Advertisement
E-Paper

জোটের টক্কর, জয় মসৃণ হল না তৃণমূলের

জঙ্গলমহলে এ বার আদিবাসী সমবায় নির্বাচনে তৃণমূলপন্থীদের জয়ের পথে টক্কর দিল বিরোধীরা। শনিবার গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের ‘সারিয়া-কেন্দুগাড়ি ল্যাম্পস্‌’-এর (লার্জসাইজড মাল্টিপারপাস কো-অপরেটিভ সোসাইটি) পরিচালন মণ্ডলীর নির্বাচনে ২৫টি আসনের মধ্যে ১৯টিতে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলপন্থী প্রার্থীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৪৪

জঙ্গলমহলে এ বার আদিবাসী সমবায় নির্বাচনে তৃণমূলপন্থীদের জয়ের পথে টক্কর দিল বিরোধীরা।

শনিবার গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের ‘সারিয়া-কেন্দুগাড়ি ল্যাম্পস্‌’-এর (লার্জসাইজড মাল্টিপারপাস কো-অপরেটিভ সোসাইটি) পরিচালন মণ্ডলীর নির্বাচনে ২৫টি আসনের মধ্যে ১৯টিতে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলপন্থী প্রার্থীরা। মাত্র ৬টি আসনে জয়ী হয়েছেন বিরোধী জোটের প্রার্থীরা। নির্বাচনে বিরোধী-শূন্য জয় না মেলায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে শাসক-শিবির। কিছুদিন আগে শালবনি ব্লকে একটি ল্যাম্পস্‌-এর নির্বাচনে সব ক’টি আসনে তৃণমূলপন্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে এ দিনের জয়ে বিরোধী কাঁটা থেকে যাওয়ায় চর্চা শুরু হয়েছে শাসক দলের অন্দরে।

সারিয়া-কেন্দুগাড়ি ল্যাম্পস্‌-এর ক্ষমতায় আগে ছিল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা প্রভাবিত পরিচালনমণ্ডলী। রাজ্যে তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে পরিচালনমণ্ডলী ভেঙে দিয়ে তিন বছরের জন্য প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এ বার পরিচালন মণ্ডলীর নির্বাচনে ২৫টি আসনেই তৃণমূলপন্থী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিজেপি, সিপিএম ও ঝাড়খণ্ডীরা জোট করে প্রার্থী দিয়েছিল। বেশির ভাগ আসনেই ১:১ লড়াই হয়েছে। এ দিন নির্বাচন ঘিরে সারিয়া ও কেন্দুগাড়ি এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ২৫টি বুথে টান-টান উত্তেজনা ছিল। দিনের শেষে ২৫টি আসনের মধ্যে ১৯ টিতে জয়ী হন তৃণমূলপন্থীরা। বিরোধী জোটের প্রার্থীরা ৬টি আসনে জয়ী হন। যদিও সব ক’টি আসন দখল করার জন্য শাসক দলের তরফে গত দিন দশেক যাবত তুমুল তত্‌পরতা দেখা গিয়েছিল। নয়াগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক দুলাল মুর্মুর নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা এলাকার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছিলেন। এই কয়েকটা দিন এলাকায় সপার্ষদ ঘাঁটি গেড়ে পড়েছিলেন দুলালবাবুরা। কিন্তু তার পরেও কিন্তু সব আসন শাসকের হল না। কেন?

স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, একেবারে আদিবাসী অধ্যুষিত ওই এলাকায় নানা রকমের সমস্যা রয়েছে। এক সময়ে কেন্দুগাড়ি ও সারিয়া অঞ্চলগুলিতে মাওবাদীদের ভালই প্রভাব ছিল। রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরে চিত্রটা অবশ্য বদলে যায়। এলাকায় তৃণমূলের নিরঙ্কুশ আধিপত্য কায়েম হয়। কিন্তু পরিবর্তনের চার বছরে এলাকায় ফের শুরু হয়েছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। দিন দশেক আগে তৃণমূলপন্থী প্রার্থীদের সমর্থনে ল্যাম্পস্‌-ভোটের প্রচারে গিয়ে পণ্ডিশোল গ্রামে আদিবাসীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন নয়াগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক দুলাল মুর্মু। পানীয় জল, রাস্তাঘাট ও পঞ্চায়েতের নানা পরিষেবা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। সেই ক্ষোভকে হাতিয়ার করে বাজিমাতের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। কারণ, এক সময় এলাকাটিতে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ভাল প্রভাব ছিল। মোর্চার সিংহভাগ নেতা-কর্মী এখন বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। সিপিএমের একটি অংশও বিজেপিতে ভিড়েছে। বিরোধীরা তলে তলে এককাট্টা হয়েও অবশ্য তৃণমূলের যাত্রাভঙ্গ করতে পারেননি ঠিকই, তবে ৬-এর কাঁটার খোঁচায় তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে প্রাসঙ্গিকতা পেয়েছে বিরোধী জোটের তত্‌পরতা।

বিজেপি’র গোপীবল্লভপুর-১ ব্লক সভাপতি নগেন সিংহ বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের বাহিনী গ্রামে গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছিল। ওরা টাকা ছড়িয়ে, ভয় দেখিয়ে ভোট কিনেছে। তবে আমরা ওদের বিরোধীশূন্য ভাবে জিততে দিইনি। এটাই
আমাদের সান্ত্বনা।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “ল্যাম্পস্‌-এর ক্ষমতা বিরোধীদের হাতে ছিল। ওদের আমলের সদস্যরাই এ বার নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও আমরা ১৯টা আসন পেয়েছি।”

trinamool jhargram medinipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy