Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তার নাম নেই, বাড়ি খুঁজতে জেরবার পিয়ন

জেলা গঠন হয়েছে বছর গড়িয়ে গিয়েছে, যদিও নামকরণ হয়নি এখনও বহু রাস্তার। জেলা শহরের অনেক দোকানপাটের সাইনবোর্ডে এখনও জ্বলজ্বল করছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নাম। অধিকাংশ রাস্তার নাম না থাকায় ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ডাক-পিয়ন ও ক্যুরিয়ার কর্মীদের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০০:২২
Share: Save:

জেলা গঠন হয়েছে বছর গড়িয়ে গিয়েছে, যদিও নামকরণ হয়নি এখনও বহু রাস্তার। জেলা শহরের অনেক দোকানপাটের সাইনবোর্ডে এখনও জ্বলজ্বল করছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নাম। অধিকাংশ রাস্তার নাম না থাকায় ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ডাক-পিয়ন ও ক্যুরিয়ার কর্মীদের।

ঝাড়গ্রাম শহরে পিচ, ঢালাই, মোরাম ও কাঁচা রাস্তা মিলিয়ে রাস্তা রয়েছে মোট ৩১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে পিচ রাস্তা প্রায় ১০০ কিলোমিটার। বাম আমলে মাত্র ৭২ কিলোমিটার পিচ রাস্তার নামকরণ হয়। ২০১৩-র নভেম্বরে পুর বোর্ডের ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। গত পাঁচ বছরে শহরে ওই সব রাস্তার নাম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়নি। ফলে দোকানপাটের সাইনবোর্ডে রাস্তার নাম নেই। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে এই মুহূর্তে পিচ, কংক্রিট, মোরাম মিলিয়ে ২৪৬ কিলোমিটার রাস্তার কোনও নাম নেই।

শহরের বিভিন্ন এলাকাকে সুনিদিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করার জন্য বাম আমলে কয়েকটি প্রধান রাস্তার নামকরণ করা হয়েছিল। তৃণমূলের বর্তমান পুরবোর্ডের আমলে শহরে নতুন করে কোনও রাস্তার নামকরণ করা হয়নি। বাম আমলে যে সব রাস্তার নামকরণ হওয়া হয়েছিল, সেগুলিকে চিহ্নিত করে নাম ব্যবহার বাধ্যতামূলকও করা হয়নি।

২১ বর্গ কিলোমিটার পুরশহরে ১৮টি ওয়ার্ডের জনসংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার। শহরে দোকান ও বাড়ির সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার। পুরাতন ঝাড়গ্রাম, রঘুনাথপুর, ঘোড়াধরা, চণ্ডীপুর, কেশবডিহি, বামদা, নতুনডিহি, বাছুরডোবা, বলরামডিহি, নতুনডিহি, জামদা, শক্তিনগর, গাইঘাটার মতো বহু এলাকা রয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ ওই সব এলাকাগুলির সিংহভাগ রাস্তার নাম নেই। রাস্তার নাম না থাকায় পুরসভার বিভিন্ন কাজের ওয়ার্ড অর্ডারে লেখা হয়, অমুক বাড়ির বাড়ি থেকে তমুক বাড়ির বাড়ি পর্যন্ত অথবা অমুকবাবুর দোকান থেকে তমুকবাবুর দোকান পর্যন্ত কাজটি হবে।

শহরের সারদাপীঠ স্কুল মোড় থেকে জামদার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত মূল রাস্তার নামকরণ হয় সাধু রামচাঁদ মুর্মু সরণি। রামচাঁদ হলেন সাঁওতালি সাহিত্যের মহাকবি। অলচিকি লিপির স্রষ্টা পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর নামে রেল স্টেশন থেকে রূপছায়া মোড় ও মধুবন মোড় হয়ে পেপার মিল মোড় পর্যন্ত রাস্তাটির নামকরণ হয়। শহরের বংশী মোড় থেকে ছবি অ্যাপার্টমেন্ট পর্যন্ত রাস্তার নামকরণ করা হয় সিদো-কানহু-বিরসা মুণ্ডা সরণি। এ ছাড়াও আরও বেশ কিছু প্রয়াত ব্যক্তির নামে শহরের বিভিন্ন পিচ রাস্তার নামকরণ করা হয়েছিল। রাস্তার নামও লিখে দেওয়া হয়েছিল। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা সিপিএম নেতা প্রদীপ সরকারের কটাক্ষ, “বাড়িঘরে হোল্ডিং নম্বর লেখা ও রাস্তার নামকরণের কাজ শুরু করেছিলাম। একটা জেলাশহরের পক্ষে এটা বড়ই লজ্জার বিষয়।” পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ বলেন, “রাস্তার নামকরণ নিয়ে সেভাবে কিছু করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা হচ্ছে।” জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “রাস্তার নামকরণের বিষয়টি পুরসভার এক্তিয়ারে। তবে দোকানপাটের সাইনবোর্ডে ঝাড়গ্রাম জেলার নাম লেখার জন্য ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকে বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram Postman Address ঝাড়গ্রাম
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE