Advertisement
E-Paper

চণ্ডীপুরে নিঁখোজ যুবকের দেহ উদ্ধার, খুনের নালিশ

মাছের ভেড়ি থেকে দু’দিন ধরে নিখোঁজ থাকা এক যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার হল। তিন বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তাঁর খোঁজ মিলছিল না। বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বৈশ্যাচক গ্রামের বাড়ি থেকে দু’কিলোমিটার দূরে চন্দন দাসের (২২) দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই তাঁর এক সঙ্গী বেপাত্তা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৫

মাছের ভেড়ি থেকে দু’দিন ধরে নিখোঁজ থাকা এক যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার হল। তিন বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তাঁর খোঁজ মিলছিল না। বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বৈশ্যাচক গ্রামের বাড়ি থেকে দু’কিলোমিটার দূরে চন্দন দাসের (২২) দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই তাঁর এক সঙ্গী বেপাত্তা। বৈশ্যাচক গ্রামের বাসিন্দারা অন্য দুই সঙ্গীকে একটি জায়গার আটকে রেখে মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। মৃতের পরিবারের দাবি, চন্দনকে খুন করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, “মৃতের দেহে আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুর থানার নন্দপুর-বরাঘুনি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হলদি নদীর ধারে বৈশ্যাচকের বাসিন্দা চন্দন এলাকার বিভিন্ন ভেড়িতে মাছ ধরার কাজ করত। সেই সূত্রে পাড়ারই বাসিন্দা মানিক ভুঁইয়া, পাশের শশীগঞ্জের হরিপদ মান্না এবং অর্জুন গঞ্জের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল চন্দনের। গত মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ বাড়ি থেকে মানিক ডেকে নিয়ে যায় চন্দনকে। পরে স্থানীয় শশীগঞ্জ বাজারে তাঁদের সঙ্গে হরিপদ ও অর্জুন যোগ দেয়। সেখান থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে ধর্মখালি গ্রামের রথসুড়া বাজার এলাকায় একটি দোকানে গিয়ে মদ খায় তাঁরা। দুপুর দেড়টা নাগাদ মানিক, অর্জুন, হরিপদ মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরলেও চন্দন ফেরেনি।

চন্দনের পরিজনদের অভিযুক্তেরা জানায় চন্দন পিছনে আছে। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত সে বাড়ি না ফেরায়, তাঁর খোঁজ শুরু করেন পরিজনেরা। বুধবার সকালেও না ফেরায় স্থানীয়েরা চন্দনের তিন সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। কিন্তু অভিযুক্তেরা চন্দনের সন্ধান দিতে পারেননি। বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে দু’কিলোমিটার দূরে মৌপাখা গ্রামের এক বাসিন্দা মাছের ভেড়িতে উপুড় অবস্থায় একজনের দেহ ভাসতে দেখেন। স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়ে পরিজনেরা গিয়ে চন্দনের দেহ সনাক্ত করেন।

এ দিকে, চন্দনের দেহ উদ্ধারের পরেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ওই যুবককে খুন করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে স্থানীয়েরা তিন অভিযুক্তের বাড়ি চড়াও হয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মানিক বাড়ি থেকে পালায়। তাঁর বাবা শঙ্কর ভুঁইয়াকে গ্রামবাসী আটকে রাখে।

এ দিন সকালে কলকাতা-দিঘা সড়কের মগরাজপুর বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে বৈশ্যাচক গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, চন্দনের বাড়ি ঘিরে গ্রামবাসীর জটলা। মাটির দেওয়াল ও টিনের চাল দেওয়া দু’কামরার ঘরের উঠোনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী টুনি দাস। তাঁদের ন’মাসের মেয়ে সুস্মিতা পাশেই বসে। চন্দনের বৌদি শেফালি জানান, মঙ্গলবার থেকে চন্দন কাজে যায়নি। সকাল দশটা নাগাদ মানিক ডাকতে এসেছিল। চুল-দাড়ি কাটাতে যাচ্ছি, এই বলে ও সাইকেলে বের হয়। চন্দনের বাবা নন্দকুমার দাসের অভিযোগ, তিন বন্ধু মিলেই চন্দনকে খুন করেছে। অভিযুক্তদের পরিবারের অবশ্য দাবি, অযথা তাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের অবশ্য অভিযোগ, মূল রাস্তা থেকে আধ কিলোমিটার দূরে ফাঁকা মাঠের মধ্যে মাছের ভেড়িতে চন্দনের দেহ উদ্ধার হয়। মদ্যপ অবস্থায় একা ওখানে যাওয়া অসম্ভব। এ ছাড়াও চন্দনের সঙ্গে থাকা সাইকেলটিও পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের দেহ পচে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান দু’দিন আগেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য তথা নন্দপুর-বরাঘুনি পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান উত্তম দাস বলেন, “চন্দনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছি।”

tamluk chandipur missing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy