মেদিনীপুর আদালতে ধৃতেরা। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
কেশপুরের চরকায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষের ঘটনায় এন্তাজ আলি-সহ মোট ৭২ জন সিপিএম নেতা-কর্মী-সমর্থকের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ খুনের মামলাও রুজু করেছে। ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ৩০ জনকে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে সারাফত আলি এবং মদন পাত্র নামে দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। তাঁদের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর হয়। বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। বৃহস্পতিবারও কেশপুরের এই এলাকায় পুলিশি নজরদারি ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
বুধবার সকালে কেশপুরের চরকায় তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ হয়। নিহত হন স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ ফিরোজ আলি। তিনি তৃণমূলের আমড়াকুচি অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। গুরুতর জখম হন দুই সিপিএম কর্মী। সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের লোকজন গ্রামে হামলার ছক কষেছিল। তারা চরকার কাছাকাছি জমায়েতও করে। সিপিএমের আরও অভিযোগ, প্রথমে তৃণমূলের লোকেরাই হামলা চালায়। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করেই দলের নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ, ফিরোজ এলাকায় থাকায় সিপিএম বিশেষ সুবিধে করতে পারছিল না। চরকাতেই বাড়ি কেশপুরের এক সময়ের ‘দাপুটে’ সিপিএম নেতা এন্তাজ আলির। বুধবারই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। এন্তাজ আলি, নিয়ামৎ আলি-সহ ৭২ জন সিপিএম নেতা-কর্মী-সমর্থকের নাম রয়েছে অভিযোগপত্রে।
এত জনের নামে অভিযোগ কেন? তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “আমরা নিশ্চিত, এটা পরিকল্পিত হত্যা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত, অভিযোগপত্রে তো তাদেরই নাম থাকবে।” অথচ সিপিএমের এক সূত্রের দাবি, বুধবার সকালে ঘটনার সময়ে এন্তাজ আলি চরকায় ছিলেনই না। প্রদ্যোৎবাবুর অবশ্য অভিযোগ, “ওর নেতৃত্বেই গোটা ঘটনা ঘটেছে।”
পুলিশ যে ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে, তাদের মধ্যে ২ জন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন। ফলে, বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে তোলা যায়নি। বাকিদের মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হয়। বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।
চরকার ঘটনার পর বুধবার রাতেই কেশপুরের তৃণমূল নেতাদের নিয়ে এক বৈঠক হয়। যে বৈঠকে দলের জেলা নেতৃত্ব নির্দেশ দেন, এলাকা শান্ত রাখতে হবে। কর্মীদের সংযত থাকতে হবে। কোনও রকম প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না। পুলিশ- প্রশাসনকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy