Advertisement
E-Paper

যান থেকে ধান, তৃতীয় নয়নই ভরসা প্রশাসনের

পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে বেআইনি বালি খাদান রুখতে প্রশাসন ভরসা রেখেছে নজর ক্যামেরায়। এ বার ধান কেনায় স্বচ্ছতা আনতে প্রশাসনের ‘বিশল্যকরণী’ সেই ক্যামেরাই।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:২০
সিসি ক্যামেরায় চলছে নজরদারি। নিজস্ব চিত্র

সিসি ক্যামেরায় চলছে নজরদারি। নিজস্ব চিত্র

রোগ যাই হোক না কেন, ওষুধ একটাই। সিসি ক্যামেরা।

পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে বেআইনি বালি খাদান রুখতে প্রশাসন ভরসা রেখেছে নজর ক্যামেরায়। এ বার ধান কেনায় স্বচ্ছতা আনতে প্রশাসনের ‘বিশল্যকরণী’ সেই ক্যামেরাই। ঝাড়গ্রাম জেলায় ৯টি স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে দু’টি করে মোট ১৮টি ক্যামেরা রয়েছে। যিনি ধান বিক্রি করছেন, তাঁর ছবি যেমন উঠছে, পাশাপাশি, সরকারি ভাবে ধান কেনার পুরো প্রক্রিয়াটি ক্যামেরা বন্দি হয়ে থাকছে।

শুধু ওই ৯টি ধান ক্রয় কেন্দ্র নয়, চাষিরা যাতে সরাসরি এলাকায় ধান বিক্রি করতে পারেন, সে জন্য গ্রামে-গ্রামে শিবির করে তাদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে। এত আয়োজন সত্ত্বেও মাঝেমাঝেও ধান কেনা নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগে সরব হয়েছিল বিভিন্ন কৃষক সংগঠন। কংগ্রেস আইন অমান্য করেছিল। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে ফড়েরা চাষি সেজে ধান বিক্রি করছিলেন। কয়েকটি কেন্দ্রের কর্মীরা চাষিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি, খাদ্য দফতরের এক শ্রেণির কর্মীর যোগসাজশে বিশেষ কয়েকজনই ধান বিক্রি করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ধান বিক্রি করতে এলে চাষিদের টোকন ধরিয়ে পরে আসতে বলা হচ্ছিল। এর ফলে কম দামে ফড়েদের কাছে অভাবি ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিলেন প্রান্তিক চাষিরা। প্রশাসনের দাবি, এখন চাষিরা ধান আনার সঙ্গে সঙ্গে কিনে নেওয়া হচ্ছে।

বেলপাহাড়ির চাষি তারক দণ্ডপাট,অজিত দণ্ডপাট বলছেন, ‘‘সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে ধান বেচতে গিয়েছিলাম। প্রতি কুইন্ট্যালে গড়ে ১৮-১০ কিলোগ্রাম ধানকে খারাপ বলে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।’’ চাষিদের বক্তব্য, ধান কেনার দাম বাবদ চেক দেওয়া হচ্ছে। সেই চেক ভাঙাতে গেলে টাকা পেতে সময় লাগছে। আর ফড়েরা চাষিদের বাড়িতে এসে ধান নিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ ভুরি ভুরি। অগত্যা নজরদারি ক্যামেরার চোখ দিয়ে নজর রাখতে শুরু করেছে প্রশাসন। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘কারা ধান বেচতে আসছেন। ধান ক্রয় কেন্দ্রের কর্মীরা চাষিদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করছেন, কীভাবে ধান কেনা হচ্ছে, এসব বোঝার জন্যই সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।’’ জেলা খাদ্য নিয়ামক সুজিত হালদার বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশে সমস্ত স্থায়ী ধান্যক্রয় কেন্দ্রগুলিতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। স্বচ্ছভাবে ধান কেনা হচ্ছে। কোনও অভিযোগ এলেই সঙ্গে সঙ্গে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এবার ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। ৪২ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।’’

ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, ‘‘সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে কী হবে। চাষিদের কাছ থেকে কেনার সময় সরকারি কেন্দ্র গুলির কর্মীরা নানা অজুহাতে প্রতি কুইন্টাল ধান থেকে আট থেকে দশ কিলোগ্রাম ধান খারাপ বলে বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে চাষিরা প্রতি কুইন্ট্যালে গড়ে ১৭০ টাকা কম পাচ্ছেন। অথচ মুখ্যমন্ত্রী থেকে খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, কেনার সময় এক ছটাক ধানও বাদ দেওয়া যাবে ন‌া।’’

যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, ট্র্যাফিক আইনভঙ্গকারীকে সাজা বা বড় কোনও অপরাধের কিনারার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের হাতিয়ার এই নজর ক্যামেরাই। এ বার নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে মধুসূদনদাদাকে।

Rice Video Recording Food Department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy