গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগে ভাগেই ন়ড়ে বসেছে প্রশাসন। মশাবাহিত রোগের প্রকোপ ঠেকাতে পুরসভাগুলিতে প্রচার শুরু হয়েছে আগেই। এ বার প্রত্যন্ত গ্রামেও অভিযান শুরু করল রাজ্য সরকার। সচেতনতা প্রচারে যুক্ত করে নেওয়া হচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদেরও।
পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ উদ্যোগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রতি ব্লকেই চলছে মশা নিধন কর্মসূচি। আবর্জনা সাফাই থেকে বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করেছে প্রশাসন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “আমরা ব্লকের সদর শহর-সহ প্রত্যন্ত গ্রামে সচেতনতার উপর জোর দিয়েছি। মাইক প্রচার, লিফলেট বিলিও শুরু হয়েছে।”
মশার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে নবান্নের নির্দেশ মতো চলতি বছরের গোড়া থেকেই সতর্ক ছিল পুরসভাগুলি। এ বার একই কায়দায় গ্রামে গ্রামে প্রচারও শুরু হয়েছে। এ জন্য গঠিত হয়েছে একটি বিশেষজ্ঞ দল। তাঁরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদেরও মশা এবং মশাবাহিত রোগের উপসর্গ সম্বন্ধে প্রশিক্ষণ দিতে দিচ্ছেন। যাতে সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাতে পারেন। এই কাজে যুক্ত করে নেওয়া হচ্ছে একশো দিনের কাজের প্রকল্প উপভোক্তাদেরও। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ চলছে। প্রতি ব্লকে স্বাস্থ্য দফতরের একটি বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে। জমা জল, আবর্জনা পরিষ্কারে উদ্যোগী হয়েছে পঞ্চায়েতগুলি। চলতি সপ্তাহ থেকেই এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, সরকারি নির্দেশে ইতিমধ্যেই ঘাটাল, চন্দ্রকোনা রোড, গোয়ালতোড়-সহ বিভিন্ন ব্লকে মশাবাহিত রোগ এবং মশা মারতে প্রচার শুরু হয়েছে। লিফলেট এবং মাইকে প্রচারের সঙ্গেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখে আসছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য, একশো দিনের কাজে যুক্ত সুপারভাইজাররা। বাড়ির সামনে যাতে জল জমে না থাকে তা জানানো হচ্ছে। কোথাও আবর্জনা দেখলেই তাঁরা বুথ বা পাড়ার নাম লিখে রাখছেন। সেই তথ্য ব্লক অফিসে জানাচ্ছেন। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে সাফাই করতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেখা হচ্ছে কারও জ্বর বা কোনও উপসর্গ আছে কি না। সে তথ্যও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জানানো হবে। তেমন কোনও উপসর্গ থাকলে স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ দল হাজির হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বাড়িতে।
গত বছর যে সব গ্রামে ডেঙ্গি বা জ্বর ছড়িয়েছিল, সেই সব গ্রামগুলিতে বিশেষ ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে ব্লক এবং স্বাস্থ্য দফতর। গ্রামের নালা-নদর্মায় ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল বা সরকারি প্রকল্পের টাকায় চলছে আবর্জনা সাফাইয়ের কাজও। গত বছর চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের সাতবাঁকুড়া পঞ্চায়েত এলাকায় শতাধিক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাই এ বার আগেভাগেই সতর্ক স্বাস্থ্য দফতর এবং ব্লক প্রশাসন। ওই ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর বিশ্বাস জানান, “আমরা একাধিক বার বাড়ি বাড়ি প্রচার করব। মানুষকে সচেতন করতে পারলেই মশাবাহিত রোগ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy