Advertisement
E-Paper

কাজের হিসেবই অস্ত্র দুই তৃণমূল কাউন্সিলরের

এক জন তৃণমূল কাউন্সিলর হিসেবে গত পাঁচ বছরে এলাকায় কী কী উন্নয়ন করেছেন তার হিসেব দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। তবে তিনি আর এ বার তৃণমূল প্রার্থী নন। তাঁর পরিচয় নির্দল প্রার্থী হিসেবে। অন্য জন এই এলাকার বাসিন্দা হলেও এখানে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাননি। অন্য এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর হয়ে দায়িত্ব সামলেছেন। তাই নিজের বাসস্থান এলাকায় প্রথমবার প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে পরিচয় করাচ্ছেন একদা এলাকার কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রধান।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪২
ভোট প্রচারে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা নির্দল প্রার্থী জয়া দাস নায়ক।

ভোট প্রচারে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা নির্দল প্রার্থী জয়া দাস নায়ক।

এক জন তৃণমূল কাউন্সিলর হিসেবে গত পাঁচ বছরে এলাকায় কী কী উন্নয়ন করেছেন তার হিসেব দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। তবে তিনি আর এ বার তৃণমূল প্রার্থী নন। তাঁর পরিচয় নির্দল প্রার্থী হিসেবে।

অন্য জন এই এলাকার বাসিন্দা হলেও এখানে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাননি। অন্য এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর হয়ে দায়িত্ব সামলেছেন। তাই নিজের বাসস্থান এলাকায় প্রথমবার প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে পরিচয় করাচ্ছেন একদা এলাকার কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রধান।

তমলুক পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার নির্দল প্রার্থী জয়া দাস নায়ক বনাম তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত রায়-এই দুই বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলরের লড়াই ঘিরে জমজমাট পুরভোট। আর দুই তৃণমূল কাউন্সিলরের এই লড়াইয়ে অনেকটাই পিছনে পড়ে গিয়েছেন বিরোধী সিপিএম প্রার্থী রামকৃষ্ণ দে, বিজেপি প্রার্থী রঘুবীর সিংহ , কংগ্রেস প্রার্থী রমেশ দত্তরা।

২০ আসন বিশিষ্ট তমলুক পুরসভায় এ বার প্রতি ওয়ার্ডে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিয়ে এককভাবে লড়াই করছে তৃণমূল। দলের রাজ্য নেতৃত্ব বর্তমানে জেতা কাউন্সিলরদের ফের দলীয় প্রার্থী করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী তমলুক পুরসভায় তৃণমূলের অধিকাংশ কাউন্সিলর ফের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। এমনকি মহিলা সংরক্ষণের কারণে একাধিক কাউন্সিলরের স্ত্রী দলের প্রার্থী হিসেবে স্থান পেয়েছেন। আবার এই সংরক্ষণের কারণেই কয়েকজন বর্তমান কাউন্সিলর এবার নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেনি বলে দলীয় নেতৃত্বের দাবি। তাই দলের টিকিট না পেয়ে পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর জয়া দাস নায়ক।

প্রচারে ব্যস্ত ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত রায়।

ওই ওয়ার্ডেই এ বার তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন পাশের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত রায়। সুব্রতবাবু এবার নিয়ে চতুর্থবার তৃণমূল প্রার্থী হলেন । এ বার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে মুখোমুখি লড়াইয়ে নেমেছেন দুই বিদায়ী কাউন্সিলর সুব্রত ও জয়াদেবী। ফলে চরম বিড়াম্বনায় শাসক দল তৃণমূল। যদিও ইতিমধ্যে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে জয়াদেবীকে বহিষ্কারের ঘোষণা করেছে তৃণমূল । কিন্তু নির্দল প্রার্থী হলেও জয়াদেবী তাঁর নির্বাচনী প্রচারে তুলে ধরছেন তৃণমূল কাউন্সিলর হিসেবে তাঁর পাঁচবছরে বিভিন্ন কাজের খতিয়ান। আর জয়াদেবীর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রচার শুরু করেছেন তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত রায়।

দিন কয়েক আগেই দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সুব্রতবাবুকে সঙ্গে নিয়ে প্রচারে বেরিয়ে ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ সেন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথবাবু আগে একাধিকবার ওই এলাকার কাউন্সিলর ছিলেন। ওই দিন প্রচারে বেরিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িবাড়ি ও দোকানে গিয়ে সুব্রতবাবুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে তাঁকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান রবীন্দ্রনাথবাবু। তবে কি দলেরই কাউন্সিলর নির্দল প্রার্থী হওয়ায় এবার শক্ত লড়াই ? রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘মোটেই তা নয়। কারণ এই এলাকার বাসিন্দারা বরাবরই আমাদের দলের প্রার্থীকে সমর্থন করেছেন। কোন নির্দল প্রার্থীকে তাঁরা সমর্থন করবে না।’’

তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত রায়েরও দাবি, ‘‘উনি ( জয়া দাস নায়ক) এখন আর আমাদের দলের কেউ নয় । আর এই অভিযোগের জন্য তো দল ওকে প্রার্থী করেনি। দলবিরোধী কাজের জন্য ইতিমধ্যে দলীয় নেতৃত্ব ওঁকে বহিষ্কার করেছে।’’ তবে জয়াদেবীর অবশ্য দাবি, ‘‘আমি দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হইনি। আমি এখনও মনেপ্রাণে তৃণমূল। কিন্তু স্থানীয় কিছু নেতার চক্রান্তে আমাকে প্রার্থী করা হয়নি। এলাকার বাসিন্দাদের মতামত নিয়েই আমি প্রার্থী হয়েছি। তৃণমূল কাউন্সিলর হিসেবে গত পাঁচ বছরে এলাকার উন্নয়ন কাজই আমার হাতিয়ার।’’

দুই বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলরের এই নির্বাচনী লড়াইয়ের পাশাপাশি রয়েছেন সিপিএমের প্রার্থী রামকৃষ্ণ দে, বিজেপি প্রার্থী রঘুবীর সিংহ ও কংগ্রেসের রমেশ দত্ত। দুই বিদায়ী তৃণমূলের লড়াই নিয়ে পেশায় আইনজীবী রামকৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘ওদের নিয়ে কোন ব্যক্তিগত আক্রমণ করছি না। কারণ এলাকার বাসিন্দারা ওদের ভাল করেই চেনেন। বরং তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের আমলে উন্নয়নের কাজের নামে নানা আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধেই আমরা প্রচার করছি।’’

ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

tamluk municipal election trinamool tmc cpm congress bjp corruption ananda mondal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy