চলছে প্রকল্পের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
ছ’বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি খড়্গপুরের দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের কাজ। জলসঙ্কট থেকেও রেহাই পাননি রেলশহরের বাসিন্দারা।
খড়্গপুরে শহরের চাহিদা মেটাতে ১৯৯৯ সালে ২ মেগা গ্যালন জল সরবরাহের ক্ষমতাযুক্ত জলপ্রকল্প গড়ে তোলা হয়। তারপরে গত সতেরো বছরে আড়ে বহরে বেড়েছে শহর। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পানীয় জলের চাহিদাও। যদিও শহরে জল সরবরাহের পরিমাণ বাড়েনি। ২০১০ সালে জল সঙ্কট মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ করা ৮৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় জলপ্রকল্প গড়ার কাজে হাত দেয় পুরসভা। তারপরে ছ’বছর কেটে গেলেও এখনও শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ।
দ্বিতীয় জলপ্রকল্পে জলের উৎস নিয়ে প্রথমে সমস্যা তৈরি হয়। দীর্ঘ টালবাহানার পর ঠিক হয়, কেশপালে কংসাবতী নদীর মাঝ বরাবর পাম্প বসানো হবে। সেই পাম্পের মাধ্যমে জল তুলে পরিস্রুত করে সরবরাহ হবে। সেই মতো দশটি পাম্প বসানো হয়। যদিও মেদিনীপুরে কংসাবতীতে অ্যানিকেত বাঁধ তৈরির কারণে বেড়েছে নদীর জলতল। ফলে পাম্পগুলি জলে ডুবে থাকায় আটকে রয়েছে প্রকল্পের কাজ।
জলপ্রকল্প বাস্তবায়িত না হওয়ায় জলসঙ্কটে শহরের বাসিন্দারা। শহরের তালবাগিচার বাসিন্দা সঞ্জীব ঘোষদস্তিদারের অভিযোগ, “শহরের দক্ষিণ ও পশ্চিম তালবাগিচায় জলসঙ্কট সে ভাবে নেই। কিন্তু উত্তর তালবাগিচার রথতলা, দীনেশনগর, হরিনগর, রবীন্দ্রপল্লি, বাজার সংলগ্ন এলাকায় শীতকালেও পর্যাপ্ত জল মিলছে না। অনেক দূর থেকে জল নিয়ে আসতে হচ্ছে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘গরমে জলের হাহাকার বাড়বে। তার আগে দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া উচিত।”
খড়্গপুরের আয়মা, সোনামুখি, পাঁচবেড়িয়া, খরিদা, মালঞ্চ, নিমপুরা এলাকাতে পর্যাপ্ত জল মেলেনা বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। অনেক জায়গায় নোংরা জল আসার অভিযোগও রয়েছে। ছোট আয়মার বাসিন্দা রবি শর্মার কথায়, “প্রতি বছর গরমে জলসঙ্কটে ভুগতে হয়। বহু বছর ধরে শুনছি দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের কাজ হলেই জল আসবে। কিন্তু আগামী গ্রীষ্মেও সেই জল পাব কি না সংশয় রয়েছে।” শহরের দেবলপুরের বাসিন্দা গৃহবধূ বদরুন নিশাও বলেন, “কল থেকে সুতোর মতো জল পড়ে। গরমে কী হবে জানিনা।”
সম্প্রতি পুরসভার বৈঠকে জলপ্রকল্পলের কাজ দ্রুত চালুর কথা বলা হয়। কাজের গতি দেখে শহরের বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, গ্রীষ্মের আগে এই কাজ আদৌ শেষ হবে তো। যদিও পুরসভার দাবি, গ্রীষ্মে নতুন জলপ্রকল্প থেকে জল সরবরাহ করা হবে। খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের দাবি, “চলতি বছরে গ্রীষ্মে শহরে কোথাও জলসঙ্কট দেখা যায়নি। আশা করছি, আগামী গ্রীষ্মের আগেই নতুন জলপ্রকল্প থেকে জল সরবরাহ করা যাবে।’’ প্রতীপবাবুর কথায়, ‘‘নতুন জলপ্রকল্প চালু হলে চাহিদার অতিরিক্ত জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে। জল অপচয় নিয়েও মানুষকে সচেতন হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy