Advertisement
E-Paper

ডুবুরি নেই, ভরসা সেই কলকাতা

কীভাবে উদ্ধার কাজ শুরু হবে, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতেও বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়।’’ জেলা প্রশাসনের আর এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘জোরাল পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়ে এ বার নজর দেওয়া হবে।’’

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৫
Share
Save

মাস চারেক আগে গড়বেতার গনগনিতে শিলাবতী নদীতে তলিয়ে গিয়েছিল দুই ছাত্র। দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরুই করা যায়নি। প্রথমে স্থানীয়েরা নৌকো করে তল্লাশি শুরু করেন। অনেক পরে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বোট।

সপ্তাহ দু’য়েক আগে খড়্গপুরে তাছে সতকুইয়ে যাত্রীবাহী বাস নয়ানজুলিতে উল্টে গিয়েছিল। ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু হয়। সেখানেও শুরুতে স্থানীয়রাই উদ্ধার কাজ শুরু করেন। জেলার বাহিনী পৌঁছয় অনেক পরে।

দু’টি ভিন্ন ঘটনা। কিন্তু দু’টির ক্ষেত্রেরই বিপদে প্রাথমিকভাবে ত্রাতা হয়েছেন স্থানীয়েরা। মহকুমার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে কাজ করতে দেখা গিয়েছে অনেক পরে। মুর্শিদাবাদে দৌলতাবাদের বাস দুর্ঘটনা থেকেও কার্যত কোনও শিক্ষা নেয়নি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।

জেলা প্রশাসনের অনেকেই মানছেন, এই দফতরের যে পরিকাঠামো থাকা উচিত, তা নেই।

জেলায় কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটলে স্থানীয় প্রশাসনের ভরসা সেই সিভিল ডিফেন্স বা ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স’ (এনডিআরএফ)। খড়্গপুরে সিভিল ডিফেন্সের পরিকাঠামো রয়েছে ঠিকই। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। আর এনডিআরএফে’র সদস্যেরা তো কলকাতায়। তাই তাঁদের কাছ থেকে সাহায্য পেতে বয়ে যায়
অনেকটা সময়।

মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ এই সমস্যা মেনে নিয়ে বলেন, “বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সিভিল ডিফেন্সে খবর দেওয়া হয়। তখন সিভিল ডিফেন্সের লোকজন আসেন।”

কোনও উদ্ধার কাজ শুরু করতে শুরুতেই চাই ডুবুরি, ক্রেন, নৌকা, বোট-সহ অন্য সরঞ্জাম। জেলায় কয়েকটি নৌকা রয়েছে। তবে সরকারি ডুবুরি নেই। নেই সরকারি ক্রেনও। প্রায় প্রতি বছরই পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অ‌ংশ প্লাবিত হয়। গত বছর তো বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নামিয়েও বন্যা দুর্গতদের উদ্ধার কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। শেষে হেলিকপ্টার আনতে হয়েছিল।

জেলা প্রশাসনের সূত্রের খবর, জেলায় তেমন পরিকাঠামো না থাকায় বর্ষার সময় কলকাতা থেকে এনডিআরএফ-এর একটি দলকে ঘাটালে এনে রাখা হয়। দলের সঙ্গে একাধিক বোট থাকে। মাস খানেক ধরে দলটি এখানে থাকে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “বর্ষায় এনডিআরএফ-এর দল ঘাটালে থাকে বলেই নিশ্চিন্তে থাকি। বাঁধ ভেঙে কখনও কোনও এলাকায় জল ঢুকবে, কেউ বলতে পারে না! বাঁধ ভাঙার খবর পেলেই ওই দল দ্রুত সেখানে যায়।” তবে পশ্চিম মেদিনীপুরে সরকারি ডুবুরি নেই বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। ডুবুরির প্রয়োজন হলে অন্যের উপরে নির্ভর করতে হয়। একই ভাবে ক্রেনের দরকার হলে বেসরকারি সংস্থার কাছে ক্রেন চাইতে হয়।

জেলায় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের যে হাঁড়ির হাল, তা মানছেন দফতরেরই এক কর্মী। তাঁর কথায়, “আমাদের পরিসর এবং পরিকাঠামো সত্যিই কম।” তাঁর স্বীকারোক্তি, “বড় বিপর্যয় ঘটলে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়ার মতো পরিকাঠামোই অনেক সময় থাকে না। ফলে দুর্ঘটনার অনেক পরেও উদ্ধার কাজ শুরু করা
যায় না। কীভাবে উদ্ধার কাজ শুরু হবে, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতেও বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়।’’ জেলা প্রশাসনের আর এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘জোরাল পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়ে এ বার নজর দেওয়া হবে।’’

সিভিল ডিফেন্সের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সব মিলিয়ে, বিপর্যয় মোকাবিলায় জেলার নিজস্ব বাহিনী কতটা প্রস্তুত, কতটা দক্ষ, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Diver মেদিনীপুর ডুবুরি

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।