Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Soil Erosion

চরের মাটি কেটে ইটভাটায়, বাড়ছে ভাঙন-ভয়

কোলাঘাটের বিপরীত প্রান্তে হাওড়া জেলা। সেই দিকে রূপনারায়ণ নদে বছর দশেক আগে তৈরি হয় একটি চর। দশ বছর ধরে সেই চর বহরে বেড়েছে অনেকটাই।

এক দিকে মাটি কাটা হচ্ছে (বাঁদিকে)। তো অন্যদিকে বাঁশের খাঁচা ফেলে পাড় রক্ষার চেষ্টা। নিজস্ব চিত্র

এক দিকে মাটি কাটা হচ্ছে (বাঁদিকে)। তো অন্যদিকে বাঁশের খাঁচা ফেলে পাড় রক্ষার চেষ্টা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোলাঘাট শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৫৪
Share: Save:

কোলাঘাটে রূপনারায়ণের ভাঙন ঠেকাতে একদিকে সিল্টেশন পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে বাঁশের খাঁচা ফেলার কাজ করছে সেচ দফতর। অন্যদিকে তার উল্টো ছবি। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে দিনের আলোয় রূপনারায়ণের চর কেটে মাটি নিয়ে গিয়ে মজুত করা হচ্ছে ইঁটভাটায়। এ ভাবে চর ধ্বংস হওয়ায় ভাঙন আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন পাড়ের বাসিন্দারা। অবিলম্বে চর কাটা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে সেচ দফতরের এসডিওকে চিঠি দিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটি।

কোলাঘাটের বিপরীত প্রান্তে হাওড়া জেলা। সেই দিকে রূপনারায়ণ নদে বছর দশেক আগে তৈরি হয় একটি চর। দশ বছর ধরে সেই চর বহরে বেড়েছে অনেকটাই। নদে বিশাল চর জেগে ওঠায় জলের স্রোত কোলাঘাটের দিক দিয়ে খরস্রোতে বইতে শুরু করে। যার জেরে ফি বছর কোলাঘাট শহর সংলগ্ন এলাকায় নদের বাঁধে বড় ধস নামে। চরের কারণে রূপনারায়ণের গভীর খাত নদের মাঝখান থেকে সরে এসেছে কোলাঘাট শহরের দিকে। যার ফলে ছাতিন্দা থেকে দেনান পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে কোলাঘাট স্টেশনের অদূরে দেনানে রূপনারায়ণের প্রায় দেড়শো মিটার বাঁধ নদের গর্ভে তলিয়ে যায়।

এই বছর মার্চ মাসে রাজ্য সেচ দফতরের ‘রিভার রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর এক প্রতিনিধি দল কোলাঘাটে ভাঙন পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধি দলটি 'সিল্টেশন' পদ্ধতিতে চর অপসারণের পরামর্শ দেয়। ছাতিন্দা থেকে দেনান পর্যন্ত ৩.৮ কিলোমিটার অংশে বাঁশের খাঁচা ফেলার জন্য প্রায় ৯ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে সেচ দফতর। ইতিমধ্যে সেই কাজও শুরু হয়েছে।

একদিকে যখন বাঁধ বাঁচাতে মরিয়া সেচ দফতর। তখন উল্টো ছবি অন্যদিকে। ছাতিন্দা এলাকায় রূপনারায়ণের পলি জমে তৈরি চর থেকে মাত্র একশো মিটার দূরে রূপনারায়ণের গভীর খাত। চরের অদূরে রয়েছে একটি ইঁটভাটা। অভিযোগ, সম্প্রতি ওই চর কেটে মাটি তুলে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটার জন্য।স্থানীয়রা জানান গভীর করে চর কেটে মাটি মজুত করা হচ্ছে ইঁটভাটায়। সেই মাটি দিয়ে ইঁট তৈরি হচ্ছে। যে ভাবে চর কেটে ফেলা হচ্ছে তাতে ওই এলাকায় যে কোনও সময় ধস নামার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। এভাবে চর কেটে নেওয়া হলে ভাঙন রোধে বাঁশের খাঁচা ফেলেও কোনও লাভ হবে না। অবিলম্বে চর কাটা বন্ধ করার দাবিতে সেচ দফতরের পাঁশকুড়া ১ ডিভিশনের এসডিওকে চিঠি দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটি।

কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘ছাতিন্দা এলাকায় রূপনারায়ণের চর কেটে মাটি তোলা হচ্ছে। ওই জায়গা থেকে কিছু দূরে বাঁশের খাঁচা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে সেচ দফতর। অবিলম্বে চর কাটা বন্ধ করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক সেচ দফতর।’’ সেচ দফতরের পাঁশকুড়া-১ ডিভিশনের এসডিও নাজেস আফরোজ বলেন, ‘‘চর কাটা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিছুদিন বন্ধ ছিল। ফের কাটা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে এফআইআর করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Soil Erosion midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE