্রস্তাব। তারপর কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন। অবশেষে তাজপুরে বন্দর গড়ার কাজে এক পা এগোল রাজ্য সরকার।

বুধবার দিঘায় ‘বিজনেস কনক্লেভে’র মঞ্চ থেকে তাজপুরে ওই বন্দর নির্মাণের জন্য ‘সাইট অফিসে’র শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই খবরে খুশি তাজপুর এবং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।

রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে ২০০৬ সালে হলদিয়া বন্দরের পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘার কাছে একটি সমুদ্র বন্দর গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের পেটুয়াঘাট এলাকায় এ জন্য সমীক্ষা করা হয়েছিল। ২০১০ সালের শেষের দিকে পেটুয়ার বদলে রামনগর-১ ব্লকের তাজপুরকে বন্দর তৈরির জন্য চিহ্নিত করা এবং সমীক্ষা করা হয়। তাতে সবুজ সঙ্কেতও মিলেছিল।

রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূল সরকার বন্দর গড়তে উদ্যোগী হয়। কেন্দ্রে এবং রাজ্য সরকার যৌথভাবে ওই কাজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রের সাড়া না মেলায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, রাজ্য সরকারই প্রস্তাবিত তাজপুর বন্দর গড়বে।

রামনগর-১ ব্লকের অন্তর্গত তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত তাজপুর। স্থানীয় সূত্রের খবর, সেখানের বেশির ভাগ মানুষই ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী। ছোট নৌকা নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরে বা মাছ শুকিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। যাঁদের অনেকেই সম্প্রতি অন্য পেশায় ঝুঁকছিলেন। বন্দর তৈরির খবর শুনে নতুন কাজ পাওয়ার ব্যাপারে তাঁরাও আশাবাদী। রামনগর-১ ব্লকের অন্তর্গত জলধা গ্রামের মৎস্যজীবী অনিল গড়াই বলেন, ‘‘এত দিনে আমরা খুশি হলাম। অনেকেই কাজের জন্য ভিন্‌ রাজ্যে চলে যেতেন। বন্দরে সরাসরি কাজ না পেলেও পরোক্ষে দোকানপাট খুলে তো জীবিকা নির্বাহ করতে পারব।’’

তবে বন্দর নিয়ে কিছুটা চিন্তিত স্থানীয় মৎস্য খটি সংগঠনগুলি। এ রকম এক সংগঠনের নেতা অনন্ত বেরা বলেন, ‘‘বন্দর হলে ট্রলিং বোট নিয়ে যাঁরা মাছ ধরেন, তাঁরা হয়তো কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবে মৎস্যজীবীদের বেশিরভাগেরই জীবিকায় বিরূপ প্রভাব পড়বে না। বরং তাঁরা অনেকটা নিরাপদে মাছ ধরতে পারবেন।’’

এ দিন শিল্প সম্মেলনের অনুষ্ঠান থেকে জানা গিয়েছে, দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ এবং রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম যৌথভাবে প্রস্তাবিত বন্দর নির্মাণের এলাকায় ‘সাইট অফিস’ তৈরির কাজ করবে। প্রাথমিকভাবে ১১৬ বি জাতীয় সড়ক থেকে তাজপুরে যাওয়ার রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানীয় জল-সহ পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ রাজ্য সরকারের এই দুই সংস্থা করবে বলে জানা গিয়েছে। তবে বন্দর নির্মাণ কোন বিভাগ করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

রাজ্য সরকারের এই পদক্ষপকে সমর্থন করছেন রামনগরের সিপিএম নেতা তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশিস প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘‘তাজপুরে বন্দর গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বাম আমলেই। বর্তমান রাজ্য সরকারও ওই এলাকায় বন্দর গড়তে উদ্যোগী হয়েছে। একে আমরা সমর্থন করছি। আমরাও চাই তাজপুরে নতুন বন্দর গড়ে উঠুক।’’

সহ-প্রতিবেদন: আনন্দ মণ্ডল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tajpur Tajpur Port Mamata Banerjee Job Vacancy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE