Advertisement
২৫ মে ২০২৪
এ বার শহরে জ্বরের থাবা
Dengue

পাঁশকুড়ায় মৃত্যু হল শিক্ষিকার

১০ নম্বর ওয়ার্ডের সুরানানকার এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা গত বুধবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা হচ্ছিল তাঁর। শনিবার সকালে পাঁশকুড়ার এক নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। ওই রাতেই মৃত্যু হয় বাবলিদেবীর।

বাবলি রায়

বাবলি রায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২৯
Share: Save:

প্রত্যন্ত হাউর থেকে খোদ শহর পাঁশকুড়া। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফের মৃত্যু। শনিবার রাতে পাঁশকুড়ার এক নার্সিংহোমে মৃত্যু হয়েছে বাবলি রায় (৪৭) নামে এক শিক্ষিকার।

১০ নম্বর ওয়ার্ডের সুরানানকার এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা গত বুধবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা হচ্ছিল তাঁর। শনিবার সকালে পাঁশকুড়ার এক নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। ওই রাতেই মৃত্যু হয় বাবলিদেবীর।

স্থানীয় দেউলিয়া হীরারাম হাইস্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা বাবলিদেবীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগ ও জ্বরের কথা জানিয়েছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। বাবলিদেবীর স্বামী কোলাঘাটের ধুলিয়াড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন রায় অবশ্য বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি প্রাথমিক লক্ষণ ধরা পড়েছিল। বাবলির ডায়াবেটিসের সমস্যাও ছিল।’’

জ্বরে আক্রান্ত হয়েই বাবলিদেবীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এই জ্বরকে ডেঙ্গি বলে মানতে নারাজ জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ওই শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তা ডেঙ্গি নয়। তেমন রিপোর্ট নেই। তবে ওই শিক্ষিকার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

কারণ যাই হোক শহরের অভিজাত এলাকার বাসিন্দা বাবলিদেবীর মৃত্যুতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে এলাকায়। পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন ওই এলাকায় আরও অনেকে জ্বরে আক্রান্ত। কেউ কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাবলিদেবীর বাড়ি সুরার খালের একেবারে পাশে। আবর্জনা ভরা খালেই মশার বাড়বাড়ন্ত, অভিযোগ বাসিন্দাদের। ওই এলাকায় বাড়ির রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রেরও। স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে রয়েছেন সৌমেনবাবুর স্ত্রী সুমনা মহাপাত্র।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক বছর আগে সুরার খাল সংস্কার হয়েছিল। কিন্তু জল নিকাশির সমস্যা রয়ে গিয়েছে। নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হয় না। ফলে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের একাংশ খালেই জঞ্জাল ফেলেন।

সমস্যার কথা স্বীকার করে সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘আগে একবার উদ্যোগী হয়ে সুরার খাল সংস্কার করেছিলাম। আবার সমস্যা তৈরি হচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’

শহরে এই প্রথম জ্বরে আক্রান্তের মৃত্যু হলেও পাঁশকুড়ার হাউর পঞ্চায়েতের গ্রামগুলিতে প্রায় দু’মাস ধরে জ্বরের প্রকোপ চলছে। আটাং গ্রামের বাসিন্দা বছর পয়তাল্লিশের অর্চনা মাইতি গত ২৬ আগস্ট তমলুক হাসপাতালে মারা যান জ্বরে ভুগে। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে পাঁশকুড়া ব্লকে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০৬ জন। ২০ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। এলাকার অনেক এখনও পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE