Advertisement
E-Paper

হাসপাতাল থেকে উধাও ধৃত যুব তৃণমূল নেতা

গুলি চালনায় অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা গণপিটুনিতে জখম হয়ে হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। পুলিশি পাহারাও ছিল। রবিবার দুপুরে তারই মধ্যে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গেলেন চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুরে যুব তৃণমূলের বুথ সভাপতি সিদ্ধার্থ আধিকারী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩২
হাসপাতালের এই শয্যাতেই ছিলেন অভিযুক্ত। — নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালের এই শয্যাতেই ছিলেন অভিযুক্ত। — নিজস্ব চিত্র।

গুলি চালনায় অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা গণপিটুনিতে জখম হয়ে হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। পুলিশি পাহারাও ছিল। রবিবার দুপুরে তারই মধ্যে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গেলেন চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুরে যুব তৃণমূলের বুথ সভাপতি সিদ্ধার্থ আধিকারী।

গাজনের মেলায় বচসার জেরে এক যুবককে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছিল এই সিদ্ধার্থের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও অস্ত্র আইনে মামলাও রুজু হয়। পুলিশি নজরদারিতেই গত বৃহস্পতিবার থেকে ঘাটাল হাসপাতাল চিকিৎসাধীন ছিলেন তৃণমূলের ওই যুব নেতা। এ দিন সেখান থেকে তাঁরা পালিয়ে যাওয়ার খবর চাউর হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কুঁয়াপুরের বাসিন্দারা। তাঁদের সাফ কথা, ‘‘২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত নেতার খোঁজ পুলিশ না পেলে আন্দোলন শুরু হবে। থানা ঘেরাও থেকে সড়ক অবরোধ সবই হবে।’’

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য গুরুপদ দত্তের অভিযোগ, “পুলিশই অভিযুক্ত শাসক দলের নেতাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। না হলে পুলিশি হেফাজতে থাকা একজন পালায় কী করে?’’ বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ যদি অভিযুক্তকে খুঁজে না বের করে তাহলে গোটা চন্দ্রকোনাকে অবরুদ্ধ করে দেওয়া হবে।’’ তৃণমূলের জেলা স‌ভাপতি দীনেন রায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ও কী ভাবে পালিয়ে গেল তার উত্তর আমরা কী করে দেব। পুলিশের কাছে জানুন।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনাটি কী ভাবে ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তের সন্ধানে তল্লাশিও শুরু হয়েছে।’’

গত বৃহস্পতিবার চন্দ্রকোনা থানার কুঁয়াপুরে গাজন মেলায় বচসাকে কেন্দ্র করে যুব তৃণমূল নেতা সিদ্ধার্থ ওরফে বাবুয়া পকেট থেকে পিস্তল বের করে স্থানীয় যুবক কেবল দোলুইকে গুলি করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে পালানোর চেষ্টাও করেন সিদ্ধার্থ। কিন্তু গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে যান। চলে গণধোলাই। পরে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। মারধরে জখম সিদ্ধার্থকে ওই রাতেই ভর্তি করা হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। রাতেই কেবলের বাড়ির লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ মামলা শুরু করে। সিদ্ধার্থের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনার পরই কুঁয়াপুর গ্রামে সিদ্ধার্থে বাড়ির অদূরেই একটি পুকুর থেকে ১৫টি তাজা বোমা, একটি হাত কামান ও ল্যান্ডমাইন উদ্ধার হয়। বম্ব স্কোয়াডের লোকজন এসে মাইন নিষ্ক্রিয়। যদিও জেলা পুলিশের দাবি ছিল, ওটি কৌটা বোমা। তবে ওই ঘটনায় সরাসরি সিদ্ধার্থ জড়িত বলে পুলিশ জানতে পারেনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন ঘাটাল থানার দুই পুলিশ কর্মী হাসপাতালে নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন। তা সত্ত্বেও সিদ্ধার্থ কী করে পালালেন সেই প্রশ্ন উঠছে। তার উপর ওই ুব তৃণমূল নেতার পায়ের যা অবস্থা ছিল, তাতে ছুটে বা হেঁটে পালানোও কঠিন। নিয়মানুযায়ী এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজনে বা শৌচাগারে গেলেও পুলিশের প্রহরা থাকে। হাসপাতালের সুপার অনুরাধা দেব বলেন, ‘‘পুলিশি পাহারাতেই ওই ব্যক্তির চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু রবিবার দুপুর থেকেই তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে আমরা খবর দেওয়ার আগেই পুলিশ হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি শুরু করে দেয়।’’

trinamool tmc ghatal hospital police bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy