E-Paper

বিএলএ নিয়োগে এগিয়ে শাসক দল

মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলায় বিএলএ-১ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান দীনেন রায়। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলায় এই দায়িত্বে আছেন জেলা সভাপতি অজিত মাইতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫ ০৮:৩৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দলের ইতিহাসে কখনও কি এত সুসংগঠিত ভাবে ‘বুথ লেভেল এজেন্ট’ (বিএলএ) নিয়োগ হয়েছে? তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনেকেই মানছেন, এই প্রথম বার সুষ্ঠুভাবে গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে। দলের তরফে বিএলএ-১ পদে সাংগঠনিক জেলাওয়াড়ি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন করে নেতাকে। সেই সূত্রেই প্রতিটি বুথে নিয়োগ হয়েছে বিএলএ-২।

মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলায় বিএলএ-১ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান দীনেন রায়। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলায় এই দায়িত্বে আছেন জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। দুই নেতার দাবি, মূল লক্ষ্য ছিল ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে দলীয় নজরদারি আরও বাড়ানো। এই লক্ষ্যেই তৃণমূলের নতুন কর্মসূচি— ‘বাংলার ভোট রক্ষা’। দলের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধনের দায়িত্ব দেয় ‘বুথ লেভেল অফিসার’ (বিএলও)দের হাতে। ঠিক সেই জায়গায় পাল্টা নজরদারি দিতে, রাজনৈতিক দলের তরফে এই বিএলএ (বুথ লেভেল এজেন্ট)-দের ভূমিকাও হয়ে উঠেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই কর্মসূচি চালুর আগে বিধানসভা কেন্দ্রওয়াড়ি প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়েছে। সেখানে ছিলেন তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থা ‘আইপ্যাক’-এর প্রতিনিধিরা। তাঁরা সবিস্তারে দলের কর্মীদের ভোটার তালিকা সংশোধনের পদ্ধতি বুঝিয়েছেন। বুথ স্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের ‘দিদির দূত’ অ্যাপ ব্যবহার করতে হয়েছে। দৈনিক অগ্রগতি নজরদারিতে রাখছে দল এবং সংস্থাও।

গত মার্চে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা করে মাঠে নামবে দলীয় কর্মীবাহিনী। সেই মতোই পরিকল্পনা এগোয়। কারণ, আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই ভোটার তালিকা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে।

বিষয়টির সূত্রপাত তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি অভিযোগ থেকে। তাঁর দাবি, বিজেপি ভিন্‌ রাজ্যের ভোটারদের নাম বাংলার ভোটার তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা করছে। দিল্লি থেকে ‘এজেন্সি’ পাঠিয়ে এই কারচুপি চালানো হচ্ছে। বিজেপি অবশ্য তৃণমূলনেত্রীকেই পাল্টা নিশানা করেছে। তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে, মার্চ থেকেই বুথভিত্তিক বিএলএ নিয়োগ করে ভোটার তালিকা যাচাইয়ের রূপরেখা তৈরি হয়েছিল। দীনেন রায় বলেন, ‘‘ভোটার তালিকা ঘিরে দল কীভাবে স্ক্রুটিনি করবে, তা সব দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের জানানো হয়েছিল। সেই মতেই কাজ হয়েছে।’’ অজিত মাইতির দাবি, ‘‘আমরা আগেভাগেই বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি।’’

ঝাড়গ্রাম জেলায় বিএলএ-১ পদে রয়েছেন জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রতিটি ব্লক ও জেলা শহরে দলীয় স্তরে ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুরুর দিকে কিছু সমস্যা থাকলেও পরবর্তী সময়ে কাজ সুষ্ঠুভাবে হয়েছে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রামে আমরা সফলভাবে ‘বাংলার ভোট রক্ষা’ কর্মসূচি সম্পন্ন করেছি। এ জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃত্ব ও কর্মীদের সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’’ জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা শহরের সুপারভাইজার রিংকা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই প্রথমবার দলের পক্ষ থেকে প্রতিটি বুথের ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখা হয়েছে।’’

মমতা যখন বিষয়টি প্রথমবার সামনে আনেন তখন তৃণমূলের অনেকের কাছেই বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না। রিংকা বলেন, ‘‘এখন বুঝছি, তাঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের) দূরদর্শিতা কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা প্রত্যেক ভোটারের কাছে পৌঁছে যেতে পেরেছি। বিধানসভা ভোটের প্রায় এক বছর আগে আমরা তালিকা ঘিরে প্রস্তুতি সেরে ফেলেছি।’’

পরীক্ষা এবং ফল প্রকাশে দেরি অনেক। তবে শাসক দল এখনই প্রায় শেষে করে ফেলেছে প্রস্তুতি। (চলবে)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

midnapore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy