Advertisement
E-Paper

কর্মীদের চাঙ্গা করতে সেই প্রযুক্তিই অস্ত্র

শুধু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রচার নয়, কর্মীদের চাঙ্গা করতেও প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছেন প্রার্থীরা। কাঁথির সিপিএম প্রার্থী তাপস সিংহ কর্মীদের মোবাইল মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়েছেন, ‘প্রিয় কমরেড। আমাকে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী করা হয়েছে। আসলে প্রার্থী আমরা সবাই। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই সংগ্রামে আপনিও একজন সৈনিক।’ শেষে কর্মীদের ভোটমুখী করতেও প্রযুক্তির প্রয়োজন পড়ল?

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৫৪
কর্মীদের জন্য মোবাইল বার্তা।—নিজস্ব চিত্র।

কর্মীদের জন্য মোবাইল বার্তা।—নিজস্ব চিত্র।

শুধু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রচার নয়, কর্মীদের চাঙ্গা করতেও প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছেন প্রার্থীরা। কাঁথির সিপিএম প্রার্থী তাপস সিংহ কর্মীদের মোবাইল মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়েছেন, ‘প্রিয় কমরেড। আমাকে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী করা হয়েছে। আসলে প্রার্থী আমরা সবাই। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই সংগ্রামে আপনিও একজন সৈনিক।’ শেষে কর্মীদের ভোটমুখী করতেও প্রযুক্তির প্রয়োজন পড়ল? লড়াইটা কি তাহলে খুব কঠিন? তাপসবাবুর জবাব, “আমি মনে করি না। জনগণের উপর আমাদের আস্থা আছে।”

যুগধর্ম মেনে এখন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মতামতের আদান-প্রদান করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। লোকসভা ভোটের আগে ফেসবুক দেওয়ালে তো লড়াই জমে গিয়েছে। সেখানে নানা মন্তব্য, পোস্ট ফুটে উঠছে। পরিস্থিতি দেখে ‘ই-প্রচারকে’ হাতিয়ার করছেন প্রার্থীরাও। তবে এ ক্ষেত্রে দুই মেদিনীপুরে অন্যদের পিছনে ফেলেছেন তাপসবাবু। দীর্ঘদিন সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে ছিলেন। ফলে, নতুন প্রজন্মের মন বোঝেন। ফেসবুক, ট্যুইটার, দু’টিতেই রয়েছেন তাপসবাবু। প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পর ফেসবুকে ‘বন্ধু কাঁথি’ নামে একটি পেজও খোলার ব্যবস্থা করেছেন। দলের কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে একটি নজরদারি দলও গড়েছেন। এই দলই তাপসবাবুর সমর্থনে বিভিন্ন ছবি, মন্তব্য আপলোড করে। বৃহস্পতিবার পাড়া-বৈঠকের ফাঁকে কাঁথির সিপিএম প্রার্থী বলছিলেন, “সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছনো যায়। বিশেষ করে আজকের দিনে।”

দুই মেদিনীপুরে পাঁচটি লোকসভার আসন রয়েছে। ইতিমধ্যে এই সব আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস-তৃণমূল-বামফ্রন্ট-বিজেপি। ‘ই-প্রচার’ চলছে সকলের সমর্থনেই। কাঁথির কংগ্রেস প্রার্থী কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনেও দলীয় কর্মীরা পোস্ট করছেন। কাঁথি থেকে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী কুণালবাবু। তিনি বলেন, “কাঁথিতে কংগ্রেস কর্মীদের বহু রক্ত ঝরেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সকলেরই জানা। মানুষ বুঝেছেন, কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার তৈরি করতে পারে ইউপিএ।” তাঁর কথায়, “মানুষের উপর আমাদের আস্থা আছে। আমরা প্রচারে গিয়ে কেন্দ্র সরকারের সাফল্যগুলো তুলে ধরছি। রাজনৈতিক ভাবেই বিরোধী দলগুলোর মোকাবিলা করছি।” মেদিনীপুরের সিপিআই প্রার্থী প্রবোধ পাণ্ডা, ঘাটালের সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রাণা, ঝাড়গ্রামের সিপিএম প্রার্থী পুলিনবিহারী বাস্কের সমর্থনেও সোস্যাল সাইটে প্রচার চলছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএম তো আবার ফেসবুকে ‘সেভ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামে একটি পেজও খুলেছে। ফ্রন্ট কর্মীদের মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে ‘গরিবের স্বার্থে, ধান-শিস-কাস্তে। বেকারের স্বার্থে, ধান-শিস-কাস্তে। মা-বোনেদের স্বার্থে, ধান-শিস-কাস্তে’র মতো স্লোগান। বৃহস্পতিবার প্রচারের ফাঁকে ঘাটালের বামপ্রার্থী সন্তোষবাবু বলছিলেন, “আমাদের লড়াই কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। আমরা লড়াইয়ে নেমে নীতির কথা বলি। আদর্শের কথা বলি।”

পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। দলীয় প্রার্থী শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারী থেকে দীপক অধিকারী (দেব), সন্ধ্যা রায়, উমা সরেনের সমর্থনেও ফেসবুকে প্রচার চলছে। কোনও পোস্টে লেখা হচ্ছে, ‘বাংলার দিশা, উন্নয়নের পথ। এ বার বাংলা গড়বে, ভারতের ভবিষ্যৎ।’ কোথাও আবার তীর্যক মন্তব্য, ‘১৬ মে আসছে দিন। সিপিএমকে কবর দিন।’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “দলের কর্মীরাই সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমে প্রচার করছেন। আজকের দিনে এই সাইটের মাধ্যমে খুব সহজে পরিচিতদের কাছে বার্তা পৌঁছনো যায়।”

জনজীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। প্রচারের মাধ্যম হিসেবে এই মিডিয়ার ক্ষমতা ইতিমধ্যে প্রমাণিত। ইতিমধ্যে অনেক নেতার ইমেজ তৈরি করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া বড় ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে করে বিভিন্ন মহল। সামনে লোকসভা নির্বাচন। পরিবর্তিত পরিস্থিতি দেখেই নির্বাচনী প্রচারে এই মিডিয়াকে কাজে লাগানোর তৎপরতা শুরু হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে। যেন কেউ কারও থেকে পিছিয়ে থাকতে নারাজ।

Barun De social networking election campaign
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy