মেজাজ হারিয়ে দুধের শিশুকে আছাড় মেরে খুন করেছেন মা। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে শোরগোল কোচবিহার-১ ব্লকের হাড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দয়ালের ছোঁড়া গ্রামে। ঘটনার তদন্তে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে মিতালী দাস নামে এক মহিলা তাঁর ১৩ মাস বয়সি পুত্রসন্তানকে তুলে বার কয়েক আছাড় মারেন মাটিতে। শিশুটির চিৎকারে ছুটে যান প্রতিবেশীরা। তাঁদের তৎপরতাতেই প্রথমে দেওয়ানহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। কিন্তু চিকিৎসক বাচ্চাটির শারীরিক পরিস্থিতি দেখে তাকে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। এর পর কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয় শিশুটিকে। ভোরের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
শুক্রবার সকালে ওই খবর যেতেই উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে। শিশুটির মাকে ঘেরাও করে মারধর করেন গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।
মিতালীর স্বামী তাপস বর্মণ পরিযায়ী শ্রমিক। কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। মিতালী থাকেন গ্রামের বাড়িতে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, ওই মহিলা রগচটা। প্রায়শই এর-ওর সঙ্গে ঝগড়া করেন। স্থানীয় বাসিন্দা মদন রায়ের কথায়, ‘‘ওই মহিলা অত্যন্ত বদমেজাজি। একটুতেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। প্রায় সর্বদা প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার রাতে ওঁর বাড়িতে কী হয়েছিল জানি না। কিন্তু রাগের চোটে নিজের সন্তানকে মাটিতে আছাড় দেন উনি। হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। এমন মহিলার কঠোর শাস্তি দাবি করছি আমরা।’’ একই কথা বলছেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দীপঙ্কর বর্মণ। তাঁর দাবি, ‘‘ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজের শিশুসন্তানকে বার কয়েক মাটিতে আছাড় মেরেছেন। বাচ্চাটি মারা গিয়েছে। ওই মহিলার স্বামীকে খবর পাঠিয়েছি আমরা। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।’’
আরও পড়ুন:
কোচবিহার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্ত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। শিশুটির দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে।’’