Advertisement
E-Paper

মকরস্নানে ভিড় ফিরল দি‌ঘায় পুণ্যের ডুব রূপনারায়ণ, হলদিতেও  

মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে পূণ্যার্থীদের ভিড়ে জমজমাট ছিল দিঘা।  রবিবার ভোর থেকে ওল্ড এবং নিউ দিঘার বিভিন্ন ঘাটে স্নান করেন কয়েক হাজার পুণ্যার্থী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪৪
সমুদ্রস্নানের জন্য দিঘায় ভিড় করেছেন পর্যটকেরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

সমুদ্রস্নানের জন্য দিঘায় ভিড় করেছেন পর্যটকেরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

পৌষ সংক্রান্তির সকাল থেকেই মকরস্নানের জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কয়েক হাজার মানুষ জমিয়েছিলেন তমলুকের রূপনারায়ণ ও নন্দকুমারের নরঘাটে হলদি নদীর তীরে। কিন্তু ঘন কুয়াশার সাথে মকরস্নানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় নদীর বুকে জেরে ওঠা চর। স্রোতের দেখা না মেলায় বালি-কাদা পেরিয়ে হাঁটু জলেই পূণ্যের স্নান সারতে হয়েছে অধিকাংশ পুণ্যার্থীকে। যাতে হয়রানিতে পড়তে হয়েছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের।

মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে পূণ্যার্থীদের ভিড়ে জমজমাট ছিল দিঘা। রবিবার ভোর থেকে ওল্ড এবং নিউ দিঘার বিভিন্ন ঘাটে স্নান করেন কয়েক হাজার পুণ্যার্থী। তাজপুর এবং মন্দারমণিতেও মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রচুর পর্যটক সমাগম ঘটেছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দু’বছর তমলুকের ঐতিহ্যবাহী বারুণি এবং নরঘাটের কাছে হলদি নদীর তীরে গঙ্গামেলা বন্ধ ছিল। ফলে এবছর পৌষ সংক্রান্তির দিনে মকর স্নান এবং মেলায় প্রচুর মানুষের ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সে দিকে লক্ষ্য রেখে প্রস্তুতিও নিয়েছিল মেলা কমিটি, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। মকরস্নানে দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশের তরফে স্পিড বোট নিয়ে নজরদারি ছিল। তমলুক শহরের স্টিমারঘাট এলাকায় রূপনারায়ণ নদে মকর স্নানের জন্য প্রতিবছর কয়েক হাজার মানুষের ভিড় জমে। এছাড়াও রূপনারায়ণ নদের সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী কপালমোচন ঘাটেও মকর স্নানের জন্য ভিড় হয়েছিল। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে কপালমোচন ঘাটের কাছে গঙ্গামন্দির প্রাঙ্গণে বারুণি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও তমলুক শহরে বিভিন্ন জায়গায় গঙ্গাপুজোর আয়োজন করেছে একাধিক ক্লাব।

এদিন সকাল থেকেই ঘনকুয়াশায় রোদের দেখা মেলেনি। রূপনারায়ণের বুকে বিশাল চর জেগে ওঠায় সকালে ভাটার সময় জলের স্রোত ছিল অনেকটাই দূরে। ফলে মকর স্নানে আসা পূণ্যার্থীরা বিপাকে পড়েন। অনেকে চরের মাঝে থাকা অল্প জলে কোনওরকমে স্নান সেরে পুজো দেন। অনেকে জোয়ারের জন্য দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন। ফলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রূপনারায়ণের তীরে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল। ময়নার বাসিন্দা ভরত মাইতি বলেন, ‘‘১৫ বছর ধরে পৌষ সংক্রান্তিতে মকর স্নান করতে তমলুকে আসছি। করোনার জন্য মাঝে দু’বছর আসা হয়নি। এবার ফের এসেছি। কিন্তু সকালে এসে দেখি জলের স্রোত তীর থেকে অনেক দূরে। তাই জোয়ারের অপেক্ষা করে পরে স্নান করেছি।’’

তমলুক শহরের উত্তরচড়া শঙ্করআড়ায় কপালমোচন ঘাটের কাছে এ দিন সকালে বারুণি মেলার উদ্বোধন করেন তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। মেলায় গ্রামীণ কুটিরশিল্পীদের তৈরি সামগ্রী নিয়ে প্রচুর দোকানপাট বসেছে। সবংয়ের বাসিন্দা বীরেন্দ্রনাথ দাস বলেন, ‘‘৮ বছর ধরে মেলায় আসছি। করোনার জন্য গত দু’বছর আসা হয়নি। এবার মেলায় প্রচুর মানুষের ভিড় হলেও বিক্রিবাটা আশানুরূপ হয়নি।’’

নরঘাটের কাছে হলদি নদীতেও মকর স্নানের জন্য ভিড় জমেছিল কয়েক হাজার মানুষের। নদীর তীরে গঙ্গাপুজো সহ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এদিন গঙ্গামেলার উদ্বোধন করেন জেলা সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক।

এদিন সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা থাকলেও হাজার হাজার পূণ্যার্থী দিঘার সমুদ্রে পূণ্য স্নান করেন। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে শনিবার রাতে শঙ্করপুরে স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনের উদ্যোগে গঙ্গোৎসব শুরু হয়েছে। এদিন কাঁথির জুনপুটে কয়েক শতক ধরে চলে আসা সংক্রান্তি মেলা বসে। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে উপকূলের প্রায় সব জায়গাতেই প্রচুর মানুষের ভিড়ে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে সতর্ক ছিল প্রশাসন। পুলিশের তরফে সমুদ্রস্নানে নজরদারির পাশাপাশি প্রচুর নলিয়া এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মী মোতায়েন করা হয় সৈকত জুড়ে। কাঁথি র এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘‘কোথাও কোনওরকম অসুবিধে হয়নি। সব জায়গাতেই পুলিশ এবং নুলিয়ারা তৎপর ছিল।’’

Holy bath Makar Sankranti digha Tamluk Rupnarayan River
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy