Advertisement
E-Paper

কেশপুরে বহু বুথে নেই বাম এজেন্ট, অশান্তির আশঙ্কা

ফের একটা নির্বাচন কেশপুরে। স্বভাবতই থাকছে অশান্তির আশঙ্কা। আজ, সোমবার ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। এই কেন্দ্রের মধ্যেই রয়েছে কেশপুর বিধানসভা। রাজনৈতিক হানাহানি, সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে বারবারই শিরোনামে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকা। এ বারও ভোটের আগে শাসক তৃণমূল কেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। ফলে, কেশপুরে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করানোটাই পুলিশ-প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ। তবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৪ ০২:১১
ভোট নির্বিঘ্নে করতে রবিবার বিকেলে পুলিশ নিয়ে কেশপুরের বিভিন্ন গ্রামের বুথে বুথে ঘুরলেন মেদিনীপুর সদর মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত। নেড়াদেউলে সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।

ভোট নির্বিঘ্নে করতে রবিবার বিকেলে পুলিশ নিয়ে কেশপুরের বিভিন্ন গ্রামের বুথে বুথে ঘুরলেন মেদিনীপুর সদর মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত। নেড়াদেউলে সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।

ফের একটা নির্বাচন কেশপুরে। স্বভাবতই থাকছে অশান্তির আশঙ্কা। আজ, সোমবার ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। এই কেন্দ্রের মধ্যেই রয়েছে কেশপুর বিধানসভা। রাজনৈতিক হানাহানি, সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে বারবারই শিরোনামে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকা। এ বারও ভোটের আগে শাসক তৃণমূল কেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। ফলে, কেশপুরে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করানোটাই পুলিশ-প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ। তবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

বাম আমলে তদানীন্তন বিরোধী কংগ্রেস-তৃণমূল কেশপুরে সিপিএমের সন্ত্রাস নিয়ে অভিযোগ তুলত। পরিস্থিতি এমন দাঁড়াত যে বাম-বিরোধীরা এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে পারতেন না, ভোটের দিন বুথে থাকত না বাম-বিরোধী দলের এজেন্ট। এখন সেই এক দশা হয়েছে বামেদের। কেশপুরে সব মিলিয়ে ২৭৩টি বুথ রয়েছে। এর মধ্যে বহু বুথেই এ বার বামেদের এজেন্ট থাকছে না। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খবর, খুব বেশি হলে ১৫০টির মতো বুথে এজেন্ট থাকতে পারে। ঘাটালের বাম প্রার্থী সন্তোষ রাণার অভিযোগ, “গোটা কেশপুর জুড়ে তৃণমূলী সন্ত্রাস চলছে। রবিবারও আমাদের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।” ভোট লুঠ করার চেষ্টা হলে মানুষই রুখে দাঁড়াবেন বলে আশা সিপিআউ প্রার্থীর। পুলিশ-প্রশাসনের উপর ‘চাপ’ বজায় রাখতে আজ, সোমবার সকাল থেকেই কেশপুরে থাকবেন সন্তোষবাবু। পরে পরিস্থিতি বুঝে ঘাটাল-সহ নির্বাচনী এলাকার অন্যত্র যাবেন। কেশপুরের সিপিএম নেতা এন্তাজ আলিরও অভিযোগ, “তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি যত সরে যাচ্ছে, তত আক্রমণ বাড়ছে।”

সন্ত্রাসের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “আমাদের জেলায় প্রথম দফার ভোট সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে। দ্বিতীয় দফার ভোটও সুষ্ঠু ভাবে হবে।” আর বিরোধীদের এজেন্ট দিতে না পারার প্রসঙ্গে জন সমর্থন না থাকাকেই দায়ী করেছেন দীনেনবাবু। তাঁর কথায়, “মানুষ ওদের সঙ্গে নেই, তাই ওরা এজেন্ট দিতে পারছে না।”

গত কয়েক মাসে কেশপুরে দফায় দফায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কখনও তৃণমূল-সিপিএম গোলমালে জড়িয়েছে। কখনও তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই অশান্তি বেধেছে। এক সিপিএম কর্মীর মৃত্যুও হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকা এক সময়ে ‘লালদুর্গ’ বলে পরিচিত ছিল। এখন এখানে তৃণমূলই শেষ কথা। রাজ্যে পালাবদলের পর কেশপুরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল সিপিএম। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তারা পর্যুদস্ত হয়। লোকসভা ভোটের আগে অবশ্য কিছুটা হলেও সংগঠন পুনর্গঠন করতে পেরেছে সিপিএম। দলের এক সূত্রে খবর, ১৫টি অঞ্চলের মধ্যে ৮টি অঞ্চলে কমবেশি প্রচার করা গিয়েছে। বাকি ৭টি অঞ্চলে অবশ্য পরিস্থিতি এখনও ‘প্রতিকূল’।

এই অবস্থায় কেশপুর থেকে যে লিড মিলবে না, তা কার্যত ধরেই নিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের লক্ষ্য, ব্যবধান কমানো। ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই এলাকা থেকে সিপিএম লিড পেয়েছিল ১ লক্ষ ৮ হাজার ভোটে। তখন সিপিএমের বিরুদ্ধে বুথ দখল-ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেশপুরের তিনটি জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূল লিড পেয়েছে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ভোটে। পরিস্থিতি দেখে দিন কয়েক আগে কেশপুরে নির্বাচনী সভা করতে এসে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র দলের কর্মী-সমর্থকদের পরামর্শ দিয়েছেন, “জেতা আসন রক্ষা করতে হবে। আমি বলছি না এখান (কেশপুর) থেকে জেতাতেই হবে। তবে কেশপুরের জন্য যাতে ঘাটাল আসনে না হারি, তা সুনিশ্চিত করতে হবে।”

keshpur polling agent cpm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy