Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Green Firecrackers

শিল্প শহরে সবুজ বাজি পরীক্ষা কেন্দ্র

পর্ষদ সূত্রের খবর, কোন সংস্থা যদি দাবি করে তারা সবুজ আতসবাজি তৈরি করেছে, তবে তাদের ‘শিল্প সাথী’ নামে একটি পোর্টালে নথিভুক্ত হতে হবে।

green firecracker

তৈরি হয়েছে কেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩০
Share: Save:

দূষণ নিয়ন্ত্রণে কালীপুজোর সময় বাজি ফাটানোয় কড়াকড়া দেখা যায় প্রতি বছর। নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিক্রি রুখতে চলে ধরপাকড়। সরকারি ভাবে শুধু ছাড় মেলে সবুজ বাজি বিক্রিতে। কিন্তু এই সবুজ বাজি আদতে কী বা কোনগুলি, তা নিয়েই ধোঁয়াশায় থাকতেন ক্রেতা-বিক্রেতাদের একটা বড় অংশ। এই ধোঁয়াশা কাটাতে এবার শিল্পশহর হলদিয়ায় তৈরি হয়েছে ‘সবুজ আতসবাজি’ পরীক্ষা কেন্দ্র। যা রাজ্যে প্রথম। এই কেন্দ্রেই যাচাই করা হবে, কোন বাজিগুলি সবুজ বাজির আওতায় পড়ছে। খুব শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অধীনে এই সবুজ আতসবাজি পরীক্ষা শুরু হবে।

উৎসবের মরসুমে চলে দেদার বাজি বিক্রি। দূষণ পর্ষদ সূত্রের খবর, একাধিক আতসবাজি প্রস্তুতকারক সংস্থা উৎপাদিত দ্রব্যে সবুজ আতসবাজির স্টিকার লাগিয়ে বিক্রি করে। কিন্তু সেটি থেকে আদৌও দূষণ কম ছড়াবে কি না, তা বুঝতে পারতেন না ক্রেতারা। এই সমস্যা মেটাতেই উদ্যোগী হয়েছে পর্ষদ। প্রশাসন সূত্রের খবর, অন্য রাজ্যে বাজি পরীক্ষা করা কেন্দ্র রয়েছে। যেখানে বাজির মাত্রা থেকে কাঁচামালের পরিমাণ বিচার করে সেটি সবুজ বাজি কি না, তার তকমা দেওয়া হয়। এ রাজ্যে এত দিন এমন কোনও কেন্দ্র ছিল না। তবে একটি সংস্থার সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পে এবং পশ্চিমবঙ্গ দূষণ পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে এই পরীক্ষাগারটি গড়ে উঠেছে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে হলদিয়ার দূষণ পর্ষদের রিজিওনাল অফিস প্রাঙ্গনে। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরীক্ষামূলকভাবে পরীক্ষাগারে একবার সবুজ আতসবাজি পরীক্ষা করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই কিছু যন্ত্রপাতি এলে নিয়মিত পরীক্ষা করা হবে।’’

এই কেন্দ্রে কীভাবে, ঠিক কী ধরনের কাজ হবে?

পর্ষদ সূত্রের খবর, কোন সংস্থা যদি দাবি করে তারা সবুজ আতসবাজি তৈরি করেছে, তবে তাদের ‘শিল্প সাথী’ নামে একটি পোর্টালে নথিভুক্ত হতে হবে। তার পরে সেই বাজি এই কেন্দ্রে এনে প্রথমে পরীক্ষা করা হবে তাতে কাঁচামালের উপাদান এবং অনুপাত ঠিক রয়েছে কি না। কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থা ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (নিরি) নির্দেশ মতো ওই উপাদান-অনুপাত মাপা হবে। দ্বিতীয় ধাপে, পরীক্ষাগারে আতসবাজি ফাটানো। তাতে বাজি থেকে উৎপন্ন শব্দের মাত্রা, আলো, ও ধোঁয়ার গুণগত মান পরীক্ষা করা হবে।

পর্ষদ সূত্রে খবর, শব্দবাজির ক্ষেত্রে আওয়াজ ১০০ থেকে ১০৫ ডেসিবেলের নীচে হতে হবে। যে ধোঁয়া নির্গত হবে, সেটি থেকে শিশু বা প্রাপ্ত বয়স্কদের শরীরে শ্বাসকষ্ট জনিত কোনও রোগের প্রকোপ বাড়বে কি না দেখা হবে। এরপর দেখা হবে আলো। বাজি ফাটালে যে আলো দেখা যায়, সে রশ্মি ক্ষতিকারক কি না, সে বিষয়েও পরীক্ষা করে দেখা হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ‘নিরি’র তরফে ওই সংস্থাকে সবুজ বাজির শংসাপত্র দেওয়া হবে। যা বাজির প্যাকেটে লাগানো থাকবে। বাজার থেকে পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা বাজিও চাইলে প্রশাসন এই কেন্দ্রে পরীক্ষা করাতে পারে। আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে সেখানে একবার বাজি পরীক্ষা করা হয়েছে। বৃহত্তর ক্ষেত্রে পরীক্ষা করার জন্য আরও কিছু যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘হলদিয়ায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অফিসে সবুজ আতসবাজি পরীক্ষা কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। পরীক্ষা করা এবং শংসাপত্র দেওয়া হবে নিরির তরফে। পশ্চিমবঙ্গে এটি প্রথম সবুজ আতসবাজি পরীক্ষা কেন্দ্র।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Green Firecrackers Haldia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE