অবশেষে ঝাড়গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকি খুনের অভিযুক্তদের তরফে মামলা লড়ার জন্য সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগ করল আদালত। বুধবার ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক বিভাসরঞ্জন দে এই মর্মে নির্দেশ জারি করেন। আদালতের নির্দেশে ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতের বড়িষ্ঠ আইনজীবী (সিনিয়র অ্যাডভোকেট) সুমন দাস মহাপাত্র পাঁচ অভিযুক্তের তরফে মামলা লড়বেন। আগামী ২৩ মার্চ থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।
এ দিন মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা ও তাঁর স্ত্রী পুনম শর্মা-সহ জেলবন্দি পাঁচ অভিযুক্তকেই ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। এ দিনও অভিযুক্তরা আইনজীবী নিয়োগের জন্য আদালতের কাছে সময় চান। বিচারক বিরক্ত হয়ে বলেন, “আর সময় দেওয়া সম্ভব নয়। বার বার সময় চাওয়াটা আপনাদের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য মহকুমা আইনি পরিষেবা কমিটি থেকে আপনাদের জন্য সরকারি খরচে একজন সিনিয়র আইনজীবী নিয়োগ করছি। আগামী ২৩ মার্চ থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।” বিচারকের এই নির্দেশে দৃশ্যতই কিছুটা বিধ্বস্ত দেখায় অভিযুক্তদের। সরকারি কৌঁসুলি প্রশান্ত রায় দরখাস্ত দাখিল করে মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা ও পুনম শর্মাকে বিচারের স্বার্থে ঝাড়গ্রাম উপ সংশোধনাগার অথবা মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রাখার আবেদন জানান। প্রশান্তবাবু আদালতে জানান, অশোক শর্মা রয়েছেন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। পুনম রয়েছেন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের মহিলা বিভাগে। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে অভিযুক্তদের নিয়মিত আদালতে হাজির করানোয় সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সরকারি কৌঁসুলি। বিচারক অবশ্য জানিয়ে দেন বিষয়টি তাঁর এক্তিয়ারভুক্ত নয়। কেন ওই দুই অভিযুক্ত আলিপুর জেলে আছেন, সেই নথি আদালতের কাছে রয়েছে। আদালত সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে অসুস্থতার কারণে অশোক শর্মা ও পুনম শর্মাকে মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষ কলকাতার আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে পাঠিয়ে দেয়। সেই থেকে শর্মা-দম্পতি আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে রয়েছেন। অন্যদিকে, বাকি তিন অভিযুক্ত অশোকের দুই আত্মীয় সুমিত শর্মা ও দীনেশ শর্মা এবং অশোকের পরিচারক টোটন রানা-রা ঝাড়গ্রাম উপ সংশোধনাগারে রয়েছেন।
গত ১০ ডিসেম্বর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিনেই পারিশ্রমিক না-পেয়ে অভিযুক্তপক্ষের দুই আইনজীবী সরে দাঁড়ান। আদালত অবশ্য সরকারি খরচে আইনজীবী দিতে চাইলেও অভিযুক্তরা নিজেদের উদ্যোগে আইনজীবী নিয়োগের ব্যাপারে অনড় থাকেন। এ ভাবে অভিযুক্তরা বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছেন বলে অভিযোগ করেন রকির পরিজনেরা।