মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে ‘অঞ্চলে আঁচল’ কর্মসূচি। পাঁশকুড়া বিধানসভার গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায় এই কর্মসূচির আওতায় আয়োজিত বিভিন্ন সভায় বিপুল পরিমাণে মহিলাদের অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। ফলে উৎসাহিত তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। তাঁদের আশা, মহিলাদের এই ভিড় ভোটযন্ত্রে প্রতিফলিত হলে লোকসভার নিরিখে হারা পাঁশকুড়া বিধানসভায় জয় পাবে শাসক দল। যদিও বিরোধী বিজেপির কটাক্ষ, কোনও কিছু করেই এখানে হালে পানি পাবে না তৃণমূল।
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে এখানে বিজেপির সিন্টু সেনাপতিকে হারিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ফিরোজা বিবি জয়ী হয়েছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবির এই আসনে ভাল ফল করেছিল। গ্রামীণ পাঁশকুড়া এলাকায় বিজেপি লিড পেয়েছিল প্রায় ৬৮৩৮ টি ভোট। তবে শহরে তারা পিছিয়ে যায়। তৃণমূল সেখানে এগিয়ে থাকে প্রায় ৬৬৬০ টি ভোটে। ফলে মোট ভোটের নিরিখে ১৭৮ ভোটে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল পাঁশকুড়া বিধানসভায় যথেষ্টই চাপে পড়ে গিয়েছিল।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় শুরু হয়েছে ‘অঞ্চলে আঁচল কর্মসূচি।’ ইতিমধ্যেই পাঁশকুড়ার চৈতন্যপুর ১, চৈতন্যপুর ২, পাঁশকুড়া ১, প্রতাপপুর ১, প্রতাপপুর ২-সহ একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে এই কর্মসূচিতে দলের মহিলা সদস্য এবং এলাকার সাধারণ মহিলাদের ভিড় বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। মহিলাদের সামনে রাজ্য সরকারের জনপন্থী কর্মসূচিগুলি তুলে ধরা হচ্ছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী ,রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্পের বিভিন্ন নিয়ম, সুবিধে বাতলে দিচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব। এখানে মহিলাদের ভিড় দেখে তৃণমূল নেতারা আশা করছেন, ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচন বৈতরণী পার করতে মহিলা ভোটই তাঁদের হাতিয়ার হবে।
পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজিত রায় বলেন, ‘‘মহিলারা যে ভাবে ‘অঞ্চলে আঁচল কর্মসূচি’তে দলবদ্ধ ভাবে উপস্থিত হচ্ছেন, তা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। মহিলারাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তার দল তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপুল ভোটে জেতাবেন।’’ একই দাবি পাঁশকুড়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী সুমনা মোহপাত্রেরও।
যদিও সেই দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সিন্টু সেনাপতির দাবি, ‘‘মানুষ যেভাবে তৃণমূলের দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন তাতে কোনওভাবেই ওই দল আর ক্ষমতায় আসবে না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার যেমন মহিলারা পেয়েছেন তেমন রাজ্য সরকারের দুর্নীতির জন্য তাঁদের অনেকের স্বামীদের চাকরিও চলে গিয়েছে। তৃণমূলের কোনও ঠগবাজিই আর কাজে আসবে না।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)