Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কেশপুরে আজ ফ্রন্টের দল, আসছেন বিমানও

কেশপুর ‘ফিরে পেতে’ ভোটের মুখে তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াচ্ছে সিপিএম। বৃহস্পতিবার কেশপুরের মহিষদায় গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন ঘাটাল কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেব। তাঁকে নিয়ে কেশপুর বাসস্ট্যান্ডে ছোটখাট সভাও করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদাদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০৩:১২
Share: Save:

কেশপুর ‘ফিরে পেতে’ ভোটের মুখে তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াচ্ছে সিপিএম।

বৃহস্পতিবার কেশপুরের মহিষদায় গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন ঘাটাল কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেব। তাঁকে নিয়ে কেশপুর বাসস্ট্যান্ডে ছোটখাট সভাও করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার কেশপুরে আসছেন রাজ্য বামফ্রন্টের এক প্রতিনিধি দল। আসছেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। মহিষদাতেও কর্মিসভা করবেন বাম নেতৃত্ব। তবে দেবের কেশপুর-সফরের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক আছে বলে মানতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব। কেশপুরের সিপিএম বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই বলেন, “এটা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। কেশপুরে এখন কী চলছে, সকলেই তা জানেন। সর্বত্র সন্ত্রাসের পরিবেশ। ক’দিন আগে গরগজপোতায় গোলমাল হল। আর পুলিশ এসে জামশেদ ভবন থেকে আমাদের কমরেডদের গ্রেফতার করল। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই বিমানবাবুরা আসছেন।”

রাজ্যে পালাবদলের পরেও কেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কখনও সংঘর্ষ হয়েছে সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে। কখনও তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। জখম হয়েছেন বহু মানুষ। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দলের জোনাল কার্যালয় ‘জামশেদ ভবনে’ও তৃণমূলের লোকজন হামলা করে বলে অভিযোগ। বোমাবাজি হয়। চলতি মাসে গরগজপোতা-সহ বেশ কিছু এলাকায় গোলমাল হয়েছে। আজ, শুক্রবার সকাল এগারোটা নাগাদ বাম প্রতিনিধিদের কেশপুরে পৌঁছনোর কথা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর বরাবর ‘লালদুর্গ’ বলেই পরিচিত ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পর এলাকায় তৃণমূলের আধিপত্য বাড়ে। বিভিন্ন মামলায় নাম জড়িয়ে এলাকা ছাড়েন সিপিএমের বহু নেতা-কর্মী। সিপিএমের একের পর এক কার্যালয়ে তালা পড়ে যায়। খোলা থাকে শুধু সিপিএমের জোনাল কার্যালয় জামশেদ আলি ভবন। বাকি ৭টি লোকাল কার্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। লোকাল কমিটির অধীন শাখা কার্যালয়গুলোও বন্ধ।

গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কেশপুর জোন এলাকায় দল যে রাজনৈতিক ভাবে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তা মানছে সিপিএমও। গেল পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কেশপুরে পযুর্দস্ত হতে হয়েছে সিপিএমকে। গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩০টি আসনের মধ্যে ২২৩টিতেই জেতে তৃণমূল। আর পঞ্চায়েত সমিতির ৪৪টি আসনের মধ্যে ৪২টিই আসে তৃণমূলের দখলে। হাতেগোনা যে ক’টি আসন তৃণমূল পায়নি, সেখানেও জেতেনি সিপিএম। জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা, এলাকায় যাঁরা ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল কর্মী-সমর্থক হিসেবে পরিচিত। সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য মনে করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন বিনা যুদ্ধে শেষ হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে তা হবে না। নেতৃত্বের মতে, সাহস ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভয়ভীতি কাটিয়ে সতর্কতার সঙ্গে দলের কর্মসূচিগুলো পালন করলে এই পরিস্থিতি পাল্টানো সম্ভব। কারণ, মানুষ দলের সঙ্গে রয়েছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কেশপুরে দলের সংগঠন পুনর্গঠনে উদ্যোগী হয়েছে সিপিএম। এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ছাত্র-যুব-মহিলা এবং কৃষকদের।

তবে, কেশপুরে যে বিনাযুদ্ধে সিপিএমকে আর এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া হবে না, তা বুঝিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বৃহস্পতিবার বলেন, “দীর্ঘদিন পর কেশপুরে শান্তি ফিরেছে। উন্নয়ন শুরু হয়েছে। সিপিএম শান্তি চায় না। উন্নয়ন চায় না। তাই নতুন করে অশান্তি করছে। ওরা যদি মনে করে, আবার

কেশপুর দখল করব, অশান্তি করব, সন্ত্রাস করব, তা আর হবে না।” এই চাপানউতোরের মধ্যে আজ বাম প্রতিনিধি দলের কেশপুর-সফর নির্বিঘ্ন হয় কি না, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

keshpur biman basu cpm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE