Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

patients: ট্র্যাক্টরেই চলছে রোগী পরিবহণ

বড় আকারের অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে বহু এলাকায় রোগীদের ট্র্যাক্টরের ডালায় করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
ভগবানপুর শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৪২
Share: Save:

ভাঙা বাঁধ দিয়ে জল ঢোকা বন্ধ করা গিয়েছে। কিন্তু পটাশপুর এবং ভগবানপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও জল জমে। ডুবে রয়েছে রাস্তাঘাট। ওই রাস্তা দিয়ে ছোট আকারের অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবার গাড়িও চলাচল করতে পারছে না। আর বড় আকারের অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে বহু এলাকায় রোগীদের ট্র্যাক্টরের ডালায় করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

ভগবানপুর এবং পটাশপুরে বেশ কয়েকটি এলাকায় চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন দুর্গতরা। বন্যার আশঙ্কায় প্রথম দিকে ওই সব এলাকার অন্তঃসত্ত্বা এবং প্রসূতিদের ত্রাণ শিবিরে রাখার ব্যবস্থা করেছিল ব্লক প্রশাসন। ১৭ সেপ্টেম্বর ভগবানপুরে বন্যার শুরুতে শিউলিপুর ও বিভীষণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র জলে ডুবে যায়। সেই সময় থেকে ওই কেন্দ্রগুলি বন্ধ রয়েছে। ভগবানপুরে তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং গ্রামীণ হাসপাতালে এখনও জলে ডুবে রয়েছে। আপাতত ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে একটি উঁচু ঘরে চিকিৎসকেরা জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় রাস্তা এবং মাঠঘাটে আগের থেকে জলস্তর কিছুটা কমেছে। ফলে স্পিড বোট বা নৌকা নিয়ে রোগীদের নিয়ে যাচ্ছে না। আবার রাস্তার উপর দু-তিন ফুট জল থাকায় ছোট চাকার অ্যাম্বুল্যান্স বা অন্য গাড়িও যেতে পারছে না। কারণ, সেই জলে গাড়ির ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতে ভগবানপুর হাসপাতালের কাছে পৌঁছতে প্রয়োজন বড় অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু সেই অ্যাম্বুল্যান্স নেই গ্রামীণ হাসপাতালের। ফলে অপেক্ষাকৃত উঁচু চাকা যুক্ত ট্রাক্টরকে অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ভগবানপুরে। ট্র্যাক্টর সহজেই হাঁটু সমান জল পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যাচ্ছে।

আপাতত দু’টি ট্র্যাক্টর হাসপাতালে রোগী পরিবহণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কখনও মুমূর্ষু রোগীর কাছে যেতে চিকিৎসক, নার্সের ট্র্যাক্টরের ভরসা করছেন, তো কখনও স্বাস্থ্য কর্মী, আশা কর্মীরা ট্র্যাক্টরে চড়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভীমেশ্বরী গালর্স স্কুলের ত্রাণ শিবিরে ট্র্যাক্টরে করে গিয়ে এক অন্তঃসত্ত্বার শিশু প্রসব করান চিকিৎসকেরা। এখনও পর্যন্ত ট্র্যাক্টরে করে ন’জন অন্তঃসত্ত্বাকে ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালের অস্থায়ী জরুরি বিভাগে এনে সন্তান প্রসবও করানো হয়েছে। কোনও সময় রোগীকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে, সেই ট্র্যাক্টরে করেই রোগীকে বাজকুলে নিয়ে এসে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলতে হচ্ছে।

এ দিকে, ট্র্যাক্টরে আনার সময়ে ঝাঁকুনিতে অন্তঃসত্ত্বা এবং মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে আসার ঝুঁকি বাড়ছে বলে অভিযোগ। ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রের খবর, বড় অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য প্রশাসনের কাজে আর্জি জানানো হয়েছে। ভগবানপুর-১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সতীশ কুমার বলেন, ‘‘রাস্তায় জল থাকায় ছোট অ্যাম্বুল্যান্স চালানো যাচ্ছে না। বড়ো অ্যাম্বুল্যান্সও আমাদের কাছে নেই। বাধ্য হয়ে ট্র্যাক্টরের করে রোগী উদ্ধার এবং পরিষেবা দিতে হচ্ছে। আমাদের অসুবিধা কথা জানতে পেরে জেলা প্রশাসন বড়ো অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন।’’ কিন্তু সেই গাড়ি আসার আগে আপাতত
ট্র্যাক্টরই ভরসা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE