রোগিণীর বাঁ পায়ে সমস্যা ছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা অপারেশন করলেন তাঁর ডান পায়ে। হকচকিয়ে গিয়েছেন রোগী। ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবার। বিতর্কে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
গত ১৭ ডিসেম্বর বাড়ির সিঁড়িতে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন ৭৫ বছরের রেণু বিবি। চোট পান বাঁ দিকের ‘হিপ জয়েন্ট’-এ। বাঁ পায়ের হাড়ও টুকরো হয়ে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের সুতি-২ ব্লকের মালোপাড়া এলাকার ওই বাসিন্দাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। রোগীর শারীরিক পরীক্ষার পরে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, অপারেশন ছাড়া উপায় নেই। পরিবারও সায় দেয়। কিন্তু হাড় আর জুড়ল কই!
অপারেশন থিয়েটার থেকে রোগীকে বার
করতে দেখা গেল, তাঁর ডান পায়ে ব্যান্ডেজ। তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি করে বলেন, ‘‘ভুল করেছেন... ভুল!’’ চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জনের বিরুদ্ধে। জানা যাচ্ছে, নার্স এবং ওটি সহায়কের উপস্থিতিতে
রোগিণীর ‘ভুল পায়ে সফল অস্ত্রোপচার’ করেছেন তিনি।
রেণুর পরিবার জানিয়েছে, অপারেশনের পরে জ্ঞান ফিরতেই চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন রোগিণী। সকলের নজর যায় তাঁর পায়ে। তখনই ভুল নজরে আসে।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, অভিযোগ উঠতেই আবার রোগিণীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অপারেশন টেবিলে। ভাঙা পায়ে দ্রুত ‘ট্রাকশন’ দিয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, দুই পা-ই ভাঙা রোগিণীর। কিন্তু কথা ছিল তো বাঁ পায়ে অস্ত্রোপচার হবে। তা কেন হল না? প্রশ্ন তোলেন রোগিণীর আত্মীয় সেলিম মালিক। ক্ষুব্ধ স্বরে তিনি বলেন, ‘‘অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা কী ভাবে এমন ভুল করতে পারেন, কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না আমাদের।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অপারেশন করতে গেলেই তো দেখা যাবে যে পায়ে কোনও সমস্যা নেই। তা ছাড়া, নিয়মমতো অপারেশনটা করাও হবে এক্স-রে প্লেট দেখে। তার পরেও কী ভাবে অস্ত্রোপচার করে ফেললেন চিকিৎসকেরা?’’
অস্ত্রোপচার-বিতর্কে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত মেডিক্যাল সুপার অনাদি রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘একটা মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত কোনও অভিযোগ এখনও হাতে আসেনি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা প্রমাণ হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’