Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মেধা তালিকায় দশম স্থানে জেলার তিন কৃতী

তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের অগ্নিভ সিনহা সাতশোর মধ্যে পেয়েছে ৬৮০। স্কুলের ছাত্রের এমন সাফল্যে খুশি স্কুলের মাস্টারমশাই থেকে বন্ধুরা থেকে সকলেই। এমন রেজাল্ট হবে জানতে? ভাল রেজাল্ট হবে জানতাম, তবে এক থেকে দশের মধ্যে চলে আসব এমনটা ভাবিনি’’।

নিজস্ব প্রতিবেদন
তমলুক ও এগরা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৮ ০৩:১৩
Share: Save:

মাধ্যমিকে এ বার পূর্ব মেদিনীপুরে সাফল্যের ছবিতে তিন উজ্জ্বল মুখ তমলুকের পদুমবসান এলাকার অগ্নিভ সিনহা, ইন্দ্রজিৎ মিশ্র এবং এগরার প্রতাপদিঘির দেবণ্যা প্রধান। তিনজনই এ বার মাধ্যমিকে দশন স্থান অধিকার করেছে।

তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের অগ্নিভ সিনহা সাতশোর মধ্যে পেয়েছে ৬৮০। স্কুলের ছাত্রের এমন সাফল্যে খুশি স্কুলের মাস্টারমশাই থেকে বন্ধুরা থেকে সকলেই। এমন রেজাল্ট হবে জানতে? ভাল রেজাল্ট হবে জানতাম, তবে এক থেকে দশের মধ্যে চলে আসব এমনটা ভাবিনি’’। জানাল সাইক্লিং-এর পোকা অগ্নিভ। জানাল, সাইক্লিংয়ের শখ তার ছোট থেকেই। পড়াশোনার ফাঁকে সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ত সাইকেল নিয়ে। বাবা অরুণাভ সিনহা ব্যবসায়ী। মা কৃষ্ণাদেবী নেহাতই গৃহবধূ। ইচ্ছা ছিল ছেলে ডাক্তারি পড়ুক। সেই লক্ষ্য নিয়েই সামনে এগোতে চায় অগ্নিভ। মাধ্যমিকের আগে দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পড়েছে ভূতের আর কল্পবিজ্ঞানের লেখার ভক্ত অগ্নিভ। অগ্নিভর প্রাপ্ত নম্বর বাংলা ৯৬, ইংরাজি ৯০, অঙ্ক ৯৭, ভৌত বিজ্ঞান ৯৯, জীবন বিজ্ঞান ১০০, ইতিহাস ৯৯, ভূগোল ৯৯। বিজ্ঞান নিয়ে নিজের স্কুলেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে অগ্নিভ। অগ্নিভ ভালবাসে চিকেন তন্দুর। ছেলের জন্য শহরের দামি রেস্তরাঁ থেকে এদিন সেটাই আনার কথা জানালেন অরুণাভবাবু।

পরীক্ষা দিয়ে বুঝেছিলাম ভাল রেজাল্ট হবে। তবে এতটা ভাল হবে আশা করিনি। বুধবার মাধ্যমিকে দশন স্থান পেয়েছে জানার পর এমনই প্রতিক্রিয়া পটাশপুর-২ ব্লকের বাগমারী নারী কল্যাণ শিক্ষাসদনের ছাত্রী দেবণ্যা প্রধানের। মা অরুণা প্রধান প্রাথমিক শিক্ষিকা বাবা উমাশঙ্কর প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি কর্মচারী। দেবণ্যার প্রাপ্ত নম্বর বাংলায় ৯১, ইংরেজিতে ৯৭, অঙ্কে ১০০, ভৌতবিজ্ঞান ১০০, জীবনবিজ্ঞান ১০০ এবং ইতিহাসে ৯৫ ও ভূগোলে ৯৭। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা মাইতি বলেন, ‘‘ওর সাফল্যে আমরা গর্বিত।’’ পড়াশোনার পাশাপাশি বই পড়তে ভালবাসে দেবণ্যা। ভালবাসে ক্যুইজ, আবৃত্তি। জাতীয় ক্যুইজে কাঁথি এবং এগরা মহকুমার মধ্যে সে প্রথম হয়েছিল বলে জানালেন বাবা-মা। পড়াশুনার বাইরে ক্রিকেট তার পছন্দের খেলা। বিরাট কোহলির ঝোড়ো ব্যাটিং তাকে টানে। প্রিয় খাবার দুধ-ভাত। অঙ্ক তার প্রিয় বিষয় বলে জানিয়েও দেবণ্যা চায় চিকিৎসক হতে।

পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র ইন্দ্রজিত মিশ্র কোনও গৃহশিক্ষক ছাড়াই এ বার মাধ্যমিকে দশম হয়েছে। ৬৮০ নম্বর পাওয়া ইন্দ্রজিৎ জানায়, আলাদা করে কোনও গৃহশিক্ষকের প্রয়োজন হয়নি। মিশনের মাস্টারমশাইরা যা পড়াতেন সেটাই ভালভাবে অনুশীলন করেছি। বাবা অরুময় মিশ্র ব্যাঙ্কে চাকরি করেন। মা শেফালি দেবী জানান, পঞ্চম শ্রেণি থেকেই পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র ইন্দ্রজিৎ। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট সে। দাদাও ভাল ছাত্র। এখন কলেজে পড়ে। ক্রিকেটের ভক্ত ইন্দ্রজিতের প্রিয় বিষয় অঙ্ক। জানাল, তার ইচ্ছা সায়েন্স নিয়ে পড়ার। লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া। ভবিষ্যতের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য তার পরামর্শ, ‘পাঠ্যবই ভাল করে খুঁটিয়ে পড়তে হবে। তবেই সাফল্য আসবে’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE