E-Paper

হিরণের গরহাজিরাতেও দিলীপ-খোঁচা অজিতকে

অবশ্য দিলীপের এমন মন্তব্য নিয়ে এ দিন সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। ঘটনায় পাল্টা দিলীপের দল বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে বিঁধেছে তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২৪
ইন্দার সভায় দিলীপ। নিজস্ব চিত্র

ইন্দার সভায় দিলীপ। নিজস্ব চিত্র

প্রবচন: কাচের ঘরে বসে অন্যের ঘরে ঢিল মারতে নেই।

তবে তাঁর নাম দিলীপ ঘোষ। তিনি রাজনীতির মাঠে চালিয়ে খেলতেই ভালবাসেন। তা না হলে যে কর্মসূচিতে নিজের দলের বিধায়কই গরহাজির সেখান থেকেই তিনি কেনইবা খুঁচিয়ে তুলবেন তৃণমূলের দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ। কেনইবা বলবেন, অজিত মাইতি তৃণমূলে কোণঠাসা।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২৯ নভেম্বর কলকাতায় সমাবেশ। সেই সমাবেশের সমর্থনে রবিবার ‘খড়্গপুর চলো’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিজেপি। ওই সভার আগে ইন্দার নিউটাউন থেকে ইন্দা মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করে বিজেপি। যদিও এই কর্মসূচিতে সভা হওয়ার কথা ছিল খড়্গপুর শহরের উপকণ্ঠে বারবেটিয়া এলাকায়। তবে গত ২১ নভেম্বর সেই সভার কথা পুলিশে জানালেও শেষ মুহূর্তে ২৫ নভেম্বর পুলিশ অনুমতি দেয়নি বলে দাবি করেছে বিজেপি। তার পরেই ইন্দায় ওই সভার আয়োজন করা হয়। তবে ইন্দার সভার ক্ষেত্রেও অনুমতি পুলিশ দেয়নি বলে শেষ মুহূর্তে জানানোয় সভা বাতিল করা হয়নি বলে বিজেপির দাবি।

এ দিনের মিছিল থেকে সভামঞ্চে মধ্যমণি ছিলেন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তবে সভামঞ্চের ফ্লেক্সে এ দিন খড়্গপুরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের ছবি থাকলেও তিনি সশরীরে ছিলেন না। বিজেপিতে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত হিরণের দলীয় কর্মসূচিতে গরহাজির থাকার বিষয়টি নিয়ে বিঁধেছে তৃণমূল। ঘটনায় সামনে এসেছে বিজেপিতে দিলীপ-শুভেন্দুর অবস্থান। যদিও এ দিন বক্তৃতায় এসব এড়িয়ে দিলীপ বরং তৃণমূলের অন্দরের বিভাজনকে উস্কে দিতে চেয়েছেন। সম্প্রতি তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা হয়েছে। তাতে সভাপতি পদে সুজয় হাজরার প্রত্যাবর্তন হয়েছে। কিন্তু বিধায়ক অজিত মাইতি নাম তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর হিসাবে নতুন করে ঘোষণা করা হয়নি। একসময়ে দিলীপের বিরুদ্ধে যেভাবে অজিত মাইতি সুর চড়াতেন সেই স্মৃতি মনে করিয়ে এ দিন দিলীপ তৃণমূলের বিভাজনকে সামনে আনেন। আগামী নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দিলীপ বলেন, “আমি জানি না এ বার কে আসবেন। একজন নেতা রয়েছেন ওদের (তৃণমূল) অজিতদা। আজকাল মনটা খুব খারাপ আর দেখা যায় না ওঁকে। ক’দিন আগে খড়্গপুরে এসেছিলাম। আমাকে একজন বললেন দাদা আপনার বন্ধুর কী হয়েছে? আমি বললাম কে? বলল অজিত মাইতি। জিজ্ঞসা করলাম কেন কী হয়েছে? বলল, এখানে আসেন না, এলে ভাষণ দেন কিন্তু আপনার নাম নেন না!” এর পরেই দিলীপ যোগ করেন, “আজকাল দলে একটু কোণঠাসা হয়ে গিয়েছেন অজিতদা। কে নেতা মেদিনীপুরে বোঝা যাচ্ছে না!”

অবশ্য দিলীপের এমন মন্তব্য নিয়ে এ দিন সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। ঘটনায় পাল্টা দিলীপের দল বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে বিঁধেছে তাঁরা। তৃণমূল বিধায়ক অজিত বলেন, “দিলীপ ঘোষ দিবাস্বপ্ন দেখছেন। আমাদের দল যোগ্য লোককে কোথায় রাখতে হয় জানে। উনি যেন ভুলে না যান যে আমি একজন বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি। খুব শীঘ্র ওঁর বিরুদ্ধে মেদিনীপুর লোকসভায় দলীয় কর্মসূচিতে নামছি। আমাদের দল কাউকে কোণঠাসা করে না। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে বরং দিলীপ ঘোষ ভাবুন।” একইভাবে এ দিন বিষয়টি নিয়ে তৃনমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, “অজিতদা আমাদের দলের বিধায়ক। তিনি সসম্মানেই বরিষ্ঠ নেতা হিসাবে আমাদের দলে রয়েছেন। দিলীপ ঘোষ বরং ভাবুন যে শহরে দাঁড়িয়ে এই কথা তিনি বলেছেন সেই শহরের বিজেপি বিধায়ক কেন ওই সভায় ছিলেন না। সঙ্গে ওঁদের দলের পুরনো সভাপতিরা কোথায় গেলেন সেটা বলুন। উনি যেভাবে নিজেকে মেদিনীপুরের প্রার্থী বলে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন সেটা কী ওদের দল স্বীকৃতি দেয়!”

প্রবচন: আক্রমণই হল আত্মরক্ষার শ্রেষ্ঠ উপায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kharagpur BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy